যুদ্ধবন্দিদের কপালে নাৎসি প্রতীক এঁকে দিচ্ছে রাশিয়া!
ইউক্রেনের যুদ্ধবন্দিদের কপালে রাশিয়ান সৈন্যরা স্বস্তিকা ও এসএসের মতো নাৎসি প্রতীক এঁকে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী ইউক্রেনীয় সৈন্যদের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে রোববার (১৭ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইউক্রেন নিয়ে তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে কোন পরিবর্তন আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: সংগৃহীত
প্রতিবেদনে বলা হয়, সেরহি নামে একজন ইউক্রেনীয় সৈন্য রাশিয়ার বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে নিজ দেশে ফেরার পর এ অভিযোগ করেন।
সেরহির চিকিৎসক ডা. ওলেক্সান্ডার তুর্কেভিচ রাশিয়া সৈন্যরা কীভাবে যুদ্ধবন্দি সৈন্যদের নির্যাতন করে কপালে নাৎসি প্রতীক এঁকে দিয়েছেন সে বিষয়ে ডেইলি মেইলকে জানিয়েছেন।
সেরহির উদ্ধৃতি দিয়ে ওই চিকিৎসক বলেন, চোখ বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন করে রুশ সৈন্যরা যুদ্ধবন্দিদের কপালে নাৎসি প্রতীক এঁকে দিত। এ সময় তারা বলতো তোমার সন্তানরা জানুক তুমি কতটা ফ্যাসিবাদী। এ কারণেই তোমাকে নাৎসি প্রতীক এঁকে দেয়া হচ্ছে।
সেরহি জানায়, নির্যাতনের ফলে বন্দি অবস্থায় তার দেহ থেকে অনবরত রক্ত ঝরতো, কিন্তু তাকে কোনো চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়নি।
রাশিয়া ইউক্রেনে হামলার কিছুদিন পর সেরহি ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন। গত বছরের ডিসেম্বরে দোনেৎস্ক অঞ্চলে দুইপক্ষের তুমুল যুদ্ধের সময় তাকে বন্দী করা হয়। সেখান থেকে তাকে রুশ সৈন্যরা একটি প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে নিয়ে যায়, যেখানে তাকে দুই সপ্তাহ ধরে নির্যাতন করা হয়। তারা তাকে কোনো খাবার ছাড়াই একটি বেসমেন্টে রেখেছিল।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের আরেকটি বড় শহর ঘিরে ফেলছে রুশ সেনারা
সেখান থেকে তাকে চেচনিয়ায় স্থানান্তরিত করা হয়। পাঁচ মাস পর দুই দেশের বন্দি মিনিময়ের চুক্তি অনুযায়ী সেরহি মুক্তি পান। সেরহি বলেন, পেছনে ফেলে আসা শারীরিক নির্যাতনের কথা ভুলে যাওয়া কঠিন। তার মতে, স্বস্তিকা চিহ্ন মনস্তাত্ত্বিকভাবে ক্ষতিকারক অর্থ এবং সামাজিক কলঙ্কের একটি প্রতীক।
তার স্ত্রী ওলহা বলেন, এটি তাকে প্রতিদিন যে নির্যাতনের সম্মুখীন হয়েছিল তার কথা মনে করিয়ে দেয়। তিনি আরও বলেন, তারা যা করেছে তার কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না। রুশ সৈন্যদের এই কাজকে তার সন্তানরা ঘৃণা করে বলেও জানান।
নাৎসি আমলের সবচেয়ে পরিচিত প্রতীক হলো স্বস্তিকা। এ ছাড়া নাৎসি একনায়ক অ্যাডলফ হিটলারের আধা সামরিক বাহিনী এসএস প্রতীকও ব্যবহার করত। তাদের আর্মব্যান্ড ও পোশাকে এই চিহ্ন থাকত। এই বাহিনীই কনসেনট্রেশন ক্যাম্প পরিচালনা করত।
আরও পড়ুন: বৈঠককালে সহকর্মীদের ওপর গ্রেনেড ছুড়লেন ইউক্রেনের কাউন্সিলর
এদিকে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তাদের লক্ষ্য অর্জন করলেই কেবল ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তি আসবে।
পুতিন বলেন, ইউক্রেন নিয়ে তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে কোন পরিবর্তন আসেনি। এর মধ্যে রয়েছে-ইউক্রেনকে নাৎসি মুক্ত এবং বেসামরিকীকরণ করা। পুতিন যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই এসব কথা বলে আসছেন। ইউক্রেনকে তিনি সবসময় ‘নাৎসি মতাদর্শের’ সঙ্গে তুলনা করেন।
Tag: English News lid news others world
No comments: