দক্ষিণ গাজায় হামলা জোরদার করেছে ইসরাইল
উত্তর গাজা ধ্বংসস্তুপে পরিনত হওয়ার পর এবার দক্ষিণ গাজায় নির্বিচারে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইল। সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর গত দুদিন ধরে গাজার মসজিদ, ঘরবাড়ি ও হাসপাতাল লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী।
ইসরাইলি বিমান হামলার মুখে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিস ছাড়ছে এক ফিলিস্তিনি পরিবার। ছবি: সংগৃহীত
গাজায় কয়েক দফায় বাড়ানো ৭দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হয় গত শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায়। এরপরই সেই পুরনো রূপে ফেরে ইসরাইল। যুদ্ধবিমান, গানশিপ ও ড্রোন নিয়ে নামে হত্যাযজ্ঞে।
মূলত পুরো গাজাজুড়েই হামলা চালানো হচ্ছে। এর মধ্যেই একদিকে হামলা চালানো হচ্ছে, অন্যদিকে গাজাবাসীকে দক্ষিণে রাফা এলাকার দিকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, শনিবার (২ ডিসেম্বর) গাজা উপত্যকার দক্ষিণে প্রধানত মসজিদ, বসতবাড়ি ও হাসপাতাল লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়।
আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলা /ফিলিস্তিনের প্রখ্যাত বিজ্ঞানী সুফিয়ান তায়েহ নিহত
এরপর রোববারও (৩ ডিসেম্বর) দক্ষিণ গাজার বহু এলাকা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এর মধ্যে খান ইউনিস ও রাফা এলাকায় ব্যাপক বিমান হামলা চালানো হয়েছে। এতে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
বিমান হামলার পাশাপাশি দক্ষিণ গাজায় আর্টিলারি থেকেও গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে এই এলাকায় স্থল অভিযানের আশঙ্কাও জোরদার হচ্ছে।
সেক্ষেত্রে দক্ষিণ গাজার অধিবাসী ও আশ্রয় নেয়া ফিলিস্তিনিরা প্রতিবেশি দেশ মিশরে পালাতে বাধ্য হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘও। তারা বলছে, দক্ষিণ গাজায় হামলা জোরদার করা হলে ১০ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনিকে মিশরে আশ্রয় নিতে হতে পারে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর থেকে চালানো ইসরাইলি হামলায় ২৪০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৬৫০ জন আহত হয়েছেন। ফলে গাজায় হামলা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার ২০৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলেও জানায় মন্ত্রণালয়।
আরও পড়ুন: কপ-২৮ সম্মেলন /নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আবারও হুঙ্কার দিয়ে বলেছেন, হামাসকে ধ্বংস করতে এবং বন্দিদের মুক্ত করতে হামলা অব্যাহত রাখবে তারা। যুদ্ধবিরতির আলোচনা থেকেও বের হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেল আবিব।
এর আগে কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ২৪ নভেম্বর প্রথম দফায় চার দিনের যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। এরপর দুই দফায় মোট তিন দিন বাড়ানো হয় যুদ্ধবিরতির মেয়াদ। যুদ্ধবিরতির মধ্যে চুক্তি মেনে মোট সাতবার বন্দি বিনিময় হয়েছে।
তবে এর মধ্যেই ইসরাইলি নেতারা হুমকি দিতে থাকেন যে, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হলেই ফের হামলা শুরু হবে। ফলে যুদ্ধবিরতির আলোচনা থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় হামাসও।
Tag: English News world
No comments: