শিরোনাম

Sponsor



Slider

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » ১৮৬৯ –১৯৪৩) মেহেরপুরের জমিদার মল্লিকবাবু কে ডাকাত দুই হাজার টাকা সেলামী পাঠাইতে পত্র পাইলেন মনিবের সর্বস্ব লুঠ করবে মেহেরপুর মালোপাড়ায় বলরামচন্দ্র হাড়ি ডাকাতদের প্রতিহত করেন ( একষট্টি পর্ব )




১৮৬৯ –১৯৪৩) মেহেরপুরের জমিদার মল্লিকবাবু কে ডাকাত দুই হাজার টাকা সেলামী পাঠাইতে পত্র পাইলেন মনিবের সর্বস্ব লুঠ করবে মেহেরপুর মালোপাড়ায় বলরামচন্দ্র হাড়ি ডাকাতদের প্রতিহত করেন ( একষট্টি পর্ব ) মেহেরপুরের জমিদার মল্লিকবাবুরা একদিন ডাকাত বিশ্বনাথবাবুর নিমন্ত্রণ পত্র পাইলেন । সে লিখিল, কোজাগর পূর্ণিমার রাত্রিতে সে তাহাদের গৃহে সদলে উপস্থিত হইবে, যদি ইহাতে তাঁহাদের অনিচ্ছা থাকে, তাহা হইলে অমুক মাঠে রাত্রি এক প্রহরের সময় কোন পাইক মারফত তাহাকে দুই হাজার টাকা সেলামী পাঠাইতে হইবে ; সেই টাকা পাইলে সে সদলে সেই স্থান হইতে ফিরিয়া যাইব, নতুবা তীহাদের মঙ্গল নাই। বিশে গোয়ালা বিশ্বনাথবাবু, এই নামগ্রহণ করিয়া নিঃশঙ্কচিত্তে সদলে দস্যুবৃত্তি করিত | সে বড় বড় জমীদারদের পত্র লিখিয়া তাহাদের বাড়ী ডাকাতী করিতে যাইত | সে পাল্কীতে যাইত, তাহার অনুচররা সশস্ত্র তাহার অনুসরণ করিত । পরাক্রাস্ত জমীদাররা পর্যাস্ত তাহার ভয়ে কাঁপিতেন | সে যেখানে ডাকাতী করিতে যাইত, সেই স্থান হইতে অকৃতকার্য্য হইয়া ফিরিতে না ; কোন জমীদারের লাঠীয়াল বা পাইক-বরকন্দাজরা তাহার গতিরোধ করিতে পারিত না ।' মল্লিকবাবুদের বাড়ীর কত্ত বিশ্বনাথবাবুর এই পত্র পাইয়া প্রমাদ গণিলেন, বিনা-মেঘে তাঁহার মস্তকে বজ্রাঘাত হইল । তিনি প্রাণ ভয়ে ও মানসম্মান নষ্ট হইবার আশঙ্কায় ব্যাকুল হইয়া তাহার নিদ্রাত্যাগ করিলেন, দুগেতিসবের অব্যবহিত পরে নগদ দুই হাজার টাকা সংগ্রহ করিয়া তাহার নিকট পাঠাইবারও সুবিধা হইল না। প্রভুর অরস্থা দেখিয়া তাঁহার বিশস্ত অনুচর বলরামের হৃদয় সহানুভূতিতে পূর্ণ হইল। তিনি বিশ্বনাথবাবুকে ও তাহার অনুচরগণকে একাক যুদ্ধে পরাস্ত করিয়া ফিরাইবার জন্য তাঁহার অনুমতি প্রার্থনা করিলেন । বলরামের প্রভুভক্তিতে যুদ্ধ হইলেও এই কার্য তাঁহার অসাধ্য মনে করিয়া তিনি বলরামের প্রার্থনা পূর্ণ করিতে কুন্ঠিত হইলেন । কিন্তু বলরাম তাঁহার সংকল্প ত্যাগ করিলেন না ; জমীদারবাবুকে অবশেষে অনিচ্ছার সহিত অনুমতি দিতে হইল । বলরাম ধনুঃশর মাত্র সম্বল করিয়া “রণ পা"য়ের' (একজোড়া সুদীর্ঘ বংশদণ্ড, তাহার গ্রন্থিতে পা রাখিয়া দসূরা দ্রুতবেগে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করিত) সাহায্যে মেহেরপুরের প্রায় ছয় মাইল দূরবর্তী প্রান্তরে উপস্থিত হইয়া বিশ্বনাথবাবুর প্রতীক্ষা করিতে লাগিলেন । কোজাগর-পূর্ণিমার রাত্রি | রাত্রি এক প্রহরের পূর্বেই সেই প্রাস্তরের সীমা প্রান্তে বিশ্বনাথবাবুর পাক্কীর বেহারাদের কণ্ঠোচ্চারিত হুম্ হুম্ হুক্কা, হুম্ হুম্ হুক্কা”ধবনি বলরামের কর্ণগোচর হইল ; সঙ্গে সঙ্গে তাহার অনুচরবর্গের ভীষণ হুস্কার ।-_-বলরাম চক্ষুর নিমেষে বিশ্বনাথবাবুর পাঙ্কীর বেহারাদের গতিরোধ করিলেন । বিশ্বনাথ ডাকাত বিস্মিতভাবে পাক্কী হইতে নামিয়া তরবারি কোষমুক্ত করিল । বলরামের পরিচয় জিজ্ঞাসা করিয়া জানিতে পারিল--তিনি মল্লিকবাবুদের দ্বারবান । বিশ্বনাথ অবজ্জাভরে বলিল, “তোদের জমীদারবাবুকে যে দু'হাজার টাকা সেলামী পাঠাতে লিখেছিলাম-_-তা এনেছিস ?” বলরাম মাথা নাড়িয়া বলিলেন, “এক পয়সাও আনি নি । আমি বেঁচে থাকতে তুমি আমার মনিবের বাড়ীতে ডাকাতী করবে ? তা হবে না বাবু, তুমি আর তোমার দলের লোক আমার সঙ্গে লড়াই ক'রে আমাকে হঠাও-_-তারপর মেহেরপুরে ডাকাতী করতে যেও ।” বিশ্বনাথ তাচ্ছীল্যভরে বলিল, “তুই ত একটা ফড়িং রে, তোকে সাবাড় করতে কতক্ষণ ? কিন্তু তুই একা, আমরা সকলে মিলে তোকে খুন করবো বিশ্বানাথবাবু সে রকম কাপুরুষ নয় । শুনেছি, তুই ভালো তীরন্দাজ, তোর শক্তির পরিচয় দে ।-_এ দ্যাখ, পূর্ণিমার চাঁদের আলোতে আকাশে কতকগুলা বুনো হাঁস উড়ে যাচ্ছে, যদি তীর দিয়ে ওদের একটাকে বিধে মাটীতে ফেলতে পারিস, তা হ'লে বুঝবো, তুই সত্যই বাহাদুর ; আমি পরাজয় স্বীকার ক'রে ফিরে যাব । যদি না পারিস, তা হ'লে আজ মেহেরপুরে গিয়ে তোর মনিবের সর্বস্ব লুঠ করবো, কেউ তাকে রক্ষে করতে পারবে না।”বলরাম উধ্বকাশে দৃষ্টিপাত করিলেন । কাজাগরী পূর্ণিমার শুভ্র জ্যোৎস্নালোকে চরাচর প্লাবিত । সেই আলোকে বহুশত গজ উদ্ধে একপাল বুনো হাঁস, যেন গগন-সাগরে সাঁতার দিতেছিল | বলরাম চক্ষুর নিমেষে ধনুকে বাণ জুড়িলেন, উদ্ধে দৃষ্টিপাত করিয়া বাণ ছুঁড়িলেন। দুই মিনিটের মধ্যে একটি হাঁস শরবিদ্ধ-বক্ষে ধরাশায়ী হইল | কয়েক গজ দূরে হাঁসটাকে মাটিতে পড়িয়া পক্ষান্দোলন করিতে দেখিয়া বলরাম তাহা কুড়াইয়া আনিলেন এবং বিশ্বনাথবাবুকে উপহার দিলেন । বিশ্বনাথের অনুচররা বিস্মিত, সকলেই বলরামের লক্ষ্যভেদের কৌশল লক্ষ্য করিয়া নিব্বকি | বিশ্বনাথ বলরামকে আলিঙ্গন করিয়া বলিল, “হ্যাঁ, তুই একটা মানুষ । তোর শক্তির পরিচয় পেয়ে আমি খুশী হয়েছি ! আমার যে কথা, সেই কাজ । এই মাঠ থেকেই আমি ফিরে যাচ্ছি ।”বিশ্বনাথবাবু সদলে প্রত্যাগমন করিল।বৃটিশ আমলের খ্যাতনামা লেখক, দীনেন্দ্রকুমার রায়: গ্রন্থনা:অধ্যক্ষ মহসীন আলী আঙ্গুঁর ,সম্পাদক ও প্রকাশক, মুজিবনগর খবর ডট কম,মেহেরপুর।






«
Next
১৮৬৯ –১৯৪৩) মেহেরপুরের জমিদার মল্লিকবাবু অলঙ্কারাদি অপহূত হইলে প্রভুভক্ত বলরামকেই চোর বলিয়া সকলে সন্দেহ করিয়াছিলেন ক্ষোপে সেই রাত্রিতেই মেহেরপুর ত্যাগ করিলেন ( বাষট্টি পর্ব )
»
Previous
মেহেরপুর পৌরসভার ১৫৬ তম জন্মবার্ষিকী কেক কেটে জন্ম দিন পালন
Pages 22123456 »

No comments:

Leave a Reply