মুনশী জমিরুদ্দীন ও চার্চের চোখে আলোক লাভ
মুন্সি সেখ জমিরুদ্দীন বাংলার একজন লেখক ও ইসলাম প্রচারক ছিলেন। জীবনী শেখ জমিরুদ্দীন আঠারো শত সত্তর সালে মেহেরপুরের গাংনীর গাঁড়াডোব গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মেহেরপুর আমঝুঁপি খ্রিষ্টান স্কুল ও কৃষ্ণনগর নর্মাল স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। জন জমিরুদ্দীন আঠারো শত একানব্বই সালে এলাহাবাদ সেন্ট পলস ডিভিনিটি কলেজ থেকে ধর্মতত্ত্বে স্নাতক হন পরবর্তীতে, তিনি কলকাতার ডিভিনিটি কলেজে ভর্তি হন। তিনি সেখানে খ্রিষ্টধর্মতত্ত্ব, সংস্কৃত, আরবি, গ্রিক এবং হিব্রু সাহিত্য ও ব্যাকরণ নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। তিনি বাংলা, ইংরেজি, উর্দু, ফার্সি ও লাতিন ভাষা জানতেন। শেখ জমিরুদ্দীন উনিশ শত সাইত্রিশ সালের ২ জুন মৃত্যুবরণ করেন।মৃত্যুর পরে তাকে গাঁড়াডোব গ্রামের পারিবারিক গোরস্তানে দাফন করা হয়েছিল - মুনশী শেখ জমিরুদ্দীনের শেকড়ে ছিল বাংলার পতিত গ্রামাঞ্চল। তখনকার নদীয়ার এক মহকুমা মেহেরপুর। যা এককালে সমৃদ্ধ ছিল বেশ। আলীবর্দী খাঁ মেহেরপুরের বাগোয়ান এলাকায় এসেছিলেন শিকারে। ফেরার পথে প্রাকৃতিক দুর্যোগ আসে, তিনি এক গোয়ালা নারীর আতিথ্য গ্রহণ করেন। নারীর নাম ছিল রাজু ঘোষাণী। আলীবর্দী তার পুত্রকে দেন রাজা উপাধি। রাজা গোয়ালা চৌধুরী ক্রমেই হন মস্ত প্রভাবশালী। আলীবর্দীর সহায়তায় গোয়ালা চৌধুরীর সময়ে মেহেরপুর লাভ করে ব্যাপক উন্নতি। কিন্তু মারাঠা বর্গীদের আক্রমণ সবকিছু উজাড় করতে থাকে। তাদের লুণ্ঠনে, অগ্নিসংযোগে, গণহত্যায় গোটা অঞ্চল পর্যুদস্ত ছিল। এই পর্যুদস্ত এলাকাগুলোর অন্যতম ছিল গাংনী। মুনশীর জন্ম সেই গাংনী থানার বাহাদুরপুর গ্রামে। ষোড়শ শতকে বাহাদুর শাহ নামে এক দরবেশ এসে স্থায়ী হন এখানে। তিনি ছিলেন সব ধর্মের সব শ্রেণীর মানুষের আশ্রয়। তারই সময়ের আরেক দরবেশ ছিলেন মেহের আলী শাহ। কিংবদন্তি হচ্ছে, তার নামেই নামকরণ হয় মেহেরপুর অঞ্চলের। আর বাহাদুর শাহের নামে নদীয়ার কয়েকটি এলাকার নাম হয় বাহাদুরপুর। শেখ জমিরুদ্দীনের জন্ম ১৮৭০ সালে। ব্রিটিশ শোষণে, ত্রাসনে মুসলিম বাংলা তখন চরম ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। গ্রামগুলো আরো বিপন্ন। ব্রিটিশদের দমন-পীড়ন দারিদ্র্য, অশিক্ষা, ক্ষুধা, জমিদার বাবুদের অত্যাচার, কুসংস্কার ইত্যাদি মুসলিম জীবনের নিত্যকার বাস্তবতা। পীরবাদের প্রবর্তনায় লৌকিক ইসলাম শাস্ত্রীয় ইসলামের বদলে সমাজে বদ্ধমূল। হিন্দু সংস্কৃতি ও প্রথা তাদের জীবনে নানাভাবে ছিল প্রতিষ্ঠিত। মন্তব্য করেন, তখনকার মুসলমানরা ছিল রাখালবিহীন মেষপালের মতো। নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে বহু দূরে হিন্দু ধর্মীয় বহু কুসংস্কারে ছিল আচ্ছন্ন। খ্রিষ্টধর্মের প্রচারকরা আসছিল ইউরোপ থেকে। তাদের কর্মসূচি ছিল ব্যাপক ও বিস্তর। গ্রামেগঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছিল তাদের ধর্মান্তকরণ প্রয়াস। স্থানীয়দের ধর্ম, বিশ্বাস ও মূল্যবোধ আক্রান্ত হচ্ছিল নানাভাবে। এ আক্রমণের প্রধান শিকার ছিল মুসলিম সমাজ। যারা ইতোমধ্যে হারিয়েছে জমিদারি, উৎখাত হয়েছে লাখেরাজ সম্পত্তি থেকে, পিছিয়ে পড়েছে আধুনিক শিক্ষায়, সরকারি চাকরি থেকে হয়েছে বঞ্চিত, যাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ছিল চরমভাবে বিধ্বস্ত, এরকম একটি সমাজের মাথায় চাপলো ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের মূল দায়, রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন বাড়ল বিপুল মাত্রায়, এরই মধ্যে ধর্মীয় এ আক্রমণ তাদের জন্য ছিল সত্যিই বিপজ্জনক। মেহেরপুর যেন ছিল এ বিপদের থাবায় আহত, রক্তাক্ত, ভয়ার্ত হরিণের মতো কাতরানো বাংলার এক প্রতীক। এরই মধ্যে বাহাদুরপুরে ইসলামী শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে বুকে আগলে লড়াকু জীবন কাটাচ্ছিলেন জমিরুদ্দীনের বাপ-দাদা। তার পিতা শেখ আমীরুদ্দীন, পিতামহ শেখ বাকিরুদ্দীন গভীর ধর্মানুরাগী ও আল্লাহ ভীরু ছিলেন। কৃষি ও পুস্তক ব্যবসার মাধ্যমে লড়াই করে ধরে রেখেছিলেন নিজেদের সম্পন্ন অবস্থা। গ্রামের মক্তবে প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়ার শুরু। অল্প দিনেই জমিরুদ্দীন প্রমাণ করেন, তিনি আলাদা কেউ। কুরআন মাজিদের পাশাপাশি কিছুটা আরবি-ফার্সিও শেখা হয় মক্তবে। বাংলা-ইংরেজি শেখার শুরু বঙ্গবিদ্যালয়ে, তারপর আমঝুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মেহেরপুর উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে। যখন কৃষ্ণনগর নর্মাল স্কুলে পড়ালেখা করছেন, তখন তার মেধার খ্যাতি অনেক দূর ছড়িয়ে গেছে। বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি, ফার্সি ও উর্দু রপ্ত করতে তিনি ব্যস্ত। পাঠ্যপুস্তকে বন্দী থাকতে চাইতেন না। দুনিয়ার বিভিন্ন সাহিত্যিকের রচনা পড়তেন মন লাগিয়ে। ধর্ম নিয়ে আগ্রহী ছিলেন সমানভাবে। সব বিষয়ে জানার জন্য উদগ্রীব একটি মন তাকে নিয়ে যায় খ্রিষ্টানদের বড়দিনের উৎসবে। সাথে ছিল বন্ধুদের আমন্ত্রণ। সেখানে সুসজ্জিত গির্জা, লোকসমাগম, মেলাবাজার, নানা আয়োজন তার ভালো লাগে। তাকে স্বাগত জানান এক মিশনারি প্রচারক। উভয়ের আলাপ হয়। জমিরুদ্দীনের আগ্রহকে উসকে দেন তিনি। বারবার গির্জায় যেতে থাকেন জমির। গ্রন্থ পড়তে দেয়া হতো, তিনি পড়তেন। ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে সমালোচনা থাকত, কটাক্ষ থাকত। জবধংড়হং ভড়ৎ হড়ঃ নবরহম গঁংংধষসধহ কিংবা গঁযধসসবফধহ ঈবৎবসড়হরবং এর মতো হিংসাশ্রয়ী গ্রন্থ জমিরের কিশোর মনকে ইসলামের প্রতি সন্ধিহান করে তোলে। চৎড়ঢ়যবঃ’ং ঞবংঃরসড়হু ঙভ ঈযৎরংঃ এর মতো বই দিয়ে বোঝানো হয় খ্রিষ্টান না হওয়া অবধি পরিত্রাণ পাওয়া যাবে না। গাঁড়াডোব অঞ্চলের অনেকেই ইতোমধ্যে খ্রিষ্টান হয়ে গেছে। তাদের অভাব ছিল প্রকট। মিশনারিরা এ অভাবকে কাজে লাগাত। ১৮৮৫ সাল থেকে কাজী আইনুদ্দীন ও মুনশী নাসিরুদ্দীনের মতো কেউ কেউ এ এলাকায় খ্রিষ্টধর্ম প্রচার করতে থাকে। তারা অনেক প্রশিক্ষিত হয়েই কাজের ময়দানে আসে। পাদ্রি লকেট সাহেব মুনশী মফিজদ্দীন ও সুফি মধু মিয়াকেও এই দলে ভেড়ান। মফিজদ্দীন নদীয়ার শিকারপুরে অবস্থিত শান্তিরাজপুর মিশনের প্রচারক ছিলেন। এটি ছিল গোটা নদীয়ার অন্যতম মিশন। সুফি মধু মিয়া ছিলেন স্কুলের শিক্ষক। তারও তৈরি হয়েছিল প্রতিপত্তি। জমিরুদ্দীনের প্রভাবিত হওয়াটা ছিল স্বাভাবিক। চাপড়া গির্জার পাদ্রি সালিভান তাকে অনবরত উদ্বুদ্ধ করছিলেন। আঠারো শত সাতাশি সালে তিনি খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেন। খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণের পর তিনি নিজের নাম পরিবর্তন করেন জন জমিরুদ্দীন রাখেন। তার অন্তর তখনো দ্বন্দ্বমুখর। সত্যের অনুসন্ধান তাকে অস্থির করে রেখেছিল। গির্জা যেসব সংশয় তার মধ্যে ঢুকিয়ে দিত, ইসলামের হয়ে তা নিরসন করবেন, এমন কাউকে কাছে পাচ্ছিলেন না জমির। আত্মজীবনীতে তিনি লিখেন, ‘এই সময়ে যদি আমি ‘রদ্দে খ্রিষ্টিয়ান’ পুস্তক ও শ্রীযুক্ত মুনশী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ সদৃশ প্রচারক পাইতাম, তাহা হইলে নিশ্চয়ই খ্রিষ্টান হইতাম না।’ ‘আমার জীবনী ও ইসলাম গ্রহণবৃত্তান্ত’ গ্রন্থে জমির লিখেন, ‘তখন যদি আমি বুঝিতে পারিতাম যে, বাইবেল বিকৃত হইয়াছে। দুষ্ট খ্রিষ্টিয়ানরা তাহার মধ্যে অনেক কথা যোগ ও বিয়োগ করিয়াছে। খ্রিষ্টিয়ান মিশনারি প্রচারকদিগের মধ্যে অনেক নাস্তিক, অবিশ্বাসী, মিথ্যাবাদী, প্রবঞ্চক, প্রতারক, ব্যভিচারী, জাত্যাভিমানী, কটুভাষী আছে, তাহা হইলে কখনো আমি খ্রিষ্ট ধর্মের আশ্রয় গ্রহণ করিতাম না।’ মিশনারিরা তাকে খ্রিষ্টবাদের প্রচারে নিযুক্ত করতে চায়। কিন্তু তিনি চাইলেন আরো পড়াশোনা করতে। পাদ্রি পার্শ্বনস সাহেব নিজ ব্যয়ে তাকে পাঠালেন কলকাতার সিএমএস হাইস্কুলে। সেখান থেকে ৬ মাস পরে যখন গ্রামে ফিরলেন, চারদিকে হুলস্থুল। মা-বাবা ও ভাই-বোনের হৃদয়বিদারক রোদন জমিরের চৈতন্যকে প্রহার করছিল। আটারো শত একানব্বই সালে আবারো ভর্তি হলেন কৃষ্ণনগর হাইস্কুলে, এর অধ্যক্ষ তখন পাদ্রি এ জে স্যান্টার। দুই বছর তার তত্ত্বাবধানে পড়াশোনা করে আঠারো শত একানব্বই সালের নভেম্বরে এলাহাবাদের সেন্টপলস ডিভিনিটি কলেজে যখন তিনি ভর্তি হন, তখন তার পৃষ্ঠপোষক রেভারেন্ড জানি আলী এমএ (ক্যাম্রিজ) ও রেভারেন্ড বাটলার! কলেজে ছিল বিশাল লাইব্রেরি, বিভিন্ন ভাষাভাষী অধ্যাপক ও শিক্ষার্থী। কলকাতা সিএমএস ক্যাথিড্রাল মিশন তাকে বিচিত্র বিষয়ে দক্ষ করতে ভূমিকা রাখত। ক্রমেই তিনি খ্রিষ্টধর্ম, এর ইতিহাস, আচার, সংস্কৃতি এবং বিবিধ চিন্তাধারায় হয়ে ওঠেন বিশেষ পারদর্শী। কলেজে তিনি ছিলেন সবচেয়ে মেধাবী। পরীক্ষায় বরাবরই অধিকার করতেন প্রথম স্থান। ১৮৯২ সালে ইধপযবষড়ৎ ড়ভ ঞযবড়ষড়মু কৃতিত্বের সঙ্গে উত্তীর্ণ হন প্রথম বিভাগে প্রথম হয়ে। লাভ করেন সম্মানজনক উপাধি পান। ভারতে তখন মিশনারি সোসাইটির তিনটি ডিভিনিটি কলেজ। কলকাতা, এলাহাবাদ ও লাহোরে। এ তিন কলেজে প্রধানত খ্রিষ্টান, হিন্দু আর মুসলিম থেকে নতুন খ্রিষ্টান হওয়া ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা ছিল। শিক্ষা লাভ শেষে ভারতের নানা জায়গায় তাদেরকে মিশনে পাঠানো হতো প্রচারক হিসেবে। এলাহাবাদ ও লাহোর ডিভিনিটি কলেজে ছাত্রদের ধর্মতত্ত্ব শেখানো হতো উর্দু ও হিন্দি ভাষায়। এর সাথে তাদেরকে শিখতে হতো আরবি, সংস্কৃত, হিন্দি ও গ্রিক ভাষা। কলকাতা ডিভিনিটি কলেজে ধর্মতত্ত্ব শেখানো হতো বাংলা ও ইরেজি ভাষায়। সাথে শিখতে হতো সংস্কৃত, আরবি ও গ্রিক। কলেজগুলোতে তাদের শেখানো হতো খ্রিষ্টধর্ম, হিন্দু ও ইসলাম ধর্ম। বিভিন্ন সভ্যতা ও সংস্কৃতি, মানববিজ্ঞান। তৈরি করা হতো এমন খ্রিষ্টান চোখ, যা দিয়ে এক শিক্ষার্থী দুনিয়াকে দেখবে, মানুষ ও তাদের জীবনকে দেখবে। এমনকি দেখবে ভাষা ও সাহিত্যকে। সে দক্ষ হবে এবং তার দক্ষতা বিস্তৃত হবে ভাষাতত্ত্বে, সাহিত্যে, ইতিহাসে, সংস্কৃতিতে, ধর্মতত্ত্বে, চিকিৎসায় ...। সবখানে সে কাজ করবে বিশেষ এক দৃষ্টি ও মন নিয়ে। এলাহাবাদ ডিভিনিটি কলেজে ছিল তিনটি শ্রেণী। প্রথম শ্রেণী রিডার, দ্বিতীয় শ্রেণী ক্যাটিকসস্ট আর তৃতীয় শ্রেণী নির্ধারিত ডিকা ও প্রিস্টের জন্য। জমিরুদ্দীন এখানে ভর্তি হন রিডার ক্লাসে। তিন বছর পড়াশোনা করে শেষ পরীক্ষা সম্পন্ন করেন। তার ক্লাসে তিনি ছিলেন একমাত্র বাঙালি। বাঙালি বলে সবাই তাকে ঘৃণা করত। কিন্তু মেধাবী হিসেবে সবার উপরে তিনি স্বীকৃতি আদায় করে নিতেন। তাদের ছাত্রাবাসে থাকতেন ভারতবিখ্যাত পাদ্রি পণ্ডিত নাইমির নীল কণ্ঠগোরে। জমিরকে তিনি স্বীকৃতির, প্রত্যাশার দৃষ্টিতে দেখতেন। পাদ্রি হ্যাকেট ফার্সি ভাষায় পড়াতেন তাওরাত। পাদ্রি জনস্টন পড়াতেন যবুর ও ইঞ্জিল। পাদ্রি জন ব্যাপ্টিস্ট উর্দু ভাষায় পড়াতেন চার্চের ইতিহাস ও প্রার্থনা পুস্তক। পাদ্রি মীর হাদি উর্দু ও আরবি ভাষায় পড়াতেন গঁযধসসধফবহ ঈড়হঃৎড়াবৎংু বা ইসলামী তর্কশাস্ত্র তথা ইলমে মানতিক ও কালাম। পাদ্রি সরষু প্রসাদ হিন্দি ও সংস্কৃত ভাষায় শেখাতেন হিন্দু ধর্ম ও সাহিত্য-সংস্কৃতি। জমির সেখানে বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষাও রপ্ত করে নেন। ব্যবহারিক শিক্ষায় ছাত্রদের প্রশিক্ষিত করা হতো। বক্তৃতা ও বিতর্ক শেখানো হতো। প্রতি শনিবারে হাটবাজারে নেয়া হতো। যেন তারা জনগণের মুখোমুখি হয়ে তাদেরকে বোঝাবার দক্ষতা লাভ করে। শিক্ষাপ্রণালীর পরীক্ষা করা হতো বিভিন্ন ধরনের মানুষের সাথে তর্ক ও আলাপচারিতার অনুশীলন করিয়ে। কলেজের ২৮ জন সিনিয়র ছাত্রসহ পাদ্রি হ্যাকেটের নেতৃত্বে এলাহাবাদের উত্তরে ৩৬ মাইল দূরে প্রতাপগড়ে যাওয়ার বিবরণ দিয়েছেন জমির। বার্না নদীর তীরে অবস্থিত প্রতাপগড় তখন অযোধ্যার প্রধান নগর। সেখানে হিন্দুর তুলনায় মুসলমানই ছিলেন বেশি। সকাল বেলায় সেখানে উর্দু ভাষায় তারা ভজনাগান করলেন। মুহূর্তেই শত শত হিন্দু মুসলমান জড়ো হয়ে গেলেন। তারপর শুরু হলো খ্রিষ্টবাদের প্রচারমূলক বক্তৃতা। মিশনারিরা তাকে শুধু একজন প্রাজ্ঞ পণ্ডিত নয়, ভাষাবিদ হিসেবেও আবিষ্কার করলেন। এবার তারা তাকে চাইলেন প্রচারকাজে পুরোপুরি। কিন্তু জমিরের আরো প্রয়োজন জ্ঞান ও সমৃদ্ধি। চলে এলেন কলকাতার ডিভিনিটি কলেজে। খ্রিষ্টধর্মতত্ত্ব, বাংলা, সংস্কৃত, আরবি, ফার্সি, উর্দু, ল্যাটিন, গ্রিক ও হিব্রু সাহিত্য ও ব্যাকরণ অধ্যয়ন করেন। ইংরেজি ভাষাজ্ঞানে লাভ করলেন বিশেষ পাণ্ডিত্য। অনেক প্রবন্ধ লিখেন ইংরেজিতে। করেন অনুবাদও। বাংলায় লেখালেখিতে নিজেকে করেন শানিত। ইসলামকে নিবিড়ভাবে অধ্যয়ন করেন। কিন্তু যা অধ্যয়ন করেন, তার মধ্যে ইসলাম ছিল না, ছিল খ্রিষ্টবাদের সাজানো বয়ান। তিনি ভাবলেন, এই ইসলাম থেকে মুসলিমদের উদ্ধার করে খ্রিষ্টান বানাতে হবে! শেখ জমিরুদ্দীন অতঃপর পাদ্রি রেভারেন্ড জন জমিরুদ্দীন হয়ে এলাহাবাদ মিশনে এমন লোকদের খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত করার জন্য নিয়োজিত হলেন, যাদের ধর্ম ও বিশ্বাসের উপর তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। যা ছিল তার শেকড় ও আত্মপরিচয়। একে বিস্মৃত হয়ে এর উচ্ছেদে যখন তিনি সক্রিয় হলেন, ক্যাথিড্রাল মিশনের পাদ্রি হাসিমুখে হয়তো বলছিলেন, এই ন্যাটিভ সন্তানের আলোক লাভ সম্পন্ন হলো!Slider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Home
»
Featured
» বাংলার বিখ্যাত ইসলাম প্রচারক ছিলেন মেহেরপুরের গাঁড়াডোব গ্রামের মুন্সি শেখ জমিরুদ্দীন
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: