যুক্তরাজ্যের ‘বিশ্বাসঘাতকতা’র শিকার আফগান বিশেষ বাহিনীর ২০০ সেনা
আফগান বিশেষ বাহিনীর প্রায় ২০০জন সেনাসদস্য আবার তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ফিরছে। এসব সদস্যরা যুক্তরাজ্যের হয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করত। যুক্তরাজ্য তাদের প্রতিক্ষণ এবং অর্থ সহায়তা করত।
আফগান বিশেষ বাহিনীর সেনারা এখন পাকিস্তানে পালিয়ে রয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
এসব সদস্যদের অনেকেরই যুক্তরাজ্যে যাওয়ার কথা থাকলেও যুক্তরাজ্য তাদের সেই কথা না রাখায় তালেবান নিয়ন্ত্রিত নিজেদের মাতৃভূমিতে ফিরতে বাধ্য হচ্ছে তারা।
যুক্তরাজ্যের একজন সাবেক জেনারেল স্যার রিচার্ড ব্যারন এই ঘটনাকে বিশ্বাসঘাতকতা এবং দু:খজনক বলে অভিহিত করেছেন। আফগান বিশেষ বাহিনীর এই সেনাসদস্যরা পাকিস্তানে পালিয়ে গেছে।
বলা হচ্ছে তারা পাকিস্তানে যত আফগান শরনার্থী আছে তাদের জন্য হুমকির কারণ হবে। অন্যদিকে এই ঘটনাকে আফগান মানুষের জন্য হুমকি নয় বরং হাজার হাজার আফগানকে নিরাপত্তা দেয়া হবে বলে দাবি যুক্তরাজ্যের।
জেনারেল ব্যারন যিনি ১২ বছর ধরে আফগানিস্তানে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন তিন বিবিসিকে বলেন, আফগান সৈন্যদের স্থানান্তরিত হওয়ার বিষয়টি যুক্তরাজ্যের জন্য চরম ব্যর্থতা। এই ঘটনা প্রমাণ করে আমরা জাতি হিসেবে অযোগ্য।
আরও পড়ুন: গাজায় হাসপাতাল ঘিরে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি ট্যাঙ্ক
একে ‘বিশ্বাসঘাকতা’ বলেও মন্তব্য করেন ব্যারন। বলেন, এই বিশ্বাসঘাতকতার মূল্য দিতে হবে সেসব সেনাদের। যারা আমাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। হয় তারা মারা যাবে না হয় সারাজীবন তাদের জেলে কাটাতে হবে।
২০২১ সালে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সংসদে বলেছিলেন, আফগান বিশেষ বাহিনীর এসব সদস্যরা যারা নিরলসভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হয়ে কাজ করছেন তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের জন্য একটি পথ করে দিতে এবং নিরাপত্তা দিতে যা করা দরকার তাই করবে যুক্তরাজ্য।
আফগান বেসামরিক নেতাদের জীবনের ঝুঁকি এড়াতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়ার জন্য বৃটেনের জেষ্ঠ্যে কূটনীতিক এবং সেনা কর্মকর্তাদের আহবান যুক্তরাজ্য সরকারের প্রত্যাখ্যানের মধ্য দিয়ে বিষয়টি জটিল আকার ধারণ করে।
বিবিসির হাতে একটি চিঠি আসে। যা ২০২২ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ২০০৬ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে হেলমান্দ প্রদেশে তালোবনের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় উচ্চ পর্যায়ের ৩২ জন কর্মকর্তা যারা যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করছিলেন এমন একটি দলকে সাহায্য করার কথা লেখা ছিল চিঠিতে।
২০০ জন সেনা সদস্যদের অনেকের মতই এই ৩২ জন কর্মকর্তাও যুক্তরাজ্যে আসার জন্য আবেদন করেন। তাদের মধ্যে অনেক কর্মকর্তা এবং সেনাসদস্যকে প্রত্যাখ্যান করা হয়।
আরও পড়ুন: মার্কিন সাংবাদিক কেন ইউক্রেনের কারাগারে বন্দি, প্রশ্ন ইলন মাস্কের
আবার অনেক কর্মকর্তা এবং সেনাসদস্য এক বছরেরও বেশি সময় ধরে অনেকে অপেক্ষা করছেন যুক্তরাজ্য সরকারের জবাবের জন্য। স্যার রিচার্ড জানান, তারা এই মানুষগুলোকে নিয়ে একটি অঙ্গিকার করেছিলেন কিন্তু তারা সে সম্মান রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এদের মধ্যে বিশেষ বাহিনীর আলি নামে একজন সদস্য আছেন যাকে পাকিস্তান থেকে তাড়িয়ে দেয় হয়েছে এবং তিনি এখন নিজেকে যুক্তরাজ্যের বিশ্বাসঘাকতার শিকার বলে মনে করেন।
Tag: English News Featured others world
No comments: