‘মানুষ মরলে মরুক’: করোনাকালে বলেছিলেন ঋষি সুনাক!
ব্রিটেনে করোনাকালীন সংকট মোকাবিলা সংক্রান্ত এক তদন্ত কমিটির অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে বিস্ফোরক তথ্য। তদন্ত কর্মকর্তাদের হাতে এসেছে একজন ঊর্ধ্বতন চিকিৎসা কর্মকর্তার ডায়েরি, যেখানে তিনি করোনাকালীন বিভিন্ন বিষয় নোট রেখেছেন। সেখানেই একটি নোটে লেখা ছিল বর্তমান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাকের ওই বিস্ফোরক মন্তব্য।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ছবি: সংগৃহীত
ঊর্ধ্বতন ওই চিকিৎসা কর্মকর্তার ডায়েরিতে লেখা ছিল, ‘ঋষি সুনাক মনে করেন, ব্রিটেনে দ্বিতীয় দফা লকডাউন দেয়ার পরিবর্তে করোনায় মানুষের মৃত্যু হলে হোক।’
করোনা মহামারি চলাকালীন ব্রিটিশ সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা প্যাট্রিক ভ্যালেন্স তার ডায়েরিতে সুনাকের এ মন্তব্য নোট করে রেখেছিলেন বলে মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
তদন্তে দেখা যায়, ডায়েরির তথ্যগুলো ভ্যালেন্সকে জানিয়েছিলেন বরিস জনসনের সবচেয়ে সিনিয়র উপদেষ্টা ডমিনিক কামিংস। আর প্যাট্রিক ভ্যালেন্স ডায়েরিতে ২০২০ সালের ২৫ অক্টোবর ঋষি সুনাকের সেই মন্তব্যটি লিখে রেখেছিলেন।
ভ্যালেন্স তার ডায়েরিতে কামিংসকে উদ্ধৃত করে লেখেন,
ঋষি মনে করেন, লকডাউন চাপিয়ে না দিয়ে করোনায় মানুষকে মরতে দেয়াই ঠিক আছে।
এদিকে, এ ঘটনার পর ব্রিটিশ প্রশাসনে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সুনাকের একজন মুখপাত্র গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তদন্তে উল্লিখিত সব অভিযোগের জবাব আলাদা আলাদা না দিয়ে একসঙ্গে দেয়া হবে এবং খুব শিগগিরই প্রধানমন্ত্রী তার অবস্থান পরিস্কার করবেন।
তবে ঊর্ধ্বতন সরকারি অনেক কর্মকর্তা বলছেন, সরকার করোনা মহামারি মোকাবিলায় অপ্রস্তুত ছিল। শুধু তাই নয়, অনেক ক্ষেত্রে তাদের উদাসীনতা সংকট মোকাবিলার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করেছে বলেও মনে করেন তারা।
আরও পড়ুন: সুনাক প্রশাসনে তোলপাড়, এবার পরিবহনমন্ত্রীর পদত্যাগ
অন্যদিকে, তদন্তে পাওয়া প্রমাণগুলো ঋষি সুনাক সরকারের পতন ঘটাতে পারে বলে ধারণা করছেন কেউ কেউ। কারণ করোনা মোকাবিলায় ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে হয়েছিল বরিস জনসনকে। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েও তেমন সুবিধা করতে পারেননি ঋষি সুনাক।
এছাড়া তদন্ত কমিটির পাওয়া আরও একটি নথিতে দেখা যায়, একজন সরকারি বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা সুনাককে ‘ডাক্তার ডেথ’ উপাধি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ব্রিটেনে করোনায় অন্তত ২ লাখ ২০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সেসময় তৎকালীন সরকার কীভাবে এই মহামারি সামাল দিয়েছিল, সে বিষয়েই তদন্ত হচ্ছে। এই তদন্ত চলবে ২০২৬ সালের গ্রীষ্মকাল পর্যন্ত।
সাম্প্রতিক সময়
No comments: