Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে নিরবে দাঁড়িয়ে আছে দেড় সহস্রাধিক শতবর্ষী গাছ  মেহেরপুর-মুজিবনগর এবং মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা প্রধান সড়কে




মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে নিরবে দাঁড়িয়ে আছে দেড় সহস্রাধিক শতবর্ষী গাছ  মেহেরপুর-মুজিবনগর এবং মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা প্রধান সড়কে, প্রয়োজন নেই তবুও কাটা হবে প্রায় দেড় সহস্রাধিক গান গাছ। লাল রঙের অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু পরোয়ানার চিহ্ন শরীরে ধারণ করে নিরবে দাঁড়িয়ে আছে গাছগুলো। গুনছে মৃত্যুর প্রহর। এই দৃশ্য মেহেরপুর-মুজিবনগর এবং মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা প্রধান সড়কের। মেহেরপুরের বন বিভাগ, সড়ক ও জনপদ বিভাগ এবং জেলা পরিষদ এই গাছ গুলো কাটার দ্বায় একে অন্যের ঘাড়ে চাপাচ্ছে। জেলা পরিষদ, বন বিভাগ এবং সড়ক ও জনপদের একাধিক সূত্রের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গাছগুলি প্রকৃত মালিক জেলা পরিষদ মেহেরপুর। বন বিভাগের সহায়তায় সড়ক দুটির পাশে গাছগুলো লাগিয়েছিলো জেলা পরিষদ। সড়ক প্রশস্ত করণের জন্য গাছ কাটতে ইতোপূর্বে  জেলা পরিষদকে চিঠি দিয়েছিলো সড়ক ও জনপদ বিভাগ। গাছ কাটার অনুমতির জন্য জেলা প্রশাসক ও খুলনার বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে প্রাথমিক একটি সমীক্ষা তৈরি করে জমা দিয়েছে জেলা পরিষদ। অনুমোদন পেলে গাছ কাটার দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শুরু হবে। তবে সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলছে মেহেরপুর মুজিবনগর সড়কে গাছ কাটার জন্য দেড় বছর আগে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেখানে সড়কের উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। এখন নতুন করে গাছ কাটলে সড়কে আবার খানাখন্দের সৃষ্টি সহ নানা জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হবে। এছাড়াও মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের শুধুমাত্র মেয়েরপুর থেকে আমঝুপি পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার রাস্তা চার লেনে উন্নীত করা হবে। কিন্তু গাছ কাটার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে মেহেরপুর থেকে দরবেশপুর পর্যন্ত সীমান্ত জুড়ে, যেটা সম্পূর্ণভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত। আর বন বিভাগ বলছে তাদের দায়িত্ব শুধু গাছ গণনা ও মূল্য নির্ধারণ। রাস্তা সড়ক বিভাগের আর গাছের মালিকানা জেলা পরিষদের।  শনিবার (৬ জুলাই) উল্লেখিত সড়ক দুটিতে যেয়ে দেখা গেছে, বট, পাকুড়, কড়ই, রেইনট্রি, মেহগনি, শিশু,কাঁঠাল, আম, জাম সহ নানা প্রজাতির গাছ। সব গাছেই লাল রং ব্যবহার করে করা হয়েছে নাম্বারিং। গাছে লাল রং অর্থই হচ্ছে গাছের মৃত্যু পরোয়ানা। দেখা যায় কিছু গাছ সড়কের একটু উপরে, আবার বেশির ভাগ গাছই রয়েছে সড়কের বাইরে। অদ্ভুতভাবে প্রায় সবগুলো গাছেই নাম্বারিং করা হয়েছে। এসব গাছ কেটে ফেলার উদ্যোগ নেওয়াতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন মেহেরপুরের সাধারণ মানুষ। তাদের মতে যদি ফের দেড় হাজার শতবর্ষি পুরানো গাছ কেটে ফেলা হয় তাহলে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে পরিবেশের উপর।   মেহেরপুর পৌর এলাকায় বসবাসকারী হুজাইফা ডিক্লেয়ার কালবেলাকে বলেন, 'গত বছর মেহেরপুর কুষ্টিয়া সড়কের তিন সহস্রাধিক শতবর্ষী গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। সড়ক দুই লেন থেকে চার লেনে প্রশস্তকরনের জন্য। দেখা গেছে গত বছর যে সকল গাছ কাটা হয়েছে ওইসব এলাকা এখন মরুভূমেিতের পরিণত হয়েছে। তার উপরে এবছর তীব্র তাপদাহে মানুষ ও প্রাণিকুলের জীবন ওষ্ঠাগত হবার উপক্রম হয়েছে। বড় বড় গাছ কেটে উজার করার কারণে চলতি বছরে তাপদাহ বেশি অনুভূত হয়েছে।  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড.সাবরিনা নাজ কালবেলাকে বলেন, 'গাছ, পাহাড় ও নদী হলো জীব বৈচিত্র এবং পরিবেশের প্রাণ। সেই গাছ নিধন করলে বিপাকে পড়ে পরিবেশ। যার প্রভাব পড়ে  প্রকৃতির পাশাপাশি মানুষ ও প্রাণীকুলের উপরেও। গাছ হচ্ছে পাখিদের আবাসস্থল, এর নিচে পথচারী ও পশু পাখি বিশ্রাম নেয়। নীচে পথচারী ও শ্রমিকরা কাজের মাঝে বিশ্রাম নেয়। বিভিন্ন পশু পাখির খাদ্যের উৎসও হচ্ছে গাছ। এছাড়াও প্রাকৃতিকভাবে অক্সিজেন উৎপাদনের বিষয়টিও চিন্তা করতে হবে। জীব ও পরিবেশ বৈচিত্র্য রক্ষার্থে অপ্রয়োজনীয় ও অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বৃক্ষ নিধনের সংস্কৃতি থেকে আমাদের বেরিয়ে আসা জরুরী।' মেহেরপুর জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস টি হামিম হায়দার বলেন, বন বিভাগ শুধু গাছ গণনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করে থাকে। গাছগুলো জেলা পরিষদের। সড়ক সওজের। তারা গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নিলে শুধুমাত্র গাছের মূল্য নির্ধারণ করার দায়িত্ব পড়ে বন বিভাগের ওপর। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুস সালাম কালবেলাকে বলেন, 'আমি একজন পরিবেশবাদী ও বৃক্ষপ্রেমী ব্যক্তি। গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা আমার জন্য কষ্টকর। সওজ সড়ক সম্প্রসারণের প্রকল্প নেওয়াতে গাছ কেটে তাদের সহযোগিতা করতে হবে। তবে গাছে নাম্বারিং করা হলেও মোট কতগুলো গাছ কাটা হবে সেটা এখনই চূড়ান্ত নয়।' সওজ মেহেরপুরের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান কালবেলাকে বলেন, 'সরকরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেহেরপুর চুয়াডাঙ্গা সড়ক প্রশস্ত ও চার লেন করার প্রক্রিয়া চলছে। এতে জেলা পরিষদের লাগানো কিছু গাছ কাটা পড়বে। তবে মেহেরপুর মুজিবনগর সড়কে গাছ রেখেই সড়কের উন্নয়ন কর্মকান্ড সমাপ্ত করা হয়েছে। সেখানে নতুন করে আর কোন গাছ কাটার প্রয়োজন নেই। এতে বরং সড়কের ক্ষতি হবে। এই সড়কের গাছ না কাটার জন্য শীঘ্রই সহজ এর পক্ষ থেকে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে চিঠি দেব।' মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ শামীম হাসান কালবেলাকে বলেন, 'পরিবেশ সুরক্ষায় গাছ যেমন খুবই গুরুত্বপূর্ণ তেমন ভাবেই রাষ্ট্র ও এলাকার উন্নয়নে উন্নত যোগাযোগ ব্যাবস্থাও খুব জরুরী। সড়ক নিমার্ণ করার পরেও সড়ক ও জনপথের আরো যায়গা থাকবে। সেখানে পূণরায় নতুন করে কিভাবে গাছ রোপন করা যায় সে বিষয়ে বনবিভাগকে উদ্যোগি হতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।'






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply