গাজায় গণহত্যা ত্রাণের জন্য অপেক্ষারতদের ওপর গুলি, নিহত ৭৭
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণ সহায়তার জন্য অপেক্ষারতদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে ইসরাইলি সেনারা। এতে অন্তত ৭৭ জন নিরীহ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২৫০ জন। এর মধ্যদিয়ে গাজায় মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) গাজা শহরের কাছে খাদ্যবাহী ট্রাকের জন্য অপেক্ষা করছিলেন কয়েকশ’ মানুষ। এ সময় তাদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়। এই ঘটনাকে ইসরাইলের ‘গণহত্যামূলক যুদ্ধ’র অংশ বলে অভিহিত করেছে ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, নিহতদের মধ্যে ২০টি লাশ কামাল আদওয়ান হাসপাতালে আনা হয়। বাকি ৫৭টি লাশ নেয়া হয় আল শিফা হাসপাতালে।
ইসরাইলকে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের সুযোগ করে দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের জো বাইডেন প্রশাসনকে কাঠগড়ায় দাড় করিয়েছে গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস।
মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ফিলিস্তিনের বেসামরিক মানুষদের হত্যার জন্য মার্কিন প্রশাসন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, ইসরাইলের দখলদারিত্ব এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো দায়ী।
আরও পড়ুন: রমজানে আল-আকসা অভিমুখে পদযাত্রার ডাক হামাসের
বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) ছিল গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের ১৪৬তম দিন। আগের দিনগুলোর মতো এদিনও রাত থেকেই গাজাজুড়ে বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণ করেছে ইসরাইলি বাহিনী। এতে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। যার মোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৩৫ জনে।
বছরের পর বছর ধরে নজিরবিহীন নির্যাতন ও নিপীড়নের জবাবে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস।
এতে ১ হাজার ২০০ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছেন বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি সেনারা। হামলায় নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু।
দীর্ঘ এ সময় ধরে চলা সংঘাতের কারণে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা। এছাড়া খাবার, পানি, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার অভাবে উপত্যকাটির ২৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দা চরম ক্ষুধা ও ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছেন।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের ইচ্ছাকৃতভাবে অনাহারে রাখছে ইসরাইল: জাতিসংঘ
এখন পর্যন্ত গাজায় অপুষ্টিতে ৬ শিশু মারা গেছে। এছাড়া আরও অনেক শিশুর অবস্থা গুরুতর। অন্যদিকে ইসরাইলি হামলায় গাজায় বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৮৫ শতাংশেরও বেশি ফিলিস্তিনি। আর ৭০ শতাংশেরও বেশি বাড়িঘর গুড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইলি সেনারা।
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে কয়েক দফায় বৈঠক করেছে মিশর, কাতার, ইসরাইল, যুক্তরাষ্ট্র ও হামাসের প্রতিনিধিরা। মধ্যস্থতাকারীরা বলছে, কয়েকদিনের মধ্যেই হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে।
No comments: