বিরোধীদের নিয়ে হঠাৎ কেন কঠোর অবস্থানে বিজেপি

আগামী বছর লোকসভা নির্বাচনের আগে সম্প্রতি বিধানসভার তিন আসনে নজিরবিহীন সাফল্যে বিজেপির আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। তবে এর মধ্যেই বিরোধীদের বিষয়ে হঠাৎ কঠোর অবস্থান নিয়েছে ভারতের ক্ষমতাসীন দলটি। অল্প সময়ের ব্যবধানে চলতি শীতকালীন অধিবেশন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে ১৪১ জন বিরোধী দলীয় সংসদ সদস্যকে। অনেকেই তাই বলছেন, নজিরবিহীন এমন ঘটনায় কার্যত বিরোধীশূন্য হয়ে পড়েছে ভারতীয় সংসদ। ভারতে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন থেকে বিজেপি-বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্যদের ‘গণহারে’ বহিষ্কারের ঘটনা ঘটেছে। ছবি: সংগৃহীত ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর বলছে, সংসদে হট্টগোলের জেরে মঙ্গলবারও (১৯ ডিসেম্বর) লোকসভায় ৪৯ জন বিরোধী সাংসদকে বহিষ্কার করেন স্পিকার ওম বিড়লা। সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে মোট ৭৮ জন সাংসদকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। এছাড়া গত সপ্তাহে বহিষ্কার করা হয়েছিল ১৪ জন সাংসদকে। চলতি অধিবেশনের মতো আর কোনো অধিবেশনে কখনও এতজন সংসদ সদস্যকে একসঙ্গে বহিষ্কার করা হয়নি। ভারতের লোকসভায় মোট সংসদ সদস্য ৫৪৩ জন। এর মধ্যে চলমান লোকসভায় বিজেপি বা তাদের শরিক দল মিলিয়ে ৩৩৬ জন সংসদ আছেন। বিপরীতে কংগ্রেস বা বিজেপি বিরোধী শিবিরে রয়েছেন ২০৬ জন এবং নির্দলীয় হিসেবে নির্বাচিত হয়ে সংসদে আছেন ১১৩ জন সদস্য। আরও পড়ুন: লোকসভা থেকে আরও ৪৯ এমপি বহিষ্কার বিজেপি-বিরোধী ৬টি রাজনৈতিক দলের সংসদ সদস্যদের এভাবে গণহারে বহিষ্কারের ঘটনা ভারতের সংসদীয় ইতিহাসে নজিরবিহীন এবং বিরলতম বলে দাবি করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, একদিকে এ ধরনের প্রতিবাদ করা যেমন বিরল, তেমনি প্রতিবাদের কারণে একসঙ্গে এতজন সংসদ সদস্যকে পুরো অধিবেশন থেকে বহিষ্কার করাও নজিরবিহীন। সবশেষ যে ৪৯ জন সংসদ সদস্যকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসেরও বেশ কয়েকজন রয়েছেন। রয়েছেন বর্ষীয়ান সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। গত ১৩ ডিসেম্বর লোকসভার অধিবেশন চলাকালীন সময়ে কয়েকজন প্রতিবাদকারী ‘স্মোক বোমা’ নিয়ে হামলা চালালে গোটা সংসদের নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড়ো প্রশ্ন ওঠে। এ ঘটনায় দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র বিবৃতি এবং তাকে পদত্যাগের দাবি তোলেন বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতৃত্ব। একইসঙ্গে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিবৃতিও দাবি করেন তারা। আরও পড়ুন: ভারতের পার্লামেন্ট হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ কে এই ললিত ঝা? এমনকি ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেও লোকসভা অধিবেশনের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বিষয়টি ‘যথাযথভাবে দেখার’ নির্দেশ দিয়েছেন।