গাজায় দিনে ২ ট্রাক জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি ইসরাইলের
গাজায় দিনে ২ ট্রাক জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি ইসরাইলের
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় প্রতিদিন দুই ট্রাক জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরাইল। শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) দেশটির যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। এক ইসরাইলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে রয়টার্স।
গত ১৫ নভেম্বর মিশরের রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ২৩ হাজার লিটার জ্বালানি প্রবেশ করেছে গাজায়। ছবি: বিবিসি
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসরাইলের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ওয়াশিংটনের অনুরোধে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তেল আবিব।’ তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানি প্রবেশ করলে গাজায় বন্ধ হয়ে যাওয়া পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্যানিটারি ব্যবস্থার সমস্যা কিছু মাত্রায় হলেও লাঘব হবে।’
গত মাসে গাজায় আগ্রাসনের পাশাপাশি ভূখণ্ডটির ওপর নতুন করে সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে ইসরাইল। স্বল্প পরিমাণে ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দেয়া হলেও জ্বালানি একেবারে বন্ধ করে দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ফের বিমান হামলা, নিহত ১৮
জ্বালানির অভাবে পরিবহন ব্যবস্থা আগেই ভেঙে পড়েছে। এরপর একে একে বন্ধ হয়ে গেছে হাসপাতালগুলোও। এর ফলে নজিরবিহীন দুর্দশায় পড়েছে গাজাবাসী।
চলতি সপ্তাহে জাতিসংঘ জানায়, জ্বালানির মজুদ শেষ হয়ে যাওয়ায় গাজায় তাদের ত্রাণ সহায়তার কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দিতে ইসরাইলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছিল।
তারই প্রেক্ষিতে জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেয়া হলো। এছাড়া ইসরাইলি কর্মকর্তারা মনে করছেন, গাজায় জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেয়ার কারণে চলমান সংঘাতের কারণে বিশ্বজুড়ে ইসরাইলের প্রতি যে বিরুপ মনোভাব তৈরি হয়েছে তা দূর হবে। যার ফলে উপত্যকাটিতে হামাস নির্মূলের অভিযান অব্যাহত রাখতে পারবে ইসরাইল।
আরও পড়ুন: ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে গাজার সব হাসপাতাল!
গত ১৫ নভেম্বর বিবিসি জানিয়েছিল, ইসরাইলি হামলার পর গাজায় প্রথমবারের মতো সেখানে জ্বালানি সরবরাহ করেছে একটি ট্যাংকার। জাতিসংঘের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেছেন, তারা মিশরের রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ২৩ হাজার লিটার (৫ হাজার ৬০ গ্যালন) জ্বালানি সরবরাহ পেয়েছেন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে চালানো হামাসের হামলার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে দেশটির সেনাবাহিনী। এমনকি ওইদিনই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকাতে জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দেন নেতানিয়াহু সরকার। যার ফলে বড় ধরণের মানবিক বিপর্যয়ে পড়েছেন গাজাবাসীরা
জ্বালানির অভাবে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। সোমবার (১৩ নভেম্বর) ইসরাইলি হামলা ও জ্বালানি সংকটের কারণে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার আল-শিফা ও আল-কুদস হাসপাতাল বন্ধ হয়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে আল-শিফা হাসপাতালের ইনকিউবেটরে থাকা ৩৬ শিশু। উষ্ণ রাখার জন্য তাদের ফয়েল পেপার দিয়ে মুড়িয়ে রাখা হয়েছে নবজাতকদের।
আরও পড়ুন: : পুরোপুরি বন্ধ গাজার সবচে বড় দুই হাসপাতাল
টানা ৪২ দিন ধরে গাজায় চালানো ইসরাইলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত সাড়ে ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার শিশু। এছাড়াও ৩০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
Tag:
No comments: