যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ ভোটের গুরুত্ব
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই পদ্ধতিতে ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে একজন প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে পেতে হয় ২৭০টি ভোট। কিন্তু, কোনো প্রার্থীই যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট না পান, তাহলে কী হবে? এ নিয়েই এবারের প্রতিবেদন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দাফতরিক বাসভবন হোয়াইট হাউজ। ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অন্য যেকোন দেশের চেয়ে আলাদা। একজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাধারণ নাগরিকদের সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন না। ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ নামে পরিচিত একদল নির্বাচকমণ্ডলীর পরোক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে থাকেন। এই নির্বাচকমণ্ডলী প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইলেক্টোরাল কলেজের মোট আসন সংখ্যা ৫৩৮টি। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্যে কমপক্ষে ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোট পেতে হয়। কিন্তু, প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের কেউই যদি সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পান, ২৬৯ করে ভোট পান, সেক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করা হবে কীভাবে?
এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের দ্বিতীয় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ এক-এর ধারা তিন অনুসারে, কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধিরা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোট দেবেন। আর সিনেটররা ভোট দেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্যে। এই পদ্ধতিকে মূলত কনটিনজেন্ট ইলেকশন বা শর্ত সাপেক্ষ নির্বাচন বলা হয়।
আরও পড়ুন: মার্কিন নির্বাচন / দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ট্রাম্প-কমলা
১৮০০ সালের নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনীতে বলা হয়, প্রতিনিধি পরিষদ সদস্যদের নির্বাচনী ভোট গণনায় শীর্ষ তিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর মধ্য থেকে একজনকে বেছে নিতে হবে। আর সিনেটররা বেছে নেবেন শীর্ষ দুই ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর মধ্যে একজনকে। এই ঘটনা মাত্র একবারই হয়েছিল ১৮২৪ সালে। ইলেক্টোরাল কলেজের ভোট চারজন প্রার্থীর মধ্যে ভাগাভাগি হয়ে যাওয়ায় কেউই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি।
অনেক বিশ্লেষকের মতে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে এ ধরনের ঘটনার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। যদি এমনটা ঘটেও তাহলে ৬ জানুয়ারি ২০২৫ সালে নবনির্বাচিত কংগ্রেসের শপথ নেয়ার তিন দিন পরে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধিরা প্রেসিডেন্ট এবং সিনটররা ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: ট্রাম্প ও কমলা ছাড়া আরও যারা প্রার্থী
তবে, এখানে কিছু বিষয় রয়েছে। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধিরা ব্যক্তি হিসেবে নয় বরং একটি অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি হিসেবে ভোট দেবেন। তাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে একজন প্রেসিডেন্ট হবেন। যদি কোন প্রার্থী ২০ জানুয়ারির মধ্যে ২৬টি অঙ্গরাজ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পান, তাহলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পাবেন। সিনেট সদস্যরা যদি ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও ব্যর্থ হন, তাহলে ১৯৪৭ সালের ২০তম সংশোধনী এবং প্রেসিডেন্টের উত্তরাধিকার আইনের অধীনে, হাউসের স্পিকার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পেতে পারেন।
No comments: