Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » ভারতের কৃষকরা কেন রাজপথে




পাঞ্জাব ও হরিয়ানার রাস্তাজুড়ে শত শত ট্র্যাক্টর ও ট্রাক। তার ওপর কয়েক মাসের জ্বালানি আর খাদ্য সামগ্রী। আটঘাঁট বেঁধেই রাজধানী নয়াদিল্লি অভিমুখে চলেছেন হাজার হাজার কৃষক। লক্ষ্য, ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত ও কৃষিঋণ মওকুফের মতো দীর্ঘদিনের দাবিগুলো আদায়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে চাপ দেয়া। গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ‘দিল্লি চলো’ নামে মিছিল নিয়ে দিল্লি অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেন কৃষকরা। ছবি: সংগৃহীত এদিকে কৃষকরা যাতে নয়াদিল্লি ঢুকতে না পারেন তার সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কয়েক স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করে রাজধানীকে রীতিমতো দুর্গে পরিণত করা হয়েছে। রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথ কাঁটাতারের বেড়া, কংক্রিটের ব্যারিকেড দিয়ে আর পেরেক পুঁতে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নয়াদিল্লির উপকণ্ঠে মোতায়েন করা হয়েছে শত শত পুলিশ। আন্দোলন দমন করতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য সরকার দমন-পীড়নমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। হরিয়ানা সরকার দুটি বড় স্টেডিয়ামে অস্থায়ী কারাগার তৈরি করেছে। কৃষকেরা মিছিল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তাদের আটক করে সেখানে রাখা হবে। এছাড়া রাজধানীতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে কর্তৃপক্ষ। পুরো ব্যাপারটা এখন থেকে দুই বছর আগের কৃষকদের ১৬ মাসের দীর্ঘ আন্দোলনের কথাই স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু স্বাভাবিকভাবে অনেকেই জিজ্ঞাসা, তিন বছর পর আবারও কেন রাজপথে ভারতের কৃষকরা? আবারও কেন আন্দোলনে ভারতীয় কৃষকরা কৃষকরা কেন ফের রাজপথে তার জবাব খুঁজে পেতে আমাদের কয়েক বছর পেছনে ফিরে যেতে হবে। ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতির সময় তিনটি কৃষি আইন প্রণয়নে অধ্যাদেশ জারি করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে সংসদের খণ্ডকালীন অধিবেশনে প্রায় বিনা আলোচনায় বিরোধীদের দাবি উপেক্ষা করে আইন তিনটি পাস করা হয়। প্রথম আইনটি ছিল ‘অত্যাবশ্যক পণ্য (সংশোধনী) আইন’। ইংরেজিতে ‘দ্য এসেনশিয়াল কমোডিটিজ (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট’। দ্বিতীয়টি ‘কৃষি পণ্য লেনদেন ও বাণিজ্য উন্নয়ন আইন’ বা ‘ফারমার্স প্রডিউস ট্রেড অ্যান্ড কমার্স (প্রমোশন অ্যান্ড ফ্যাসিলিয়েশন) অ্যাক্ট’। আর তৃতীয়টি ‘কৃষক সুরক্ষা ও ক্ষমতায়ন (মূল্য এবং কৃষি পরিষেবাসংক্রান্ত) আইন’ বা ‘ফারমার্স (এমপাওয়ারমেন্ট অ্যান্ড প্রোটেকশন) অ্যাগ্রিমেন্ট অন প্রাইস অ্যান্ড ফার্ম সার্ভিসেস অ্যাক্ট’। বিজেপি সরকারের দাবি ছিল, মূলত তিনটি উদ্দেশ্য পূরণের জন্য কৃষি আইন তিনটি কার্যকর করা হচ্ছে। প্রথমত, কৃষিক্ষেত্রে ফড়িয়া বা দালালদের আধিপত্য কমিয়ে কৃষকের আয় বাড়ানো। আরও পড়ুন: কৃষক আন্দোলন / ভারতজুড়ে ধর্মঘট দ্বিতীয়ত, রাজ্যগুলোতে চুক্তিভিত্তিক চাষের ব্যবস্থা আইনসিদ্ধ করা এবং তৃতীয়ত, কৃষিপণ্য বিপণন নিয়ে যে আইন রয়েছে, তা দূর করে আন্তরাজ্য কৃষিপণ্যের অবাধ বাণিজ্যের রাস্তা খুলে দেয়া। অত্যাবশ্যক পণ্য (সংশোধনী) আইনের মাধ্যমে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সরাসরি কৃষকদের থেকে কৃষিপণ্য কিনে মজুত ও বিক্রির অধিকার দেয়া হয়। কিন্তু ওই তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দেয় কৃষক সংগঠনগুলো। সেই আন্দোলনে ব্যাপকভাবে সাড়া দেন সাধারণ কৃষকরা। তাতে সমর্থন দেন কংগ্রেসের মতো বিরোধী দলগুলোও। আন্দোলনকারী কৃষক ও বিরোধীরা বলেন, এই আইন আসলে সরকারি সহায়ক মূল্য তুলে দেয়ার গোড়াপত্তন। কৃষকের উৎপাদিত কৃষিপণ্য কেনার দায় সরকার নিজেদের ঘাড় থেকে ঝেড়ে ফেলতে চাইছে। আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়, বর্তমানে সরকার কৃষকদের যে পরিমাণ সহায়ক মূল্য দেয়, তা বেসরকারি সংস্থা বা কোনো ব্যবসায়ী দেবেন না। তাছাড়া সরকার চাল, ডাল, গম, ভোজ্যতেল, তৈলবীজ ইত্যাদি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য মজুতের ঊর্ধ্বসীমা বলে কিছু না রাখায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা ঘুরপথে চলে যাবে বড় ব্যবসায়ীদের হাতে। কৃষক সংগঠনগুলো আরও জানায়, মজুতদারির মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হবে। দেশের মানুষের স্বার্থ না দেখে কৃষিপণ্য রপ্তানি করা হবে। কৃষকেরা ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবেন না। বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো কৃষকদের বঞ্চিত করবে এবং বড় বাণিজ্যিক সংস্থা চুক্তির খেলাপ করলে কৃষকের পক্ষে আইনি মোকাবিলা কার্যত অসম্ভব হবে। আইন তিনটি বাতিলের দাবিতে করোনা মহামারীর মধ্যেও আন্দোলন চালিয়ে যান কৃষকরা। আন্দোলন-বিক্ষোভে ঘটেছে প্রাণহানির ঘটনাও। তবু রাজপথ ছাড়েননি কৃষকরা। আরও পড়ুন: দিল্লি প্রবেশে অনড় ভারতের কৃষকেরা, নিরাপত্তা জোরদার মূলত উত্তর ভারতের রাজ্যগুলোয় ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন হয়েছে। দিল্লির সীমানায় প্রায় এক বছর ধরে ধরনা পালন করেন কৃষকেরা। এর মধ্যে দফায় দফায় কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে কৃষক নেতাদের বৈঠক হয়েছে। তবে বিষয়টির সুরাহা হয়নি। এক পর্যায়ে বিতর্কিত কৃষি আইন তিনটি স্থগিত রাখতে নরেন্দ্র মোদির কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশনা দেয় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এরপর কৃষকদের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের কাছে শেষ পর্যন্ত মাথা নোয়াতে হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে আইন তিনটি বাতিলের ঘোষণা দেন তিনি। সে সময় আশ্বাস দেয়া হয়েছিল, ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপির আইনি গ্যারান্টির দাবিটি খতিয়ে দেখবে সরকার। যা এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। এছাড়া ওই আন্দোলনের সময় কৃষকদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ। যা গত দুই বছরেও তুলে নেয়া হয়নি। সেসব মামলা প্রত্যাহারের পাশাপাশি ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) আইনি নিশ্চয়তা, কৃষকদের জন্য পেনশন, শস্যবিমা ও সব কৃষি ঋণ মওকুফ করার দাবিতে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন কৃষকরা। ফসলের নূন্যতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি কি মিনিমাম সাপোর্ট প্রাইস বা এমএসপি হলো বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে সরকারি খরচে কৃষকদের কাছ থেকে ফসল ক্রয় করে মজুদ করা। এটাকে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি ও মুনাফার একটি নিশ্চয়তার চাবি বলা যায়। গত লোকসভা ভোটের আগে ২০১৮-১৯-এর বাজেটে মোতি সরকার ঘোষণা করেছিল, চাষের খরচের দেড়গুণ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বা এমএসপি ঘোষণা করা হবে। কৃষকরা যাতে সত্যিই চাষের খরচের দেড় গুণ এমএসপি পান, তা নিশ্চিত করতে সরকারই এমএসপির দরে সব ফসল কিনে নিতে পারে। সেই এমএসপির নিশ্চয়তার জন্যই রাজপথে নেমেছেন কৃষকরা। তাদের দাবি, যেকোনো ফসলের উৎপাদন খরচের চেয়ে অন্তত ৫০ শতাংশ বেশি এমএসপি নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া বিদ্যুৎ খাত বেসরকারিকরণের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন কৃষকরা। রাজ্য সরকারগুলো বর্তমানে কৃষকদের ভর্তুকি মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে, যা কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমাতে সাহায্য করছে। গত ২০২০-২০২১ সালের বিক্ষোভের সময় মারা যাওয়া কৃষকদের ক্ষতিপূরণও দাবি করছেন কৃষকরা। বর্তমান বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী সংগঠন অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভার সাধারণ সম্পাদক বিজু কৃষ্ণান জানিয়েছেন, ‘ওই আন্দোলনের সময় প্রায় ৭৫০ জন শহীদ হন।’ আরও পড়ুন: ভারতের আদালতে রায় / বিজেপির চালু করা নির্বাচনী বন্ড অবৈধ আরেকটি দাবি হলো মোদি সরকারের মন্ত্রিসভার একজন সদস্য তথা এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে বরখাস্ত করা যার ছেলের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের অক্টোবরে উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর খেরি জেলায় কৃষকদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল। এছাড়া আগের বিক্ষোভকালে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা বাস্তবায়ন চান বিক্ষোভকারী কৃষকরা। কৃষক নেতা বিজু কৃষ্ণান বলেছেন, বিতর্কিত তিনটি আইন প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলো পিছনের দরজা দিয়ে আবারও সেগুলো আনার চেষ্টা করছে। এমনকি সাম্প্রতিক বাজেটে কৃষকদের ফসল বাজারজাতকরণের বিষয়গুলো বেসরকারীকরণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। যেসব কৃষক সংগঠন আন্দোলনে অংশ নিয়েছে মূলত উত্তরপ্রদেশের নয়ডা ও গ্রেটার নয়ডার কৃষকেরা ক্ষতিপূরণ বৃদ্ধির দাবিতে গত ডিসেম্বর মাস থেকে একটানা আন্দোলন করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি কৃষকেরা কিষান মহাপঞ্চায়েতের ডাক দেন। এরপর গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ‘দিল্লি চলো’ কর্মসূচীর ডাক দেন উত্তর প্রদেশ, পাঞ্জাব ও হরিয়ানার বেশ কয়েকটি কৃষক সংগঠন। পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশের কৃষকদের দুটি বড় সংগঠন ‘সংযুক্ত কিষান মোর্চা’ এবং ‘কিষান মজদুর মোর্চা’ এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। এদের অধীন পাঞ্জাব, হরিয়ানা আর উত্তরপ্রদেশের সাড়ে তিনশ’টি ছোট-বড় কৃষক সংগঠন রয়েছে। কৃষক সংগঠনগুলো ছাড়াও উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশের বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। গতবারের আন্দোলনে ৩২টি সংগঠন যুক্ত ছিল। সেই অর্থে সেবারের আন্দোলনের চেয়ে এবারের আন্দোলন কয়েকগুণ বড়। তবে উত্তর ভারতের অন্যতম প্রধান কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েত এই আন্দোলনে যোগ দেননি। তবে সমর্থন জানিয়েছেন। তিনি ২০২০ সালের আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকায়েত জানিয়েছেন, তারা এই আন্দোলনের ওপর নজর রাখছেন। তার কথায়, আমরা নজর রাখছি। সরকার আর কৃষকদের মধ্যে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার কারণ সরকার একটা অনড় অবস্থান নিয়েছে। আমরা এই আন্দোলনে এখনও অংশ নিইনি ঠিকই, তবে তার অর্থ এই নয় যে এই আন্দোলনের প্রতি আমাদের সমর্থন নেই। আন্দোলনের সবশেষ পরিস্থিতি গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে ‘দিল্লি চলো’ নামে মিছিল নিয়ে রাজধানী দিল্লি অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন কৃষকরা। গত সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের তিন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় পদযাত্রা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কৃষক নেতারা। এরপর বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) তৃতীয় দফায় বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। ফলে দিল্লি অভিমুখে পদযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনের চতুর্থদিন শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ভারতজুড়ে ‘গ্রামীণ ভারত বন্ধ’ ধর্মঘট পালন করেছেন কৃষকরা। এদিন ভোর ৬টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দেশজুড়ে চাষাবাদ ও কৃষি সংক্রান্ত সব ধরণের কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার কর্মসূচী পালন করা হয়। সেই সঙ্গে ‘চাক্কা জ্যাম’ নামে সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। শুক্রবার চতুর্থদিনে প্রবেশ করেছে কৃষক আন্দোলন। ‘দিল্লি চলো’র পদযাত্রার সঙ্গে সঙ্গে এদিন ‘গ্রামীণ ভারত বন্ধ’র ডাক দেন কৃষক নেতারা। ভোর ৬টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দেশজুড়ে কৃষকদের চাষাবাদ ও কৃষি সংক্রান্ত সব ধরণের কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখতে এবং সড়কে অবস্থান নিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দিতে বলা হয়। যার ফলে পরিবহন ও কৃষির মতো কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে পড়েছে। শহরে দুধ ও শাক-সবজির সরবরাহও হ্রাস পেয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন মতে, এই মুহূর্তে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের সীমান্ত বরাবর অবস্থান করছেন কৃষকরা। ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে উঠছে সেখানকার পরিস্থিতি। এরই মধ্যে দফায় দফায় পুলিশ ও কৃষকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে কৃষকদের ওপর মুহুর্মুহু টিয়ার গ্যাস ছুড়ছে পুলিশ। টিয়ার গ্যাস ছুড়তে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। কৃষকরাও ইট-পাটকেল ছুড়ে পুলিশকে হটানোর চেষ্টা করছে। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের সময় আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশি পদক্ষেপ, জল কামান ও ড্রোনের মাধ্যমে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফেলার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন কৃষক নেতারা। অল ইন্ডিয়া কিষাণ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান সুখপাল সিং খারিয়া বলেন, একদিকে কৃষকদের মারধর করা হচ্ছে। অন্যদিকে তাদের বৈঠকের জন্যও ডাকছে। ওরা (আন্দোলনকারী কৃষকরা) কিন্তু তাও আলাপ আলোচনায় যাচ্ছেন। রাত একটার সময় যখন বৈঠকের জন্য মন্ত্রীরা ডেকেছিলেন তখনও গিয়েছেন কৃষক নেতারা। কিন্তু সরকার তার প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। অন্যদিকে বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা যেন নিজেদের কথা শান্তিপূর্ণ ভাবে রাখেন সে বিষয়ে জোর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা। শুক্রবার সকালে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই শান্তিপূর্ণ ভাবে সব আলাপ আলোচনা হোক। অব্যবস্থার মাধ্যমে কোনও ব্যবস্থা করা যায় না।’ কৃষকদের উপর বল প্রয়োগের সমালোচনা কৃষক আন্দোলনে দমনপীড়ন করায় বিজেপি সরকারকে তোপ দেগেছে অন্য রাজনৈতিক দলগুলো। কৃষকদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে শিবসেনা (ইউবিটি) সাংসদ সঞ্জয় রাউত বলেছেন, বিক্ষোভকারীরা সারা দেশের কৃষকদের প্রতিনিধিত্ব করছে। কিন্তু যেভাবে তাদের উপর বল প্রয়োগ করে আটকানো হচ্ছে তা ঠিক নয়। এখন পর্যন্ত ১০০ জনেরও বেশি কৃষক আহত হয়েছেন এবং অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা বিশাল জেলখানা তৈরি করেছে। তিনি আরও বলেন, স্বাধীন ভারতে যখন কৃষকদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী মোদি বিদেশ সফর করছেন, অমিত শাহ একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি, কৃষিমন্ত্রীকে কথা বলার অধিকার দেওয়া হয়নি। বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে বিরোধী তৃণমূল কংগ্রেসও। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই কৃষকদের ওপর বল প্রয়োগের নিন্দা করেছিলেন। তার কথায়, কৃষকরা আন্দোলন করছে, দেশ জ্বলছে। কিন্তু বিজেপির কিছু যায় আসে না।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply