Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » হঠাৎ কেন পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করছে চীন?




সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৈশ্বিক পরিস্থিতি প্রতিনিয়তই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। শান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ নেই বরং যতই সময় গড়াচ্ছে, তা আরও উত্তাল হচ্ছে। যার ফলে দ্রুত বদলে যাচ্ছে বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি। গত বছর শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনও অব্যাহত রয়েছে। যা বিশ্বের অনেকগুলো দেশকে কার্যত যুদ্ধের ময়দানে টেনে এনেছে। পেন্টাগন প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা এক হাজার ও ২০৩৫ সালের মধ্যে দেড় হাজারে উন্নীত করতে চীন। প্রতীকী ছবি রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের মাঝেই শুরু হয়েছে আর এক ভয়ানক ও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। ইসরাইল-হামাস সংঘাত; যা গত আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে। ইউক্রেন যুদ্ধের মতো এই সংঘাতেও অনেকগুলো পক্ষ জড়িয়ে গেছে এবং ক্রমেই তা পুরো মধ্যপ্রাচ্য ও এর বাইরে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা তৈরি করেছে। এসব সংঘাতে পরমাণু অস্ত্র বাদে এ যাবৎকালের সবচেয়ে শক্তিশালী, সুক্ষ ও সর্বাধুনিক অস্ত্রগুলো ব্যবহার হচ্ছে। তবে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক অস্ত্র বলে পরিচিত পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে অভিযান শুরু করার পর থেকেই রুশ নেতাদের গলায় নিয়মিত শোনা যাচ্ছে পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি। আরও পড়ুন: পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষায় ব্যস্ত চীন, প্রকাশ্যে উপগ্রহ চিত্র একইভাবে সম্প্রতি ইসরাইল-হামাস সংঘাতেও ফিলিস্তিনিদের ওপর পরমাণু অস্ত্র হামলার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন এক ইসরাইলি মন্ত্রী। যদিও এ নিয়ে বিস্তর বিতর্ক ও সমালোচনা হয়েছে, তবে পরমাণু অস্ত্র যে ক্রমেই হুমকি হয়ে উঠছে সে ব্যাপারে বারবার সতর্ক করছেন বিশ্লেষকরা। সেই সঙ্গে হুমকি মোকাবিলায় পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণের ওপরও জোর দিচ্ছেন তারা। কিন্তু পরমাণু অস্ত্রধর দেশগুলো এসব উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা যে কানে তুলছেন বাস্তবতা তা বলছে না। অন্তত চলতি সপ্তাহে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের একটি প্রতিবেদন থেকে সেটা পরিষ্কার। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যমটি চীনের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে বিস্ফোরক সব তথ্য ও উপাত্ত সামনে এনেছে। কী বলেছে নিউইয়র্ক টাইমস মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস চলতি সপ্তাহে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে, পরমাণু শক্তিধর চীন অত্যাধুনিক বা নতুন প্রজন্মের পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই দাবির পক্ষে স্যাটেলাইট চিত্র ও তথ্য-উপাত্ত হাজির করেছে সংবাদমাধ্যমটি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের উত্তর-পশ্চিমে স্বায়ত্তশাসিত জিনজিয়াং প্রদেশে লপ নুর পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষাকেন্দ্র নামে পুরনো ঘাঁটি সক্রিয় করে তোলা হয়েছে। এখানে গত কয়েক বছরে ব্যাপক অবকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। সম্ভবত খুব শিগগিরই পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করা হবে। এখন থেকে প্রায় ৬০ বছর আগে এই লপ নুর ঘাঁটিতেই চীন তার প্রথম পরমাণু বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, লপ নুর ঘাঁটিতে সম্প্রতি একাধিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও যন্ত্রপাতি আমদানি লক্ষ্য করা গেছে। বলা হয়েছে, চীনা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি পাহাড়ের পাশে টানেলে খোঁড়াখুঁড়ি ও অবকাঠামো নির্মাণ পুনরায় শুরু করেছে। অতীতে এই টানেলগুলো পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। আরও পড়ুন: শত্রুদের পরমাণু হামলার হুঁশিয়ারি কিমের নিউইয়র্ক টাইমস যেসব ছবি প্রকাশ করেছে সেগুলো মূলত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ম্যাক্সার স্যাটেলাইটের ধারণ করা। স্যাটেলাইট চিত্রগুলো সংশ্লিষ্ট এলাকার চারপাশে বেশ কয়েকটি নতুন রাস্তা যুক্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে। প্রতিবেদন মতে, ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, চীন কিছু আধুনিক মানের ব্যালিস্টিক ও জাহাজ থেকে ছোড়ার পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে। টং ঝাও নামে একজন পরমাণু বিশেষজ্ঞ নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, ‘এসব তথ্য-প্রমাণই চীনের প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, খুব শিগগিরই তারা পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করতে চলেছে।’ লপ নুর ঘাঁটি সক্রিয় হয়ে ওঠার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ড. রেনি বাবিয়ার্জ নামে আরেক বিশেষজ্ঞও। রেনি বাবিয়ার্জ গত কয়েক বছর ধরে লপ নুর পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষাগারের স্যাটেলাইট ছবি নিয়ে গবেষণা করছেন। তবে চীন নতুন প্রজন্মের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার পরিকল্পনা সম্পর্কে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন ‘ভিত্তিহীন’ বলে নাকচ করে দিয়েছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এগুলো ‘পুরোপুরি দায়িত্বজ্ঞানহীন’ মন্তব্য। হঠাৎ কেন পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার প্রস্তুতি চীনের এই হঠাৎ পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা প্রস্তুতির কয়েকটি কারণ থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর মধ্যে অন্যতম প্রধান যে কারণ সেটা হলো চীনের ‘পিছিয়ে পড়ার ভয় বা শঙ্কা’ যেটাকে ইংরেজিতে ‘ফিয়ার অব মিসিং আউট’ বলা হয়। অর্থাৎ উদীয়মান চীন কোনোদিক দিয়েই কারো পিছে পড়তে থাকতে চায় না। এমনকি সেটা পরমাণু শক্তির ক্ষেত্রেও। ১৯৪৫ ও ১৯৪৯ সালে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ও তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচিতে সাফল্য পায়। মূলত এই সময় থেকেই পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতার শুরু। রুশ-মার্কিন পরমাণু সাফল্যের প্রতিক্রিয়ায় অবশিষ্ট পরাশক্তিগুলো এই প্রযুক্তি হস্তগত করতে মরিয়া হয়ে ওঠে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালে ব্রিটেন, ১৯৬০ সালে ফ্রান্স, ১৯৬৪ সালে চীন ও ১৯৭৪ সালে ভারত পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হয় এবং সামরিক ব্যবহারের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে। এরপর পাকিস্তান ও উত্তর কোরিয়া যথাক্রমে ১৯৯৮ ও ২০০৬ সালে পরমাণু শক্তিধর দেশের তালিকায় নাম লেখায়। আরও পড়ুন: ইসরাইলের কাছে পরমাণু বোমা আছে কিনা জানতে চাইলেন এরদোয়ান একাধিক রিপোর্ট মতে, বিশ্বে বর্তমানে পরমাণু অস্ত্রের মজুদ রেয়েছে ১৬ হাজার ৩০০টি বা ১৫ হাজার ৬৫০টি। যার বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার হাতে। বিশ্বে মজুদ পরমাণু অস্ত্রের ১০ হাজারই সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করে সংশ্লিষ্ট দেশের সেনাবাহিনী। এর মধ্যে শত্রুসেনাকে লক্ষ্য করে মোতায়েন করা অতি সক্রিয় ১ হাজার ৮০০ অস্ত্র মাত্র কয়েক মিনিটের নোটিশেই চূড়ান্ত আঘাত হেনে শত্রুপক্ষের অকল্পনীয় ধ্বংস সাধন করতে সক্ষম। এ ধরনের একটি পরমাণু অস্ত্রের আক্রমণ কত ভয়াবহ হতে পারে, তা অনুমান করাও কঠিন। ১৯৪৫ সালে জাপানে প্রথম পরমাণু বোমা নিক্ষেপ করে যুক্তরাষ্ট্র। আধুনিক পরমাণু অস্ত্রগুলোর ধ্বংস ক্ষমতা তার চেয়ে বহুগুণ বেশি। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বিশ্ব ও রাশিয়ার মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এ উত্তেজনার মধ্যেই সম্প্রতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন একাধিকবার পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে কথা বলেছেন। এমনকি দেশটির ঊর্ধ্বতন অন্যান্য কর্মকর্তারাও রাখঢাক না করেই আভাস দিয়েছেন যে পশ্চিমা দেশগুলো যেন রাশিয়াকে খুব বেশি কোণঠাসা করার চেষ্টা না করে। করলে রাশিয়ার হাতে এমন ‘আধুনিক ও অনন্য বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন অস্ত্র আছে যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ যে কোনো শত্রুকে ধ্বংস করে দিতে পারে।’ আরও পড়ুন: গাজায় দুই পরমাণু বোমার সমান গোলা ফেলেছে ইসরাইল রুশ কর্তাদের এমন হুমকিতে মুখ বুজে বসে থাকেননি মার্কিন কর্মকর্তারাও। তারা আরও ভয়ংকর পরমাণু অস্ত্র ব্যবহার করে জবাব দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। বিশ্বের প্রধান দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের এ পরমাণু অস্ত্র প্রতিযোগিতায় চীন পিছিয়ে পড়তে চায় না। যেমনটা বলছেন খ্যাতনামা পদার্থবিজ্ঞানী ও পরমাণু বিশেষজ্ঞ রিচার্ড এল. গারউইন। তার কথায়, ‘কোনো ক্ষেত্রে অন্য কেউ এগিয়ে থাকবে, আর চীন পিছিয়ে পড়বে সেটা চান না চীনা কর্মকর্তারা।’ রিচার্ড এল. গারউইনের সঙ্গে একমত প্রকাশ করে পরমাণু বিশেষজ্ঞ টং ঝাও বলেন, ‘চীন মনে করে, আগামী দিনগুলোর সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির জন্য তাদেরকে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেয়া প্রয়োজন।’ সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, চীন গত এক বছরে তার পরমাণু অস্ত্রের মজুদ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়িয়েছে। চীনের কাছে এখন প্রায় ৫০০টি ব্যবহারযোগ্য পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন প্রকাশিত বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে পরমাণু অস্ত্রের সংখ্যা এক হাজার ও ২০৩৫ সালের মধ্যে দেড় হাজারে উন্নীত করতে চীন। ভারতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সীমান্ত নিয়ে ভারতের সঙ্গে চীনের তীব্র দ্বন্দ্ব চলছে। এর মধ্যেই বেইজিংয়ের নতুন করে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার বিষয়টি সামনে এলো। চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্তবিরোধ গত ছয় দশকের। ২০২০ সালের জুনে পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই সময় ভারতের ২০ সেনা নিহত হন। নিহত হন চীনের সেনাও। আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পরমাণু বোমায় মারা যেতে পারে রাশিয়ার ৩ লাখ মানুষ! ভারত সরকারিভাবে স্বীকার না করলেও দেশটির বিরোধী দলের নেতারা বিভিন্ন সময়ই বলেছেন, ওই সময় থেকে লাদাখের অন্তত দুই হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা চীনা সেনারা গায়ের জোরে দখল করে রেখেছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর ২০২০ সালের সংঘর্ষ-পূর্ববর্তী স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনতে ভারত বারবার দাবি জানিয়ে এলেও চীন এখনও তা মানেনি। এর মধ্যে উভয় দেশই সীমান্তে সমর প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে এই দ্বন্দ্ব বাড়বে বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। সাম্প্রতিক সময়






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply