Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » বন্দিদের আটকে রেখে চলত অকথ্য অত্যাচার? কী এই ‘আয়নাঘর’? কোথায় আছে হাসিনার ‘ভয়ঙ্কর জেল’---আনন্দবাজার পত্রিকা(ভারত}




ন্দিদের আটকে রেখে চলত অকথ্য অত্যাচার? কী এই ‘আয়নাঘর’? কোথায় আছে হাসিনার ‘ভয়ঙ্কর জেল’---আনন্দবাজার পত্রিকা(ভারত} ,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক গণবিক্ষোভ ও তার জেরে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর একটি বিশেষ শব্দ সমাজমাধ্যম থেকে সংবাদমাধ্যমে ঘুরতে শুরু করেছে। শব্দটি ‘আয়নাঘর’। শব্দটি সমাজমাধ্যমে যে ভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে, তার নেপথ্যে যেন থমকে থাকছে অবিমিশ্র ঘৃণা এবং আতঙ্ক। কী এই ‘আয়নাঘর’? ‘আয়নাঘর’ আসলে আওয়ামী আমলে ডাইরেক্টরেট জেনারেল অফ ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) পরিচালিত এক গোপন বন্দিশালা। এর জন্ম শেখ হাসিনার আমলেই। মূলত সরকার-বিরোধী চক্রান্তে সন্দেহভাজনদের আটক রাখা হত এখানে। উল্লেখ্য, ডিজিএফআই সে দেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের গোয়েন্দা সংস্থা। গত ৬ অগস্ট ব্যারিস্টার আহমেদ বিন কাসেম আরমান এবং প্রাক্তন সেনা আধিকারিক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহিল আমান আযমী আট বছর ‘নিখোঁজ’ থাকার পর জনসমক্ষে আসেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁরা ‘মানবতা বিরোধী’ কার্যকলাপে জড়িত ছিলেন— এই অজুহাতে শেখ হাসিনা সরকার তাঁদের ‘আয়নাঘর’-এ আটক রাখে বলে তাঁরা বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘ডেলি অবজ়ার্ভার’কে জানিয়েছেন। আরমান এবং আযমী দু’জনেই জানিয়েছেন যে, আট বছর ধরে সেখানে তাঁরা বিনা বিচারে কদর্য অবস্থায় বন্দিদশা কাটিয়েছেন৫ অগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। তার পর থেকেই শুরু হয় ‘আয়নাঘর’ নিয়ে চর্চা। হাসিনা-শাসনে বহু ব্যক্তিই আচমকা নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিলেন বলে জানা যাচ্ছে। তাঁরা প্রত্যেকেই আওয়ামী সরকারের বিরোধিতা করেছিলেন এবং প্রকাশ্যে হাসিনার সমালোচনা করেছিলেন। ঠিক যে ভাবে নাৎসি জমানায় জার্মানিতে বিরোধী পক্ষকে কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে আটক রখা হত, সেই আঙ্গিকেই ‘আয়নাঘর’ চলত। এমনটাই জানিয়েছেন সেখান থেকে বেরিয়ে আসা বন্দিরা।শুধুমাত্র ঢাকা শহরেই নাকি এমন ২৩টি বন্দিশালা ছিল। তার মধ্যেই একটি ‘আয়নাঘর’। মানবাধিকার নিয়ে কর্মরত কয়েকটি সংস্থার সমীক্ষা অনুযায়ী, ২০০৯ সালে প্রায় ৬০০ ব্যক্তি রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হন। এঁদের সকলকেই বলপূর্বক তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এবং এই সব অপহরণের নেপথ্যে সেনাবাহিনীর হাত ছিল বলেও অভিযোগ তোলা হয়।বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের দাবি, শুধু তৎকালীন সরকারের সমালোচকেরা নন, ‘চরমপন্থী’ বা ‘সন্ত্রাসবাদী’ হিসাবে চিহ্নিত করেও বহু মানুষকে ‘আয়নাঘর’ বা সেই জাতীয় গোপন বন্দিশালাগুলিতে আটক করা হয়েছিল। যাঁদের মধ্যে কিছু মানুষকে পরে মুক্তি দেওয়া হয়। বেশ কিছু মানুষকে সেনাবাহিনী হত্যা করে। খুব কম জনকেই বিচারের জন্য আদালতে তোলা হয়২০২২ সালের ১৪ অগস্ট সুইডেনের এক সংবাদমাধ্যম ‘নেত্র নিউজ়’ (সংস্থাটি মুখ্যত বাংলাদেশ সংক্রান্ত সংবাদ পরিবেশন করে) এক তদন্তমূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানেই প্রথম দাবি করা হয় যে, ‘আয়নাঘর’ নামে এক গোপন কারাগারে আকস্মিক ভাবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া মানুষদের আটক রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে। ‘নেত্র নিউজ়’ সেই কারাগারের সম্ভাব্য অবস্থানও জানিয়েছিল। তাদের এই দাবির ভিত্তি হিসাবে হাসিনুর রহমান এবং শেখ মোহাম্মদ সেলিমের বয়ান প্রকাশ করে। তাঁরা ‘আয়নাঘর’-এ আটক ছিলেন বলে দাবি করেন।২০১৮ সালের ৮ অগস্ট বাংলাদেশের প্রাক্তন সেনা আধিকারিক ও র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-এর সদস্য হাসিনুরকে ১৪-১৫ জন লোক তাঁর মিরপুরের আবাস থেকে তুলে নিয়ে যায়। ২০২২ সালে তাঁকে তাঁর বাড়ির সামনে রেখে আসা হয়। সেই সময় তিনি অসুস্থ। তাঁর কথাবার্তা অসংলগ্ন ছিল এবং উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় তিনি ভুগছিলেন বলে তাঁর পরিবার সূত্রে জানা যায়। হাসিনুর জানান, ১৬ মাস তাঁকে ‘আয়নাঘর’-এ আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছিল। চট্টগ্রামে জামাত-উল-মুজাহিদিন গোষ্ঠীর বেশ কয়েক জন সদস্যকে ২০০৫-০৬ নাগাদ হাসিনুর গ্রেফতার করেছিলেন। তাঁরা নাশকতামূলক কাজে জড়িত ছিলেন বলেই জানা গিয়েছিল। তা সত্ত্বেও ‘দেশদ্রোহিতা’র অভিযোগে হাসিনুরকে সেই সময় পদচ্যুত করা হয়।নেত্র নিউজ়’ সেই সময় কোনও কারাগৃহের বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করে দাবি জানায়, সেগুলি ‘আয়নাঘর’-এর। তাদের আরও দাবি, সেই ছবিগুলি সেখানে কর্মরত সামরিক অধিকর্তাদেরই তোলা। দাবি করা হয়, বাংলাদেশের কাউন্টার-টেররিজ়ম ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো এবং ডিজিএফআই ‘আয়নাঘর’-এর দায়িত্বে রয়েছে। ‘নেত্র নিউজ়’ আরও জানায়, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার কোনও ভবনেই এই গোপন কারাগারটি তৈরি করা হয়েছে।নেত্র নিউজ়’-এর এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার বিভাগের প্রধান মিশেল ব্যাশেলেটের বাংলাদেশ সফরের প্রাক্কালে। মিশেল ঢাকায় এসে এই সব আচমকা নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেন এবং প্রত্যাবর্তনের আগে ঢাকায় আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই সব নিরুদ্দেশ সম্পর্কিত খবরে সিলমোহর দেন। সেই সঙ্গে তিনি আইন-বহির্ভূত হত্যা ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের ব্যাপারে নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি করেনহিউম্যান রাইটস ওয়াচ’ নামের এক আন্তর্জাতিক স্তরে মানবাধিকার নিয়ে কর্মরত অসরকারি প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র মীনাক্ষী গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, বাংলাদেশ সরকারই এই ব্যক্তিদের নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার জন্য দায়ী। পাশাপাশি, মিশেলের দাবির সমর্থনে নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিজনকে নিয়ে গঠিত মঞ্চ ‘মায়ের ডাক’ এক মিছিলের আয়োজন করে। মঞ্চের আহ্বায়ক সানজিদা ইসলাম ডিজিএফআই-এর বিরুদ্ধে কোনও গোপন বন্দিশালা পরিচালনার ব্যাপারে অভিযোগ তোলেন। সানজিদার অভিযোগ ‘আয়নাঘর’-এর দিকেই ইঙ্গিত করেছিলশেখ মোহাম্মদ সেলিম নামে এক প্রাক্তন সামরিক অফিসারকে ফোন করে ডেকে এনে ‘আয়নাঘর’-এ আটক করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর দাবি, তাঁকে ওই বন্দিশালায় বহু বছর আটক রাখা হয়। ‘নেত্র নিউজ়’ সেলিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানায়, সেই কারাগারের কক্ষগুলিতে কোনও জানলা ছিল না। অনেক উঁচুতে একটি ছোট বাল্‌ব থেকে সামান্য আলো পাওয়া যেত। কোথাও বিশালাকার এগ্‌জ়স্ট পাখা সারা দিন চলত, যার আওয়াজে বাইরের কোনও শব্দই কারাকক্ষে পৌঁছত না। তিনি মাঝেমাঝে কম্পন অনুভব করতেন, যা থেকে তাঁর ধারণা, কাছাকাছি কোথাও বিমানবন্দর বা বিমানঘাঁটি রয়েছেসেলিম ‘নেত্র নিউজ়’কে জানিয়েছিলেন, ঠিক কত জন মানুষ সেখানে বন্দি ছিলেন, তা তাঁর অনুমানের বাইরে ছিল। প্রায়শই তাঁকে মারধর করা হত এবং তাঁর উপর অন্য শারীরিক নির্যাতনও চলত। এক দিন প্রবল ভাবে তাঁকে মারা হয় এবং তাঁকে অন্য ঘরে ফেলে আসা হয়। পরে জানা যায়, সেলিমকে তুলে আনা ডিজিএফআই-এর উদ্দেশ্য ছিল না। ভুল করেই তাঁকে তারা তুলে আনে। পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এর পর সেলিম মালয়েশিয়া চলে যান।৭ অগস্ট ইউনাইটেড পিপল্‌স ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্টের নেতা মাইকেল চাকমা 'আয়নাঘর থেকে মুক্তি পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। মাইকেল ২০১৯-এর এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তাঁর আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া তাঁর সন্ধান পাওয়ার জন্য আদালতে একটি হেবিয়াস কর্মাস পিটিশন দাখিল করেছিলেন। তিনি মাইকেলের বাড়ি ফেরার খবরটি যে সত্য, তা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।এক সামরিক অফিসার ‘নেত্র নিউজ়’কে জানিয়েছিলেন, ‘আয়নাঘর’-এ ৩০টির মতো কক্ষ ছিল। সেলিম ‘ভয়েস অফ আমেরিকা’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, যদিও সব ক’টি কক্ষই শব্দনিরোধক ছিল, তবু প্রায়শই সেই সব ঘর থেকে ক্ষীণ আর্ত চিৎকার ভেসে আসত। মাঝেমাঝে কোনও ব্যক্তিকে ‘আয়নাঘর’ থেকে মুক্তি দেওয়া হলেও পরে তাঁরা এ ব্যাপারে নীরবতাই পালন করতেন। আবার ধরপাকড়ের ভয় তাঁদের তাড়া করে বেড়াত।সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে ‘আয়নাঘর’ নিয়ে কথাবার্তা প্রকাশ্যে আসছে। বহু নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবারই আশা করছে, তাঁরা ফিরে আসবেন। ৭ অগস্ট ডিজিএফআই সংবাদমাধ্যমকে জানায় যে, এই মুহূর্তে আর কোনও ব্যক্তি আটক নেই। ২০১১ সালে আতাউর রহমান নামে মাদারিপুরের এক ব্যক্তি নিখোঁজ হয়ে যান। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ‘ডেলি স্টার’কে তাঁর স্ত্রী নাদিরা সুলতানা জানান যে, তিনি তাঁর স্বামীকে ফিরিয়ে আনতে ঢাকা রওনা দিচ্ছেন। নাদিরার মতো বহু মানুষই এখন নিখোঁজ পরিজনের ফিরে আসার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। তবে, তাঁরা সকলেই জীবিত রয়েছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply