মেহেরপুর নামকরণ নিয়ে দরবেশ মেহের আলীকে নিয়ে কেন মিথ্যা কাহিনী
– মুহম্মদ রবীউল আলম মেহেরপুর নামকরণ নিয়ে দরবেশ মেহের আলীর নামে কেন এই মিথ্যা কাহিনী তা মেহেরপুরবাসী আজ জানতে চায়। কেন নামকরণ নিয়ে কয়েক যুগ ধরে জটিলতা সৃষ্টি করা হয়েছে? আজ মেহেরপুরবাসীর কাছে পরিস্কার হয়েছে যে, দরবেশ মেহের আলী নয়, মিহির-খনার মিহির থেকে মিহিরপুর নামকরণ হয়। পরে মিহিরপুর মেহেরপুর নামে রূপান্তরিত হয়েছে। দরবেশ মেহের আলীর নামে মেহেরপুর হয়েছে- এই তথ্য বা অভিমত সর্বপ্রথম মেহেরপুর থেকে প্রকাশিত ইতিহাস বিষয়ক বুলেটিন ‘প্রবাহ’-তে তুলে ধরা হয়। বুলেটিনটি প্রকাশিত হয় ১৯৭৯ সালের ১৩ মার্চ, বাংলা ১৩৮৫ সালের ২৮শে ফাল্গুন। এখানে উল্লেখ করা হয়, ‘১৬শ শতাব্দীর একজন দরবেশ মেহের আলী শাহের নামে এ অঞ্চলের নামকরণ হয়েছে।’ এই বুলেটিনের আগে প্রকাশিত কোন গবেষণাগ্রন্থ, বই বা পত্রিকায় এই তথ্য বা অভিমত আর খুঁজে পাওয়া যায় না। কেউ যদি তা দেখাতে পারেন, তাকে পুরস্কৃত করা হবে। বুলেটিনটির মাত্র কয়েকটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। লেখাটি প্রকাশিত হওয়ার পর সেসময় মেহেরপুর থেকে প্রকাশিত ভৈরব পত্রিকায় এর প্রতিবাদে একটি প্রবন্ধ লিখেছিলাম। মজার কথা হলো, বুলেটিন ‘প্রবাহ’-এর অন্যতম কর্ণধার আমার শ্রদ্ধেয় সাংস্কৃতিক গুরু, মুক্তিযুদ্ধের বিশিষ্ট সংগঠক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন মেহেরপুরে একটি অনুষ্ঠানে এ ব্যাপারে একটি সত্য কথা বলেছেন। ১৯ অক্টোবর ২০১৩-তে অনুষ্ঠিত ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমরা মেহেরপুরের ইতিহাসের প্রতি সকলকে আগ্রহী করার উদ্দেশ্যে মেহেরপুরের নামকরণ নিয়ে একটি মিথ রচনা করেছিলাম। আমরা উল্লেখ করেছিলাম, দরবেশ মেহের আলীর নামানুসারে মেহেরপুর হয়েছে। আসলে এটা সত্য ছিল না। কিন্তু এই অসত্য বিষয়টি এখন সামনে এসেছে। এ জন্য আমরা সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থী। শ্রদ্ধেয় নাসির ভাইকে এই সত্য কথাটি বলার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। কুষ্টিয়া নিউজ ও জাগো মেহেরপুরের আয়োজনে মেহেরপুরকে জানো; নিজেকে জানো বিষয়ক এক মুক্ত আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রবীন সাংবাদিক ও অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক প্রয়াত ইসলাম আলী,বিশিষ্ট সাহিত্যিক রফিকুর রশিদ, কবি- সাংবাদিকতারিক-উল ইসলাম, মুক্তিবানীর নির্বাহীর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মুহম্মদ রবীউল আলম, সাহিত্যিক বাবুল বড়ুয়া, সাংবাদিক আশরাফুল ইসলাম, সাংবাদিক তুহিন আরন্য, সাংবাদিক মেহের আমজাদ, জিনিয়াস ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ এর অধ্যক্ষ আল আমিন ইসলাম বকুল, জেলা ছাত্র উন্নয়ন সংঘের প্রতিনিধি নিজামউদ্দিন সেন্টু প্রমুখ। যারা দরবেশ মেহের আলীর নামে কাহিনী তৈরী করলেন, তারাই এখন বলছেন ঘটনাটি সত্য ছিল না। তা হলে আমরা আর কি বলবো? বুলেটিন ‘প্রবাহ’-এর আরও দু’জন সম্পাদক হলেন মুহঃ আনছার-উল-হক, মোঃআলী ওবায়দুর রহমান । তারা এখনো জীবিত আছেন। মেহেরপুরের আগ্রহী সাংবাদিক ও ইতিহাস গবেষকদের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা তাদের কাছে যান এবং মিথ্যা ইতিহাস থেকে মেহেরপুরবাসীকে বাঁচান। দরবেশ মেহের আলী কোনো ঐতিহাসিক ব্যক্তি নন এবং মেহেরপুরে তার কোন মাজার বা কবরও নেই। কেউ তা দেখাতেও পারবে না। মেহেরপুরের ইতিহাসের তথ্যসমৃদ্ধ বইগুলোতে এর কোন উল্লেখ বা প্রমাণও নেই। ইতিহাসে একজন মেহেরউল্লাহর নাম পাওয়া যায়, তিনি হলেন মুন্সী মেহেরউল্লাহ (১৮৬১-১৯০৭)। তাঁর বাড়ি যশোরে। তিনি মেহেরপুরের কৃতী সন্তান মুন্সী শেখ জমিরউদ্দিন (১৮৭০-১৯৩৭) এর বন্ধু ছিলেন। জন্মকাল দেখলে বোঝা যায় এই মুন্সী মেহেরউল্লাহর নাম অনুসারেও মেহেরপুরের নামকরণ হয়নি। অথচ এতসব জেনেও মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে গুরুত্ব দিয়ে লেখা হয়েছে,‘এ অঞ্চলে মুসলিম শাসনের সূত্রপাত হতেই ইসলাম ধর্ম প্রচার শুরু হয়েছিল। বৃহত্তর কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বারোবাজার, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর সহ প্রভৃতি অঞ্চলে ব্যাপকভাবে ইসলাম প্রচার শুরু করেন হযরত খাঁন জাহান আলী (রাঃ)। পীর খান জাহান আলী গৌড় থেকে ভৈরব নদী পথে মেহেরপুর হয়ে বারোবাজার গিয়ে বাগেরহাট গিয়ে ছিলেন। তার সাথে সেই সময়ে ৩৬০ জন দরবেশ ও ৬০ হাজার সৈন্য ছিল বলে কথিত আছে। তিনি সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে ইসলামের বিজয় পতাকা উত্তোলন করে জনবসতি ও শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করেন। এ অঞ্চলে ঐ একই সময়েই বেশ কয়েকজন ইসলামের ঝান্ডাবাহক আল্লাহর পরম আশীর্বাদপুষ্ট ব্যক্তিত্বের আগমন ঘটে। শাহ ভালাই, শাহ আলাই ও এনায়েত উল্লাহর নাম উল্লেখযোগ্য। পুণ্য আত্মা ইসলামের ঝান্ডাবাহক দরবেশ মেহের আলী শাহ-এর নামের সাথে সঙ্গতি রেখে মেহেরপুর নামকরণ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’ মেহেরপুর জেলা প্রশাসন পরিবেশিত এই বক্তব্য বিভ্রন্তিকর। মেহেরপুরের প্রকৃত ইতিহাস এই বক্তব্য সমর্থন করে না। প্রবাহ পরিবেশিত তথ্যে আরও বলা হয়, ১৬শ শতাব্দীতে মেহেরপুর শহরের প্রতিষ্ঠা। অথচ তারা জানেনই না-এই জনপদ কত পুরানো। তারা জানেন না- টলেমির মানচিত্রে এই অঞ্চলের চিত্র রয়েছে। এই মানচিত্র দ্বিতীয় শতাব্দীর। ওই মানচিত্রে গঙ্গা নদীর অববাহিকায় বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র দ্বীপ পরিলক্ষিত হয়। এই ¶ুদ্র দ্বীপাঞ্চলকে কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর অঞ্চল বলে মনে করা হয়ে থাকে। তা হলে দেখুন কোথায় দ্বিতীয় শতাব্দী আর কোথায় ১৬শ শতাব্দী? বিচারের ভার পাঠক, আপনারাই হাতেই ছেড়ে দিলাম। শুধু জেলা প্রশাসনই নয়, বিচ্ছিন্নভাবে মেহেরপুরের ইতিহাস নিয়ে যারা বই রচনা করেছেন, তাদের কেউ কেউ বিশ্বাসযোগ্য তথ্যসূত্র ছাড়াই মেহেরপুর নামকরণের ভুল তথ্যই বর্ণনা করে যাচ্ছেন। তাদের কাছে অনুরোধ, ভুল তথ্য বা বিভ্রান্তিকর তথ্য বা বানানো গল্প পরিবেশন থেকে বিরত থাকুন। জেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, মেহেরপুরের প্রকৃত ইতিহাস তুলে আনতে প্রয়োজনে একটি সেল গঠন করুন এবং প্রকৃত তথ্য তুলে ধরুন। এবার বলতে চাই মেহেরপুর নামকরনের প্রকৃত ইতিহাস। মেহেরপুরের প্রাচীন নাম মিহিরপুর-এটি ইতিহাসে প্রতিষ্ঠিত। আসলে মিহির-খনার মিহির থেকে মিহিরপুর নামকরণ হয়। পরে মিহিরপুর মেহেরপুর নামে রূপান্তরিত হয়েছে। এ অঞ্চলের সবচেয়ে প্রাচীন ইতিহাস গ্রন্থ হলো নদীয়া কাহিনী। এই গ্রন্থটি রচনা করেন কুমুদনাথ মল্লিক। ১৩১৭ বঙ্গাব্দে গ্রন্থটির প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। এই গ্রন্থে মেহেরপুরের নামকরণ সম্পর্কে তিনি উল্লেখ করেছেন, মহারাজা বিক্রমাদিত্যের শাসনকালে মেহেরপুরের উৎপত্তি হয়েছে। মহারাজা বিক্রমাদিত্যের শাসনকালেই মেহেরপুরের উৎপত্তি হয়। পরে মহারাজা বিক্রমাদিত্য মিহিরের নাম অনুসারে এই স্থানটির নামকরণ করেন মিহিরপুর। পরে এই মিহিরপুর থেকে মেহেরপুর হয়েছে। কুমুদনাথ মল্লিক এই স্থানটিকে মিহির-খনার বাসস্থান বলিয়া নির্দেশ করেন এবং মিহিরের নাম হইতে মিহিরপুর, অপভ্রংশে মেহেরপুর-এর উৎপত্তি হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ শ্রী নগেন্দ্রনাথ বসু সম্পাদিত বিশ্বকোষ ( পঞ্চদশ ভাগ-১৩১১ সাল), বীরেন্দ্র কুমার চৌধুরীর ভারতকোষ, অমিয় বসু সম্পাদিত বাংলায় ভ্রমণ (প্রথম খন্ড ১৯৪০, পৃষ্ঠা ১০৫,কোলকাতা), শ,ম, শওকত আলী রচিত কুষ্টিয়ার ইতিহাস প্রভৃতি গ্রন্থে মিহির থেকে মিহিরপুর এবং মিহিরপুর থেকে মেহেরপুর হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলায় ভ্রমণ গ্রন্থে (প্রথম খন্ড ১৯৪০, পৃষ্ঠা ১০৫, কোলকাতা) বলা হয়েছে, মিহিরের নাম থেকে মিহিরপুর। পরবর্তীতে তা অপভ্রংশ হয়ে মেহেরপুর নামের উৎপত্তি হয়েছে। শ.ম. শওকত আলী তাঁর কুষ্টিয়ার ইতিহাস(১৯৭৮) গ্রন্থে একই মত প্রকাশ করে বলেন, ‘মেহেরপুর একটি প্রাচীন গ্রাম। কেউ কেউ এই স্থানেই মিহির-খনার বাসস্থান বলে উল্লেখ করেন এবং মিহিরপুর নাম হইতে মেহেরপুর হয়েছে বলেন। প্রাচীন বইপত্র ওসরকারী দলিলপত্র অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে প্রথম কয়েক যুগ এই স্থানটির নাম মিহিরপুর হিসাবেই প্রচলিত ছিল। পরে মেহেরপুর হয়েছে।’ মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে দরবেশ মেহের আলীশাহ এর নামানুসারে মেহেরপুরের নামকরণ হয়েছে- একথা উল্লেখের পাশাপাশি ‘মিহিরপুর থেকে মেহেরপুর’- এ তথ্যও লেখা হয়েছে। বলা হয়েছে,বিখ্যাত বচনকার মিহিরের নামানুসারে মেহেরপুরের নাম করা হয়েছে। মিহির ও তার পুত্রবধু খনা ভৈরব নদীর তীরস্থ মেহেরপুর অঞ্চলে বসবাস করতেন বলে কোন কোন বর্ণনায় বলা হয়েছে। এই মিহিরেরনামানুসারে মিহিরপুর এবং পরবর্তীতে অপভ্রংশ হয়ে মেহেরপুর নামের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দেয়া হয়নি। দরবেশ মেহের আলীশাহ-এর নামানুসারে মেহেরপুরের নামকরণ হয়েছে- এই তথ্যকে গুরুত্ব না দিয়ে ‘মিহিরপুর থেকে মেহেরপুর’- প্রকৃত এই ইতিহাসকে গুরুত্ব দিতে অনরোধ করি। সন্ধান ডট কমে খুলনা বিভাগের জেলাগুলোর নামকরণের ইতিহাস তুলে ধরে মেহেরপুর প্রসঙ্গে লেখা হয়েছে, বচনকার মিহির ও তাঁর পুত্রবধু খনা এই শহরে বাস করতেন বলে প্রচলিত আছে। মিহিরের নামথেকে মিহিরপুর এবং পরবর্তীতে তা মেহেরপুর হয়। বিশিষ্ট গবেষক সালাহ উদ্দিন শুভ্র এব্যাপারে বেশ গবেষণা করেছেন। তিনি লিখেছেন, উপমহাদেশের প্রাচীন রাজ্য অবন্তী তথা উজ্জয়নের রাজা হর্ষ-বিক্রমাদিত্যের রাজপ্রাসাদে প্রধান জ্যোতির্বিদ ছিলেন বিখ্যাত পন্ডিতবরাহ মিহির , আনুমানিক ৫০০ খ্রীষ্টাব্দের কথা। বরাহমিহিরের পুত্র জন্মগ্রহণ করলে তিনি পুত্রের কোষ্টি বিচার করে প্রচন্ড ভয় পেয়ে যান। হিসেব করে দেখেন মাত্র এক বছরের মধ্যেই মারা যাবে তার প্রিয় শিশুপুত্র।পিতা হয়ে পুত্রের মৃত্যুকে অসহায়ের মত অবলোকন করতে হবে আর ভয়ংকর দিনগুলি গণনা করে যেতে হবে। সম্ভাব্য ভবিষ্যতের চিন্তা করে এবং তা সহ্য করতে না পরে তিনি ভাসিয়ে দেন পুত্রকে, পাত্রে ভরেনদীর স্রোতে। অনেক দূরের এক রাজ্যে, নদী থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে রাক্ষস স¤প্রদায়। কিন্তু মারা যায় না শিশুটি, বড় হতে থাকে রাক্ষসদের মধ্যে। ষোল বছর বয়সে শাণিত বুদ্ধির এক রাক্ষস মেয়ের প্রেমে পড়ে যায় সে, বিয়েকরে তাকে। মেয়েটি তার জ্যোতির্জ্ঞান প্রয়োগ করে জানতে পারে তার স্বামী মিহির উজ্জয়নের বিখ্যাত পন্ডিত বরাহমিহিরের পুত্র। একদিন দু’জন মিলে রওয়ানা দেয় উজ্জয়নের পথে। পুত্র ও পুত্রবধুর পরিচয় পেয়ে রাজপ্রাসাদে তাদের গ্রহণ করেন বরাহ। কৃষিকাজে মেয়েটির ছিল অগাধ জ্ঞান আর গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থান বিচার করে আবহাওয়ার চমৎকার পূর্বাভাস দিতে পারত সে। উজ্জয়নের কৃষকরা ব্যাপক উপকার লাভ করেতার কাছ থেকে। আর তা দেখে রাজা বিক্রমাদিত্য মেয়েটিকে তার রাজ্যের দশম রত্ন হিসেবে আখ্য দেন। মেয়েটির জ্ঞানে সারা রাজ্য ও রাজপ্রাসাদ মুগ্ধ হয়ে রইল। তখন পন্ডিত বরাহের খোঁজ আর কেউ নেয় না।এমন কি বরাহ নিজেও জনসমক্ষে এক বিতর্কে পুত্রবধুর হাতে পরাস্ত হন। ঈর্ষাপরায়ণ বরাহ তাই এক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পুত্রকে আদেশ দেন মেয়েটির জিহ্বা কেটে ফেলতে, যাতে চিরতরে স্তব্ধ হয়ে যায় তার কন্ঠ। আরঘটেও যায় এই মর্মন্তুদ ঘটনা! উড়িষ্যার উপাখ্যান বর্ণিত আছে, রক্তক্ষয়ী এই ঘটনার পর মেয়েটির নাম হয় খনা, উড়িয়া ভাষায় যার মানে বোবা। বাংলার এক কিংবদন্তিতে আছে, জন্মের পর মেয়েটির পিতা তার নাম রাখেন খনা। কারণ তার জন্ম হয়েছিল এক শুভক্ষণে। কিন্তু বাংলার এই মেয়েটি বেড়ে ওঠে লঙ্কা নামের রাক্ষস দ্বীপে । মধ্যযুগীয় কিছু বর্ণনায়,যেমন কালহানের রতœরঙ্গিনীতে, বাংলার গৌড়কেই অবশ্য রাক্ষস রাজ্য হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়েছে। উইকিপিডিয়ায় লেখা হয়েছে,বরাহমিহির প্রাচীন ভারতের গুপ্ত সাম্রাজ্যের সমসাময়িক (আনুমানিক ৫০৫ – ৫৮৭) একজন বিখ্যাত দার্শনিক,জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতবিদ ও কবি। তিনি পঞ্চসিদ্ধান্তিকা নামের একটি মহাসংকলন গ্রন্থ রচনা করেন; যাতে তার জীবদ্দশার সময়কার গ্রিক, মিশরীয়, রোমান ও ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের সার লিপিবদ্ধ হয়েছে। তিনি দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে বিখ্যাত ও জনপ্রিয় বিজ্ঞানীদের অন্যতম। জ্যোতির্বিজ্ঞান ছাড়াও গণিতশাস্ত্র, পূর্তবিদ্যা, আবহবিদ্যা, এবং স্থাপত্যবিদ্যায় পন্ডিত ছিলেন। তিনি কলা ও বিজ্ঞানের প্রায় সমন্ত শাখায় ব্যাপক অবদান রাখেন। উদ্ভিদবিদ্যা থেকে জ্যোতির্বিজ্ঞান, সামরিকবিজ্ঞান থেকে পুরাকৌশল- জ্ঞানের সমস্ত ক্ষেত্রেই ছিল তাঁর স্বচ্ছন্দ পদচারণা। ভারতের নয়াদিল্লীতে অবস্থিত সংসদ ভবনে বরাহমিহিরের সম্মানে একটি দেয়ালচিত্র অঙ্কিত হয়েছে। এই মনীষীর জন্ম ভারতের অবন্তিনগরে (বর্তমান উজ্জয়িনী)। গুপ্ত রাজাবিক্রমাদিত্যের সভার নবরত্নের অন্যতম হিসেবে তিনি স্বীকৃত। ভারতীয় পঞ্জিকার অন্যতম সংস্কারক ছিলেন তিনি। তিনিই বছর গণনার সময়বৈশাখকে প্রথম মাস হিসেবে ধরার প্রচলন করেন। আগে চৈত্র এবং বৈশাখকে বসন্ত ঋতুর অন্তর্গত ধরা হতো। পৃথিবীর আকার এবং আকৃতি সম্বন্ধে তার সঠিক ধারণা ছিল। তার জন্ম ৫৮৭ ধরা হলেও কারও কারওমতে তা ৫৭৮। আমি মেহেরপুরবাসীসহ ইতিহাসবিদদের কাছে বিনীত অনুরোধ রাখছি, মেহেরপুরের নামকরণ সম্পর্কে প্রকৃত ইতিহাস জানুন এবং নতুন প্রজন্মের সামনে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরুন। এর পাশাপাশি ইতিহাসবিদদের সাথে একমত হয়ে বলুন ‘মিহিরের নাম থেকে মিহিরপুর। পরবর্তীতে তা মেহেরপুর নামের উৎপত্তি হয়েছে।’ সহায়ক গ্রন্থ: ১. কুমুদনাথ মল্লিক- ‘নদীয়া কাহিনী’-১৩১৭ বঙ্গাব্দ ২. শ্রী নগেন্দ্রনাথ বসু সম্পাদিত ‘বিশ্বকোষ’ (পঞ্চদশ ভাগ-১৩১১ সন) ৩. বীরেন্দ্র কুমার চৌধুরীর ‘ভারত কোষ’, ৪. অমিয় বসু সম্পাদিত ‘বাংলায় ভ্রমণ’ (প্রথম খন্ড ১৯৪০, পৃষ্ঠা ১০৫, কোলকাতা) ৫. শ,ম, শওকত আলী রচিত ‘কুষ্টিয়ার ইতিহাস’ ৬. আবুল আহসান চৌধুরী সম্পাদিত কুষ্টিয়া: ইতিহাস- ঐতিহ্য সেপ্টেম্বর ১৯৭৮ ভাদ্র ১৩৮৫, কুষ্টিয়া ৭. প্রবাহ, ১৩ মার্চ,১৯৭৯ সাল ৭. ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন লেখা লেখক: মুহম্মদ রবীউল আলম, লেখক-সাংবাদিক, মেহেরপুরের সন্তানSlider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
Education
»
English News
»
Featured
»
others
»
videos
»
Zilla News
» মেহেরপুর নামকরণ নিয়ে দরবেশ মেহের আলীকে নিয়ে কেন মিথ্যা কাহিনী – মুহম্মদ রবীউল আলম
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: