শিরোনাম

Sponsor



Slider

  1. 1
  2. 2
  3. 3
  4. 4

দেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » » (১৮৬৯ –১৯৪৩)মেহেরপুরের জমিদার মল্লিকবাবু কে প্রভুভক্ত তো দুরের কথা তাঁকে শিয়াল-কুকুর বলে সম্বোধন করেন মেহেরপুরের মালোপাড়ার বলরাম হাড়ি ( তেষট্টি পর্ব )




(১৮৬৯ –১৯৪৩)মেহেরপুরের জমিদার মল্লিকবাবু কে প্রভুভক্ত তো দুরের কথা তাঁকে শিয়াল-কুকুর বলে সম্বোধন করেন মেহেরপুরের মালোপাড়ার বলরাম হাড়ি ( তেষট্টি পর্ব ) মেহেরপুরের জমিদার চন্দ্রমোহন বাবু একটা নগণ্য হাড়ীর চেলাদের দম্ভের কথা শুনিয়া সক্রোধে বলিলেন, “বটে ! একটা অস্পৃশ্য হাড়ীর চেলাদের এত তেজ !” বলরামও তাঁহার শিষ্যদের এই প্রকার অবিনয় ও 'তেজের' কথা নানা প্রকার অতুক্তি ও অলঙ্কারে মণ্ডিত হইয়া গ্রামের শীর্ষস্থানীয় ব্রাহ্মণ ভূ-স্বামী চন্দ্রমোহন বাবুর কর্ণগোচর হইল __বাবুর পারিষদরা চতুগুণ ক্রোধ প্রকাশ করিয়া মাথা নাড়িয়া বলিল, “ধম্মবিতার একবার পরীক্ষা করলেই সব জান্তে পারবেন ; আপনার ছি চরণে এই দুনিয়ার কে মাথা না নোয়ায় ? কার ঘাড়ে তিনটি মাথা যে, আপনাকে প্রেণাম না ক'রে সাম্নে দাঁড়াবে ? কিন্তু বলা হাড়ীর চেলারা মনিষ্যিকে মনিষ্যি জ্ঞান করে না ;_ধন্মার্বতার এর একটা বিহিত না করলে ব্রাহ্মণ-বৈষ্ণবের আর মান-ইজ্জৎ বজায় থাকে না!” একদিন হঠাৎ ইহা পরীক্ষার অবসর হইল । চন্দ্রমোহণ পথের ধারে তাঁহার বৈঠকখানায় বসিয়াছিলেন-_-সেই সময় বলরামের একটি ভক্ত শিষা লম্বা একটি মার্টীর ভাড় লইয়া সেই পথে কলুবাড়ীতে তেল আনিতে যাইতেছিল । প্রত্যেক পথিক জমীদারবাবুকে বৈঠকখানায় ধূমপানে

রত দেখিয়া তাঁহাকে প্রণাম করিয়া গন্তব্য পথে চলিতে লাগিল, কিন্তু বলরাম-শিষ্য লখা তাঁহাকে দেখিয়াও দেখে নাই, এইভাবে তাঁহার সম্মুখ দিয়া চলিয়া গেল । এক জন মো-সাহেব লখার ব্যবহারের প্রতি জমীদারবাবুর দৃষ্টি আকৃষ্ট করিয়া চোখ টিপিয়া বলিল, “এসি চেলাটা মাথা উঁচু ক'রে চ'লে যাচ্ছে, ধর্ন্মাবতার যেন ওর কাছে মশা-মাছির টি জমীদারবাবু হুস্কার দিতেই সোনা ও রূপো নামক তাঁহার দুইজন বিশালদেহ অনুচর তাঁহার আদেশ প্রতীক্ষায় করজোড়ে সম্মুখে দাঁড়াইল । কিন্তু জমীদারবাবুকে কোন কথা বলিতে হইল না, তাঁহার মো-সাহেবের ইঙ্গিতে সোনা ও রূপে লখাকে ঘাড় ধরিয়া প্রায় শৃন্যে তুলিয়া বাবুর সম্মুখে হাজির করিল । একজন মো-সাহেব বলিল, “ বেটা, তুমি বলা হাড়ীর চেলা হয়ে কি পীর না কেষ্টো বেষ্টো হয়েছ যে, রাজার সামনে দিয়ে চলে গেলে, পেন্নামটা করতেও তোমার মরজি হলো না ? রাজা, ব্রাহ্মণ, সব তোমার কাছে তুশ্চ ! তুমি ভেবেছো কি ? এক্ষুনি ওর পায়ের কাছে গড় হয়ে দন্ডবত কর ।” লখা-নড়িল না, মাথা নামাইল না ; মাথা উচু করিয়া বলিল, “উনি রাজা, বামুন, সব মানি । কিন্তু ছিরি বলরাম চন্দরের ছিচরণে যে মাথা নুইয়েছি, সে মাথা আর কোথাও নোয়াতে পারবো না-_তা তিনি যে হোন, আর যত বড়ই হোন ।” হঠাৎ বারুদের স্তূপে যেন আগুনের ফুলকি পড়িল । পারিষদের ইঙ্গিতে রূপো ও সোনা লখাকে বৈঠকখানার থামে বাঁধিয়া এরূপ প্রহার করিল যে, তাহার সববঙ্গি ক্ষত-বিক্ষত হইল | তাহার দেহের বিভিন্ন স্থান হইতে রক্ত ঝরিতে লাগিল ; কিন্তু সকলে চেষ্টা করিয়াও ব্রাহ্মণ রাজ চরণে তাহার উন্নত মস্তক অবনত করাইতে পারিল না। অগত্যা জীবম্মৃত অবস্থায় তাহাকে মুক্তিদান করা হইল । লখা রক্তাক্ত দেহে টলিতে টলিতে অতিকষ্টে অদূরবর্তী আখড়ায় ফিরিয়া আসিল এবং বলরামের পদপ্রানস্তে শোনিতাপ্নুত অবসন্ন দেহ প্রসারিত করিয়া বলিল, “ঠাকুর, তোমার ছিরিচরণে যে মাথা নুইয়েছি, সেই মাথা চন্দোর-মোহনের পায়ের কাছে নোয়াতে পারি নি ব'লে তার মোসাহেবগুলার হুকুমে তার পাক-বরকন্দাজ আমার কি দুর্দশা করেছে, দেখ ঠাকুর! আমি ত কোন অপরাধ করিনি, বিনি অপরাধে মেরে আমার হাড় গুড়ো ক'রে দিয়েছে, আঁচড়িয়ে খাম্চিয়ে আমার চামড়া ছিড়ে নিয়েছে ; এই দেখ রক্ত আর ঠেক মানছে না। তোমাকে এই অন্যায়ের বিচার করতে হবে ঠাকুর ! আমি জানি, তুমি সব পারো । তোমার ছিরি মুখ থেকে একটা শাপ বেরুলে ওরা সবাই উড়ে-পুড়ে যাবে, সক্কলে ছাই হয়ে যাবে । তুমি শাপ দিয়ে ওদের ধবংস কর, ঠাকুর ! তোমার ক্ষ্যামোতা ওদের একবার দেখাও, প্রভু বলরামচন্দ্র ! তুমি থাকতে তোমার দাসানুদাসের এত শান্তি ?-_-তোমাকে প্রতিফল দিতেই হবে ঠাকুর !” বলরাম আহত শিষ্যের সব্বা্গে হাত বুলাইয়া মিষ্ট স্বরে বলিলেন, “লখা, তুই নালিশ করছিস্ কাদের নামে ? শিয়াল-কুকুরে কামড়ালে কেউ কি তাদের নামে নালিশ করে ? তুই বলবি, ওরা কি শিয়াল-কুকুর ? ওরা যে মানুষ । কিন্তু আমি ত দেখছি, ওরা মানুষ নয়, ওরা শিয়াল-কুকুর, না হয় বাঘ-ভাল্লুক | মানুষের চেহারার ভিতর থেকে আমি শিয়াল-কুকুরের দাঁত. নখ শিয়াল-ককারর প্রবন্তি- হিংসটে স্বভাব. সবই দেখতে পাচ্ছি । কেবল হাত-পা আর কথা কইবার শক্তি থাকলেই কি তাকে মানুষ বলতে পারি? মানুষের কাজ, মানুষের ধর্ম মানুষকে ভালবাসা, মানুষের দুঃখে কষ্টে কষ্ট বোধ করা, তাদের বিপদে সাহায্য করা, অজ্ঞানকে জ্ঞান দেওয়া, আনন্দ দেওয়া, সদুপদেশ দিয়ে, শিক্ষা দিয়ে মানুষকে মানুষ করা ; যারা তোকে মেরে হাড় গুড়ো ক'রে দিয়েছে বলছিস্, মানুষের এ সকল গুণ তাদের কারও আছে কি? না লখা, আমার কাছে তুই শিয়াল কুকুরের নামে নালিশ করিসনে । শিয়াল-কুকুরের অপরাধের বিচার করি- সে শক্তি আমার নেই। বিচারের কর্তা ভগবান্ ! আমি তোর সর্ব্বাঙ্গে হাত বুলিয়ে দিচ্ছি-তোর ব্যাথা দূর হবে। তুই মনে কোন আক্ষেপ রাখিস নে।””বৃটিশ আমলের খ্যাতনামা লেখক, দীনেন্দ্রকুমার রায়: গ্রন্থনা:অধ্যক্ষ মহসীন আলী আঙ্গুঁর ,সম্পাদক ও প্রকাশক, মুজিবনগর খবর ডট কম,মেহেরপুর।






«
Next
( ১৮৬৯ –১৯৪৩) মেহেরপুরের মালোপাড়ার বলরাম হাড়ি মৃত্যৃকালে তিনি শিষ্যদের আদেশ করিয়াছিলেন, তাঁহার দেহ সমাহিত বা অগ্নিতে দগ্ধ করা না হয় । ( চৌষট্টি পর্ব )
»
Previous
১৮৬৯ –১৯৪৩) মেহেরপুরের জমিদার মল্লিকবাবু অলঙ্কারাদি অপহূত হইলে প্রভুভক্ত বলরামকেই চোর বলিয়া সকলে সন্দেহ করিয়াছিলেন ক্ষোপে সেই রাত্রিতেই মেহেরপুর ত্যাগ করিলেন ( বাষট্টি পর্ব )
Pages 21123456 »

No comments:

Leave a Reply