ইসরাইল-হিজবুল্লাহর যুদ্ধবিরতির পরও বৈরুতজুড়ে গোলাগুলির শব্দ
দীর্ঘ ১৪ মাসের সংঘাতের পর ইসরাইল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লার মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর বৈরুতজুড়ে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। যদিও এই গোলাগুলি কী কারণে হয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। খবর রয়টার্সের।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে (বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা) যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, উভয় পক্ষই যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সের মধ্যস্থতায় একটি চুক্তি মেনে নিয়েছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পরও বৈরুতজুড়ে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। তবে এ গোলাগুলি যুদ্ধবিরতি উদ্যাপনের জন্য করা হয়েছে কি না তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেননা, ইসরাইলি সেনাবাহিনী কোনো এলাকা খালি করার নির্দেশ দিলে বাসিন্দাদের সতর্ক করার জন্যও গুলি করা হয়ে থাকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোরে যুদ্ধবিরতির পর ইসরাইলের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ লেবাননের দিকে স্রোতের মতো গাড়ি যেতে দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: ইসরাইল-হিজবুল্লাহর যুদ্ধবিরতি নিয়ে যা বলল যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে হিজবুল্লাহ ও লেবানন সরকার। রোববার (২৪ নভেম্বর) প্রস্তাবে নীতিগতভাবে সম্মতি জানায় ইসরাইল। এদিন রাতে উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকের পর সম্মতি জানান ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন নেতানিয়াহু। বৈঠকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন মন্ত্রিসভা। বৈঠক শেষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন নেতানিয়াহু। ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা চুক্তি কার্যকর করব। তবে চুক্তির কোনো লঙ্ঘন হলে জোর প্রতিক্রিয়া জানাব।’
আরও পড়ুন:লেবাননের সাথে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা ইসরাইলের
নেতানিয়াহু বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সাথে পূর্ণ সমন্বয় সাপেক্ষে আমরা সামরিক তৎপরতা বন্ধ রাখব। তবে যদি হিজবুল্লাহ চুক্তি লঙ্ঘন করে বা ফের সশস্ত্র হওয়ার চেষ্টা করে, আমরা আঘাত করব।’ তিনি দাবি করেন, হিজবুল্লাহ ২০২৩ সালের অক্টোবরে সংঘাত শুরু হওয়ার সময় যতটা শক্তি ছিল এখন তার তুলনায় যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়েছে।
কী আছে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে
লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর বরাতে এ বিষয়ে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছে রয়টার্স। খসড়া চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবিরতির মেয়াদ হতে যাচ্ছে ৬০ দিন।
লেবাননের পার্লামেন্টের ডেপুটি স্পিকার ইলিয়াস বাউ সা’ব বলেন, চুক্তিতে দক্ষিণ লেবানন থেকে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার এবং ৬০ দিনের মধ্যে লেবানন সীমান্তে দেশটির সেনা মোতায়েনের কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: লেবাননে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেবেন বাইডেন-ম্যাক্রোঁ
চুক্তিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ‘১৭০১ রেজল্যুশন’ বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। এই রেজল্যুশনের মাধ্যমে ইসরাইল ও হিজবুল্লাহর ২০০৬ সালের যুদ্ধ বন্ধ হয়েছিল। এই রেজল্যুশন অনুযায়ী সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার ভেতরে লিতানি নদীর পেছনে সরে আসতে হবে হিজবুল্লাহকে।
এছাড়া যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন তদারকি করবে ফ্রান্সসহ পাঁচটি দেশ। এর নেতৃত্বে থাকবে যুক্তরাষ্ট্র। অবশ্য জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যানন বলেন, যেকোনো চুক্তির অধীন ইসরাইল দক্ষিণ লেবাননে হামলা চালু রাখার সক্ষমতা বজায় রাখবে। এর আগে লেবাননের পক্ষ থেকে খসড়া চুক্তির এমন শব্দবন্ধ নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছিল, যেটা ইসরাইলকে এমন অধিকার দেবে।
Tag: world
No comments: