Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » মেহেরপুর বড়বাজার হালদারপাড়া অবস্থিত অস্তিত্ব হারাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বলরাম হাড়ি মন্দির




ব্রিটিশ শাসনামলে অবিভক্ত বাংলার নদীয়া জেলার অংশ ছিল মেহেরপুর। যার পুরোটাই ইতিহাস আর ঐতিহ্যে পরিপূর্ণ। এখানে বিচরণ ছিল বিভিন্ন সুফিসাধক, আধ্যাত্মিক সাধক আর দরবেশের। আছে বহু পুরোনো স্থাপনা, যা কালের সাক্ষী হয়ে কয়েক শতাব্দী ধরে দাঁড়িয়ে আছে সেখানে। তেমনই ১৭৮৫ সালে মেহেরপুরে জন্ম নেন বলরাম হাড়ি নামের এক আধ্যাত্মিক সাধক। তাকে ঘিরে গড়ে ওঠে মন্দির, তৈরি হয় ভক্ত অনুরাগী। তিনি ‘উপাসথ’ নামে একটি ধর্মমত প্রতিষ্ঠা করেন। যার অনুসারীরা বলরামী সম্প্রদায় নামে পরিচিত। ১৮৫০ সালে ৬৫ বছর বয়সে বলরাম হাড়ি মৃত্যুবরণ করলে জীবন মুখার্জী নামক স্থানীয় এক জমিদার এ মহান সাধকের স্মৃতি রক্ষার্থে ৩৫ শতাংশ জমি দান করেন। দানকৃত জমির ওপর নির্মাণ করা হয় বলরাম হাড়ির সমাধি মন্দির। কিন্তু কালের বিবর্তনে জমির বেদখলে মন্দিরটি অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। বলরাম হাড়ির কিছু অনুসারীসহ স্থানীয় কয়েকজন মন্দিরের জায়গা দখল নিয়ে ঘরবাড়ি তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। দখলের বিষয় নিয়ে দখলকারীরা কোনো কথা বলতে রাজি নন। তবে বলরাম হাড়ির দশজন অনুসারী বলছেন, সরকারি আশ্রয়ণের ঘর পেলে দখলকৃত জায়গা ছেড়ে দেবেন। জানা গেছে, ১৮ শতকের শেষের দিকে বা ১৯ শতকের গোড়ার দিকে সাধক বলরাম হাড়ি প্রবর্তিত ‘উপাস’ লোকধর্মের উদ্ভব ও বিকাশ হয়। বাউলদের মতো বলরামীরাও বংশানুক্রমিক নন। দীক্ষা নিয়েই এ ধর্মে অনুসারীরা অন্তর্ভুক্ত হন। বলরাম হাড়িকে তার ভক্তরা বলতেন হাড়িরাম। মেহেরপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, দিনাজপুর ও রংপুর এবং পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া, বীরভূম, বর্ধমান ও কলকাতা অঞ্চলে এ ধর্ম বিশেষ জনপ্রিয়তা লাভ করে। প্রতিবছর বারুনী তিথিতে এ মন্দির প্রাঙ্গণে বলরামী সম্প্রদায়ের উৎসব হয় ও মেলা বসে। একসময় এ অঞ্চলে বলরাম হাড়ির ভাবাদর্শের প্রচুর অনুসারী থাকলেও বর্তমানে তাদের সংখ্যা কমে গেছে। এখনো মেহেরপুরে বলরাম হাড়ির প্রায় দুই হাজারেরও অধিক অনুসারী রয়েছেন। তাদের মতে বৈষ্ণবরা যেমন শ্রী চৈতন্যকে কৃষ্ণের অবতার মনে করেন, তেমনি বলরামের ভক্তরা তাকে রামের অবতার বলে মনে করেন। বলরাম হাড়ির অনুসারী মেহেরপুর বড়বাজারের মৎস্য ব্যবসায়ী সুশান্ত হালদার কালবেলাকে বলেন, আমার জন্মের পর থেকেই আমি দেখেছি দুই বিঘার বেশি জায়গার ওপর আমরা বললাম হাড়ির অনুসারীরা দোল পূর্ণিমার অনুষ্ঠান করতাম। কিন্তু দিনদিন আমাদের মন্দিরের জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো ফল পাওয়া যায়নি। আমাদের প্রাণের দাবি অতি দ্রুত বেদখল হওয়া হওয়া জমি পুনরুদ্ধার করে মন্দিরকে যেন বুঝিয়ে দেওয়া হয়। হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট মেহেরপুরের প্রকল্প পরিচালক জয়ন্ত কুমার সাহা বলেন, মন্দিরটি দেখভালের দায়িত্ব আমাদের না। সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ২০২১ সালে ১৪ লাখ ২৪ হাজার ৭৬৭ টাকা ব্যয়ে বলরাম হাড়ির মন্দিরটি সংস্কার ও সংরক্ষনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা নির্দেশনা পেয়ে নির্মাণের বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেছি। মন্দিরের কতটুকু জমি ছিল এবং কতটুকু দখল হয়ে গেছে এ বিষয়ে কোনো কিছুই আমাদের জানা নাই। মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নজিব হাসান কালবেলাকে বলেন, সম্প্রতি এখানে আমার নিয়োগ হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। আপনার কাছ থেকে জানলাম। আমি খোঁজখবর নিব। খোঁজ নিয়ে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply