মান বাঁচানোর লড়াইয়ে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য ২৮০
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ম্যাচ। ছবি-এএফপি
বিশ্বকাপে দুলের পারফরম্যান্স যাচ্ছেতাই! টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিশ্চিত। পয়েন্ট টেবিলে অবস্থানও তলানিতে। সব আশা হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলার যোগ্যতা অর্জনের লড়াই। এমন সমীকরণের ম্যাচে দিল্লিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে জ্বলে উঠল শ্রীলঙ্কা। চারিথ আসালাঙ্কার সেঞ্চুরিতে চড়ে বাংলাদেশকে ২৮০ রানের চ্যালেঞ্জ জানাল কুশল মেন্ডিসের দল।
আজ সোমবার (৬ নভেম্বর) আগে ব্যাট করতে নেমে ৪৯.৩ ওভারে স্কোরবোর্ডে ২৭৯ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০৮ রান এসেছে চারিথ আসালাঙ্কার ব্যাট থেকে। ১০৫ বলে যা সাজানো পাঁচটি ছক্কা ও ছয়টি চারে।
দিল্লির অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতে বোলিং বেছে নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বোলিং ইনিংসের শুরুটাও হয় দুর্দান্ত। প্রথম ওভারেই শ্রীলঙ্কার ওপেনিং জুটি ভেঙে দেন শরিফুল ইসলাম। তুলে নেন কুশল পেরারার উইকেট। অবশ্য ওই উইকেটে বড় অবদান কিপার মুশফিকের। শরিফুলের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে যান কুশল। তবে, ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় প্রথম স্লিপে, ঝাপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত ক্যাচ লুফে নেন মুশফিক। ৫ রানে ভাঙে শ্রীলঙ্কার ওপেনিং জুটি, কুশল করেন ৪ রান।
শুরুর ধাক্কা দ্বিতীয় জুটিতেই কাটিয়ে ওঠে শ্রীলঙ্কা। আগের ম্যাচে ৫৫ রানে অলআউট হওয়া শ্রীলঙ্কা দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৬১ পায় রান। পাথুম নিশানকা ও ওয়ানডাউনে নামা কুশল মেন্ডিস মিলে ভোগান বাংলাদেশকে। তিন পেসার মিলে যখন এই জুটি ভাঙতে পারছিলেন না তখন ত্রাতা হয়ে এলেন সাকিব। নিজের প্রথম ওভারেই এসে তুলে নেন মেন্ডিসের উইকেট। বাংলাদেশ অধিনায়কের স্লোয়ার বলে অবশ্য বাউন্ডারিতে উড়াতে চেয়েছিলেন মেন্ডিস। কিন্তু ফিল্ডার শরিফুল সীমানার কাছে স্লাইড করে তুলে নেন দারুণ ক্যাচ। তাতে আউট হয়ে ফেরেন সাজঘরে মেন্ডিস (১৯)।
অধিনায়কের পর নিশানকার থামান বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা তানজিম সাকিব। তরুণ এই পেসারের বলে স্টাম্প হয়ে থামে নিশানকার ঝড়। ৩৬ বলে ৪১ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
লঙ্কানদের পরের জুটিও থিতু হয়ে যায়। সাদিরা সামারাউইক্রামা ও চারিথ আসালাঙ্কা মিলে মিলে উপহার দেন ৬৩ রানের জুটি। ২৪.২ ওভারে ওই জুটি ভেঙে স্বস্তি ফেরান সাকিব। তবে, ঠিক তখনই ঘটে যায় আরেকটি ঘটনা। যা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট দেখে প্রথমবার। সাকিবের বলে সাদিরা আউট হলে উইকেটে আসেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। উইকেটে এসে কোনো বল না খেলেই তাকে ফিরতে হয় সাজঘরে। কারণ, তিনি টাইমড আউট। ক্রিকেটের ক্লজ ১৬.২ অনুচ্ছেদ অনুসারে, একজন ব্যাটার আউট হওয়ার দুই মিনিটের মাথায় নতুন ব্যাটারকে স্ট্রাইক নিতে হয়। কিন্তু হেলমেটের জটিলতায় সেটা করতে ব্যর্থ হওয়ায় টাইমড আউট হয়ে ফেরেন ম্যাথুজ।
অবশ্য ম্যাথুজকে হারালেও বড় রান তুলতে সমস্যা হয়নি শ্রীলঙ্কার। দ্রুত উইকেট হারানোর বিপদ সামলে অরুন জেটলিতে ঝড় তোলেন চারিথ আসালাঙ্কা। ডি সিলভার সঙ্গে দলকে দুইশ পার করেন তিনি। ২১৩ রানের মাথায় এই জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ফিরিয়ে দেন ডি সিলভাকে। ৩৬ বলে ৩৪ রান করে ফেরেন ডি সিলভা, ভাঙে ৭৮ রানের জুটি।
একের পর এক উইকেট হারালেও থামানো যায়নি আসালাঙ্কাকে। ১০১ বলে তিনি পৌঁছে যান তিন অঙ্কের ম্যাজিকাল ফিগারে। শেষ পর্যন্ত ১০৮ রানে থামেন তিনি এবং শ্রীলঙ্কাকে এনে দেন ২৭৯ রানের শক্ত পুঁজি।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে ৫৭ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন সাকিব আল হাসান। ৮০ রান খরচা করে তিনটি পান তানজিম সাকিব। শরিফুলের শিকার দুটি। আর একটি নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শ্রীলঙ্কা: ৪৯.৩ ওভারে ২৭৯/১০ (নিশানকা ৪১, পেরেরা ৪, মেন্ডিস ১৯, সামারাবিক্রমা ৪১, আসালাঙ্কা ১০৮, ম্যাথিউস ০, সিলভা ৩৪, থিকসানা ২২, চামিরা ৪, রাজিথা ০, মধুশঙ্কা ০; শরিফুল ৯.৩-০-৫২-২, তাসকিন ১০-১-৩৯-০, তানজিম ১০-০-৮০-৩, সাকিব ১০-০-৫৭-২, মিরাজ ১০-০-৪৯-১)
Tag: English News world
No comments: