Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » মেহেরপুরের সাহিত্য:মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন মীরু




মেহেরপুরের সাহিত্য:মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন মীরু (১১ নভেম্বর ১৯৪৬ -২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯) সাংস্কৃতিক সংগঠক,মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ইতিহাস গবেষক-লেখক স্মৃতিতে ভাষাসৈনিক আমানুল ইসলাম -মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন মীরু

সাতে নেই, পাঁচেও নেই- এমন একজন মানুষ ছিলেন আমানুল ইসলাম। মেহেরপুর শহরের বড়বাজারে গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুল রোডে (শহিদ আবুবকর সড়ক) এ পারে আমাদের বাড়ি, ওপারে তাঁদের। ‘বড়ভাইতুল্য’ এই মানুষটিকে ‘আমানুল ভাই’ বলে ডাকতাম। তাঁর সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই দেখা হতো। কখনও বাড়ি থেকে বেরোনোর পথে, কখনও বাইরে থেকে বাড়ি আসার পথে কথা হতো। কখনওবা শহরের বয়সী মানষদের সঙ্গে আড্ডায়, কখনওবা তার ড্রইংরুমে মুখোমুখি কথা। প্রতিবেশী হিসেবে আমার মা, ভাই ও স্ত্রী-সন্তানদের তাদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল। মা জবেদা খাতুন ও মেয়ে ঊর্মির একটু বেশিই যাতায়াত ছিল। কখনও স্ত্রী বেনুও যেতো। আমানুল ভাইয়ের স্ত্রী শামসুন নাহার পারস্পরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতেন। তাঁদের ছোট ছেলে তারিক ঢাকা থেকে বাড়িতে এলে গল্প বা আড্ডাটা একটু বেশিই হতো। সেই আড্ডায় কখনও আমানুল ভাইও যোগ দিতেন। যে কোনো আড্ডায় তিনি বেশ রসিয়ে গল্প বলতে পারতেন। তাৎক্ষণিকভাবে যে কোনো বিষয়ে গল্প বানিয়েও ফেলতে পারতেন। আমরা তার কথা শুনতাম। তার রসবোধ বেশ উপভোগ্য ছিল। তিনি লেখাপড়া জানা প্রগতিশীল মানুষ ছিলেন। প্রতিবেশী বা শহরের কারও সঙ্গে কখনও তিনি বিবাদে জড়িয়েছেন- এমন শুনিনি। উদার চিত্তের নির্বিবাদী মানুষ ছিলেন তিনি। তার বোন রমা ও মামাতো বোন মিনা ও রিনা ছিল আমাদের সমসাময়িক। তখন পাকিস্তান আমলের শেষ দিক এবং বাংলাদেশের প্রথম দিক। রমা খুলনার বয়রা কলেজে লেখাপড়া শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স ও এমএ করেছিল। মিনা-রিনা মেহেরপুর কলেজ ও ঢাকার ইডেন কলেজে লেখাপড়া করেছিল। ওরা পরবর্তী জীবনে ঢাকা ও পাবনায় সাংসারিক জীবনে থিতু হয়। রমা কানাডায় স্থায়ী হয়েছে। ষাটের দশকে যখন আমানুল ভাই তাদের শালিকার গ্রামের বাড়ি থেকে মেহেরপুরে বোনদের কাছে আসতেন, তখন কোনো একদিন তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। কিভাবে সে পরিচয়পর্ব তা মনে না থাকলেও মনে আছে এই রাজনীতি সচেতন মানুষটিকে। ১৯৭৮ সালে মেহেরপুরে যখন নুরুল ইসলাম মোল্লার বাড়িটি কিনলেন তখন থেকে সবসময় দেখা হতো তাঁর সাথে। দেখা হলে আমরা একে অপরের সঙ্গে কুশল বিনিময় করতাম। কখনও সমসাময়িক রাজনীতি নিয়েও কথা হতো। তাঁর বড় ছেলে ডাক্তার মসিউল ইসলাম বাবুল ও ছোট ছেলে কবি ও সাংবাদিক তারিক-উল ইসলাম। তাঁরা ছিল আমার অনুরক্ত। তাদেরকেও তাদের বাবার মতো প্রগতিশীল চিন্তাচেতনায় দেখে ভালো লাগে। এ ছাড়া আমানুল ইসলামের মেয়েরাও নিশ্চয় ভালো আছে। আমানুল ভাই সংসার ও সামাজিক জীবনে একজন সফল মানুষ ছিলেন। আত্মপ্রচার ছিল আমানুল ভাইয়ের স্বভাববিরুদ্ধ। শুনেছি, তিনি ভাষা আন্দোলনে মেহেরপুরে ও পাবনায় অংশ নিয়েছেন। তিনি মেহেরপুর মডেল হাই ইংলিশ স্কুলে যখন পড়তেন, তখন ভাষা আন্দোলন হয়েছিল। মেহেরপুরে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চের ছাত্র ধর্মঘট ও মিছিলে তাঁর অংশগ্রহণ ছিল। ১৯৫২ সালের আন্দোলনের ঢেউও এসে পড়েছিল মেহেরপুরে। ঢাকায় পাকিস্তানি পুলিশের গুলিতে আন্দোলনকারী রফিক, বরকত, সফিউর, জব্বার শহীদ হন। এর প্রতিবাদে মেহেরপুর শহরের তরুণরা বিক্ষোভ করেছিলেন। সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়েছিল। মেহেরপুর শহরে সেই ধর্মঘট পালন হয়েছিল দুইদিন। এই বিক্ষোভ ধর্মঘটে অন্যদের সঙ্গে আমানুল ইসলামেরও ভূমিকা ছিল। তখন মেহেরপুরসহ ছোট ছোট শহরগুলোতে কোনো কলেজ ছিল না। সেজন্য স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরাই আন্দোলনে নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করেছিল। ১৯৫৩ সালে আমানুল ভাই যখন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে পড়েন, তখন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মুসলিম লীগ নেতা নুরুল আমিন পাবনায় গেছিলেন। পাবনার স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা তখন তার আগমনের প্রতিবাদে ও ভাষা আন্দোলনের সপক্ষে আন্দোলন গড়ে তোলেন। ওই আন্দোলনে অংশ নেয়ার জন্য অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আমানুল ইসলামও ছিলেন। এ ছাড়া সেদিন তার সহপাঠী ভাষাসৈনিক ও কলামিস্ট কামাল লোহানী, জিয়া হায়দার, রনেশ মৈত্রসহ অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। আমানুল ভাই ১৩ দিন কারাগারে আটক ছিলেন। এর কিছুদিন আগে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী পাবনায় তার কন্যার বাড়ি যান এবং ছাত্রদের ভাষা আন্দোলন তীব্র করতে উদ্বুদ্ধ করেন। মওলানা ভাসানী পাকিস্তান আমলে ও বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর একাধিকবার মেহেরপুর এসেছেন। জনসভায় দেওয়া ভাষণে তার বিখ্যাত হুশিয়ারি ‘খামোশ’ বলতে শুনেছি। তাঁর সঙ্গে আমার রয়েছে অনেক স্মৃতি। আমরা যে লালটুপি বাহিনী গড়ে তুলেছিলাম, সে তো তাঁরই আহ্বানে সাড়া দিয়ে। ১৯৭০ সালে মওলানা ভাসানী মহিপুরের কৃষক সম্মেলনে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীকে লালটুপি বাহিনী বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ আমলের শেষদিকে ও পাকিস্তান সৃষ্টির প্রথম দিকে মেহেরপুর শহরে প্রায় সব সংগঠনেরই অস্তিত্ব ছিল। ছাত্র সংগঠনের মধ্যে যেমন মুসলিম ছাত্রলীগ ছিল, তেমনই ছাত্র কংগ্রেস ও ছাত্র ফেডারেশনের অস্তিত্ব ছিল। স্কুলে পড়ার সময় প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে আমানুল ভাই যুক্ত ছিলেন বলেও জেনেছি। সংগঠনটির নেপথ্যে ছিল কমিউনিস্ট পার্টি। মেহেরপুরে কৃষক আন্দোলনের সময় ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে কমিউনিস্ট পার্টির বড় ভূমিকা ছিল। এখানে কমিউনিস্ট নেতা মাধব মোহন্তের ভূমিকা বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য। আমানুল ভাই ছিলেন আমার চেয়ে এক যুগেরও বেশি বয়সের সিনিয়র। ১৯৪৬ সালে মেহেরপুর মহকুমার করিমপুর থানার ফাজিলনগর গ্রামে আমার জন্ম। করিমপুর তখন মেহেরপুর মহকুমার একটি থানা ছিল। ১৯৫৪ সালে আমার পরিবার ফাজিলনগর থেকে মেহেরপুরে স্থানান্তারিত হয়। তখনও পূর্ব পাকিস্তানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ভাষা আন্দোলন চলছিল। আমানুল ভাই সেই আন্দোলনের একজন হয়ে ভূমিকা রেখেছিলেন- এ অনেক বড় বিষয়। সংসার জীবনে এসে তিনি সক্রিয় রাজনীতিতে সেভাবে যুক্ত থাকতে না পারলেও প্রগতিশীল রাজনীতির মূল স্রোতে থেকেছেন সবসময়। ১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন। পাকিস্তানি সেনাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন। তবু মাথা নোয়াননি। তিনি মানুষ ভালোবাসতেন। উদারনৈতিক চিন্তার কারণে তিনি শ্রদ্ধেয় হয়ে রয়েছেন। ২০১০ সালে তাঁর মৃত্যুর পর পত্র-পত্রিকায় ভাষাসৈনিক আমানুল ইসলামের প্রয়াণের খবর দেখে মনে হয়েছে, তাঁর কাছে আমাদের আরও অনেক জানার ছিল। মেহেরপুর শহরের শহীদ শামসুজ্জোহা পার্কে হয়েছিল তাঁর জানাজা। সেখানেতাঁকে জানিয়েছি শেষ শ্রদ্ধা। যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন তিনি। অনুলিখন: হাসনাত আসিফ কুশল ( ২০১৩ ও ২০১৭ সালে নেওয়া সাক্ষাৎকারের অনুলিখন।) মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন মীরু (১১ নভেম্বর ১৯৪৬ -২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯) সাংস্কৃতিক সংগঠক,মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, ইতিহাসবিদ,ইতিহাস গবেষক,মেহেরপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রথম সাধারণ সম্পাদক(১৯৮৪--৮৭)।মেহেরপুরের আর্থ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তিনি ছিলেন অগ্রদূত। মেহেরপুরকে এগিয়ে নিতে তিনি নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি ২৪ সেপ্টেম্বর-২০১৯ মঙ্গলবার রাত ৯ টার ঢাকার ধানমন্ডির গ্রীন লাইফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন মীরুকে মেহেরপুরবাসী চিরকাল স্মরণ করবে। মেহেরপুরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন মীরু। মেহেরপুরের উন্নয়নই তাঁর জীবনের একমাত্র চাওয়া ও পাওয়া ছিলো। মেহেরপুরের জন্য তিনি জীবন যৌবন উৎসর্গ করেছিলেন। টাকা-পয়সা বা ক্ষমতা তিনি কোন কিছু চাননি । তিনি শুধু চেয়েছেন মেহেরপুরের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন। সারা জীবন দুঃখ-কষ্ট সাথে নিয়ে সমাজের জন্য সংস্কৃতির জন্য রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন। মেহেরপুরের তরুণ প্রজন্মকে আলোর পথ দেখানোর জন্য এখানে ওখানে ঘুরেছেন। পরিবারের জন্য কিছুই করে যাননি। যোগ্যতা অনুসারে তিনি বড় কোন পদেও তিনি থাকেননি। তার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হলো মধুচক্র প্রতিষ্ঠা। সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে মেহেরপুরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি মধুচক্র নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। ১৯৬৭ সালে সংগঠনটির জন্ম হয়। স্বাধীনতার পূর্বে ও পরে মধুচক্রের আয়োজনে প্রতিবছর মেহেরপুরে মধুমেলা অনুষ্ঠিত হতো। এতে থাকতো মুদ্রা,চারুকলা, পত্র-পত্রিকাসহ বিভিন্ন জিনিসের প্রদর্শনী এবং সাথে থাকতো বিভিন্ন অনুষ্ঠান। তিনি ছিলেন এই সংগঠনের প্রাণ পুরুষ। ডা. আব্দুল বাকী, ইসলাম আলী, মীর রওশন আলী মনা, কামরুল ইসলাম খান, বদরুজ্জামান,চিত্রশিল্পী গোলাম মোস্তফাসহ অনেকেই ছিলেন তার সাথে। এপার-বাংলা ওপার-বাংলার লেখকদের লেখা নিয়ে এই সংগঠন থেকে সংকলন বের হতো। রবীন্দ্র-নজরুল, সুকান্ত জন্ম জয়ন্তী, মধুসূদন উৎসব সহ নানা সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এই সংগঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হতো। মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন মীরু ১৯৪৬ সালের ১১ নভেম্বর নদীয়া জেলার তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার করিমপুর থানাপর ফাজিলনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরে তারা মেহেরপুরে চলে আসেন। তাঁর পিতা নকিবউদ্দিন ছিলেন একজন সচ্ছল কৃষক। মেহেরপুরের নীলমণি সিনেমা হল রোডে তারা বাড়ি করেন। পরে তিনি বাড়িটি দুই ভাইকে দিয়ে দেন। তিনি মেহেরপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশ করেন। পরে তিনি মেহেরপুর কলেজ থেকে আইকম ও বিকম পাশ করেন। স্কুল ও কলেজ জীবনে তিনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন। এসময়ে তিনি বাম রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত হয়ে পড়েন। তিনি তখন মেহেরপুর ছাত্র ইউনিয়নের নেতা হয়ে উঠেন। তার সাথে ছিলেন আব্দুল আওয়াল, সিরাজুল ইসলাম। আবুবক্কর, আহমদ আলী, সাখাওয়াৎ হোসেন মুন্সী প্রমুখ নেতারা তখন ভাষানী ন্যাপ করতেন। আর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ছিলেন এ্যাড. আবুল হায়াত, সহিউদ্দিন, মফিজুর রহমান প্রমুখ। মেহেরপুরে বাম রাজনৈতিক দলের লাল টুপি আন্দোলনের নেতৃত্বে তিনি ছিলেন। পরবর্তীকালে তার নেতৃত্বে মেহেরপুর থেকে প্রকাশ পায় ইতিহাস ভিত্তিক পত্রিকা ‘প্রবাহ’। পত্রিকাটি প্রকাশের দায়িত্বে ছিলেন শ্রদ্ধেয় শিক্ষক আনছার-উল হক, মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন (সম্পাদক-প্রকাশক) ও মোঃ আলী ওবায়দুর রহমান সহ অনেকেই। অধ্যাপক শামসুল ইসলাম লিখতেন মেহেরপুরের প্রাচীন ঐতিহ্য সম্পর্কে। ১৯৭৯ সালের ১৩ই মার্চ, বাংলা ১৩৮৫ সালের ২৮শে ফাল্গুন মেহেরপুর থেকে ‘প্রবাহ’ নামে এই পত্রিকাটি সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাস বিষয়ক বুলেটিন হিসাবে প্রকাশিত হয়। মেহেরপুর বড় বাজারের এডলিক প্রিন্টিং প্রেস থেকে এটি প্রকাশিত হতো। অনিয়মিত এবং সাহিত্য বিষয়ক বুলেটিন হলেও পত্রিকাটি মেহেরপুরের বিদগ্ধ মহলে খুবই সমাদৃত হয়েছিল। পত্রিকাটিতে মেহেরপুরের ইতিহাস নিয়েই বেশি লেখালেখি হয়েছে। পত্রিকাটি মাত্র তিনটি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছিল। তিনি কুষ্টিয়া থাকাকালীন সময়ে সেখানকার রবীন্দ্র সংগীত পরিষদ, বিজ্ঞান পরিষদ, শিশু একাডেমী সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত হয়ে পড়েন। তিনি ব্যাপক পড়াশুনা করেন। সব বিষয়ের ওপর তাঁর গভীর পড়াশুনা আছে। তাঁর সংগ্রহে রয়েছে অনেক বই। তিনি কিছুদিন সাংবাদিকতাও করেছেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ভারতে ট্রেনিং নেন এবং মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন অপারেশনে অংশ নিয়ে তিনি অসম সাহসিকতার পরিচয় দেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কোন সনদ বা স্বীকৃতি তিনি চান নি। তিনি বলেন, দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি তো স্বীকৃতি কেন চাইবো, এটা আমার কর্তব্য ছিল, তাই করেছি। তিনি যখন অবসর জীবন যাপন করেছেন আর মেহেরপুরের উন্নতি কিভাবে করা যায় তাই চিন্তা করেছেন। মেহেরপুর প্রায় সবগুলো সংগঠনের সাথে তিনি বিশেষ ভাবে জড়িয়ে ছিলেন। বুদ্ধি পরামর্শ দিয়ে তিনি নতুন প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি ছিলেন বংশীবাদক। নতুন প্রজন্মে ছেলে-মেয়েরা তার সাথে সাথে ছিল। মেহেরপুরের প্রবীণ সাংস্কৃতিক সংগঠক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন শেষ জীবনে ঢাকার তাঁর মেয়ে কবি নন্দিতা উর্মির বাসায় অবস্থান করেছেন। আলোকিত মেহেরপুর গড়ার কারিগর ছিলেন তিনি। তিনি মেহেরপুরে সাংস্কৃতিক বিপ্লব ও মেহেরপুরের ইতিহাস লিখতে চেয়েছিলেন।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply