মালদ্বীপের সেনা প্রত্যাহারের চাপেই কাত ভারত!
মালদ্বীপ থেকে সেনা প্রত্যাহার না করতে কার্যত সমাধান খুঁজছে ভারত। এবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তবে এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোন সমাধানের আভাস মেলেনি চলমান উত্তেজনাকর পরিস্থিতির।
ভারত মহাসাগরের সাগরের ছোট্ট দ্বীপ দেশটি কৌশলগতভাবে ভারতের জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ। ছবি: সংগৃহীত
ক্রমেই তলানিতে ঠেকছে ভারত-মালদ্বীপ কূটনৈতিক সম্পর্ক। গত ১৩ জানুয়ারি চলতি বছর ১৫ মার্চের ভেতর মালের মাটি থেকে ভারতীয় সেনাদের সরিয়ে নেয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু। এতে তড়িঘড়ি করে বৈঠকে বসেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। হাতছাড়া না হয়ে যায় মালে, তাই সমাধান খুঁজছে দিল্লি।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) উগান্ডার রাজধানী কাম্পালায় জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের শীর্ষ সম্মেলনে যোগদেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও মালদ্বীপের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুসা জামির। বৈঠকে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন এই দুই শীর্ষ কূটনীতিক।
দ্বিপক্ষীয় এ বৈঠকের পর মুসা জানান, মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের পাশাপাশি দেশটিতে উন্নয়ন প্রকল্প দ্রুত সমাপ্তি ও দুই রাষ্ট্রের সহযোগিতা আরও জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এ বিষয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি ছবি পোস্ট করে জয়শঙ্কর জানান, ভারত-মালদ্বীপের কূটনৈতিক সম্পর্কের পাশাপাশি জোট নিরপেক্ষে আন্দোলন সংক্রান্ত নানা ইস্যুতে আলোচনা হয়েছে দুই পক্ষের।
আরও পড়ুন: কতটা ফলপ্রসূ হবে মালদ্বীপের ‘ইন্ডিয়া আউট’ নীতি
তবে, দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনার পরও মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহার করা হবে কিনা এ বিষয়ে নির্দিষ্ট করে গণমাধ্যমকে কিছুই জানায়নি কর্তৃপক্ষ। আর এতেই সৃষ্টি হয়েছে ধোঁয়াশা।
ভারতের মূল ভূখন্ড থেকে ৩০০ নটিক্যাল মাইল দূরে মালদ্বীপ। লাক্ষাদ্বীপ থেকে মাত্র ৭০ নটিক্যাল মাইল। ভারত মহাসাগরের সাগরের ছোট্ট দ্বীপটি কৌশলগতভাবে ভারতের জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ। এসব কারণে মালদ্বীপে দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগ করে আসছে ভারত।
সমুদ্র দ্বীপটিতে একটি ছোট সেনাঘাঁটিও তৈরি করেছে তারা। সেখানে ৮০ জনের ওপরে রয়েছেন ভারতীয় সেনা। ১৯৮৮ সালে মালদ্বীপের সরকার বিরোধী অভ্যুত্থান দমন করেছিলো তারা। যার নাম ছিলো অপারেশন ক্যাকটাস। বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কাঁধে কাধ মিলিয়ে উদ্ধার কাজ চালিয়েছেন দেশটির সেনারা।
আরও পড়ুন: ভারতের ওপর কেন এত ‘ক্ষুব্ধ’ মালদ্বীপ?
তবে, মালদ্বীপের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু চীনপন্থি হওয়ায় কূটনৈতিক সম্পর্ক শেষ করতে চাইছেন ভারতের সঙ্গে। শুধু তাই নয় নিজের গদি রক্ষায় ঝুঁকছেন চীনের দিকে। এমনটাই ধারণা বিশ্লেষকদের।
বিশ্ব ব্যাংকের মতে, মালদ্বীপের মোট ধারের ২০ শতাংশ চীনের কাছে। অর্থাৎ মালদ্বীপে বিরাট পরিমাণ বিনিয়োগ এরইমধ্যে করে ফেলেছে চীন। এবার তার পরিমাণ বাড়বে আরও। ঠিক এই জায়গাতেই ভারতের চিন্তা।
ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম দেশ মালদ্বীপ। সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নেয়ার অর্থ ভূরাজনৈতিকভাবে ভারত মহাসাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া। একই সঙ্গে সেই কৌশলগত জায়গা চীনের হাতে তুলে দেয়া। তাই আলোচনার মাধ্যমে ভারত চেষ্টা করছে এই পরিস্থিতির সুরাহা করতে।
Tag: English News lid news others world
No comments: