গাজায় হাসপাতাল ঘিরে হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি ট্যাঙ্ক
উত্তর গাজায় গত চারদিন একটি হাসাপাতাল ঘিরে রেখেছে ইসরাইলি সেনারা। চারপাশ থেকে হাসপাতালের রোগীদের লক্ষ্য করে ট্যাঙ্ক থেকে নির্বিচার বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। এতে এরই মধ্যে শিশুসহ কয়েকজন রোগী নিহত হয়েছে। বিরামহীন বোমাবর্ষণের কারণে কেউ হাসপাতাল থেকে বেরও হতে পারছে না।
গত চারদিনেরও বেশি সময় ধরে কামাল আদওয়ান হাসপাতাল ঘিরে রেখেছে ইসরাইলি ট্যাঙ্ক। ছবি: সংগৃহীত
আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, কামাল আদওয়ান হাসপাতালের প্রধান আহমেদ আল কাহলুত জানান, পানি, খাদ্য ও জ্বালানির অভাবে হাসপাতালে কঠিন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কিন্তু কেউই হাসপাতাল থেকে বের হতে পারছে না।
আহমেদ আল কাহলুত আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘গত চারদিনেরও বেশি সময় ধরে আমরা অবরুদ্ধ। ইসরাইলি ট্যাঙ্ক চারপাশ থেকে হাসপাতাল ঘিরে হামলা চালাচ্ছে। তীব্র বোমাবর্ষণ চলছে।’ স্নাইপার থেকেও গুলি চালানো হচ্ছে বলেও জানান তিনি। হামলায় এরই মধ্যে হাসপাতালের একাংশ ব্যাপক
হাসপাতাল প্রধান আরও জানান, ইসরাইলি বাহিনী কোনো পূর্ব সতর্কতা ও ব্যাখ্যা ছাড়াই হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগ লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এতে নবজাত সন্তানসহ দুইজন মা নিহত হয়েছেন। নিহত হয়েছে আরও তিন শিশু।
আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলায় বাবা হারালেন আল জাজিরার সাংবাদিক
আহমেদ আল কাহলুত জানান, কামাল আদওয়ান হাসপাতালে এখন ৬৫ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ১২ জন শিশু আইসিইউতে রয়েছে। আরও ছয় নবজাত শিশু রয়েছে ইনকিউবিটরে। এছাড়া আরও প্রায় ৩ হাজার উদ্বাস্তু হাসপাতালটিতে আশ্রয় নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
কামাল আদওয়ান হাসপাতাল গাজার আরেকটি হাসপাতালের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। গত মাসের শুরুর দিকে উত্তর গাজার আল শিফা হাসপাতালের চারপাশ ঘিরে ফেলে হামলা চালায় ইসরাইলি ট্যাঙ্ক। হাসপাতাল লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয় স্নাইপার থেকেও।
এভাবে বেশ কয়েকদিন অবরুদ্ধ রাখা হয় হাসপাতালটি। বিরামহীন বোমাবর্ষণ ও গুলির কারণে কেউ ঢুকতে বা সেখান থেকে বের হতে পারছিল না। বের হতে গিয়ে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়। এছাড়া প্রায় বিনা চিকিৎসায় মারা যায় আরও প্রায় দুই শতাধিক রোগী। যাদের হাসপাতাল প্রাঙ্গনেই গণকবর দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: হামাসের সঙ্গে সংঘাত /গাজায় ৪৩০ ইসরাইলি সেনা নিহত
গত ৭ অক্টোবর থেকে যুদ্ধ শুরু হলে ইসরায়েলিরা গাজার ছোট-বড় প্রায় সব হাসপাতালেই হামলা চালায়। সর্বশেষ আল শিফা হাসপাতালে তাণ্ডব চালায় ইসরাইলি সেনারা। ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতাল নামে একটি হাসপাতালের ইনকিউবেটরে থাকা সব শিশু মারা যায়।
বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়ায় প্রচুর রোগী চিকিৎসা সেবা পায়নি। জ্বালানি সরবরাহ না থাকায় একে একে বন্ধ হয়ে গেছে ৪০টিরও বেশি হাসপাতাল। এখন শুধুমাত্র চারটি হাসপাতাল চালু রয়েছে। কিন্তু খাদ্য, পানি ও জ্বালানির অভাবে সেগুলোও বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
সংঘাতের ৬৬তম দিন সোমবার গাজার উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী। হামলা চালছে দক্ষিণ গাজাতেও। এসব হামলায় নতুন করে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এতে গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ২০০-তে।
Tag: English News Featured world
No comments: