যুদ্ধবিরতিতে দম নিতে সাগরপাড়ে গাজাবাসী
ছবি: রয়টার্স
পড়ন্ত বিকেল। সূর্যাস্তের স্নিগ্ধ আলো সমুদ্রের নীলে মিলেমিশে তৈরি করেছে এক মায়াবী গোধূলি। অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজায় অপরূপ এ দৃশ্য তৈরি করেছে প্রকৃতি।
স্বাভাবিকভাবেই, নৈসর্গিক এ সৌন্দর্য উপভোগের মানসিকতা নেই ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতায় বিধ্বস্ত গাজার মানুষের। নির্বিচার হামলায় কেউ সর্বস্ব হারিয়েছেন। কেউ মৃত্যুর সাথে লুকোচুরি খেলে বেঁচে আছেন কোনোমতে। আবার কারও কারও জীবন বন্দি আশ্রয়কেন্দ্রের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে।
বিরতির সুযোগ মিলতেই অনেকে পরিবার নিয়ে ছুটে গেছেন খোলা বাতাসে, সমুদ্রসৈকতে। বুক ভরে নিঃশ্বাস নিতে। দীর্ঘ দেড় মাস আশ্রয় কেন্দ্রের ‘দম বন্ধ’ পরিবেশে থেকে ক্লান্ত তারা।
তাদের একজন বলেন, এই মানুষগুলোর কেউ আনন্দ করতে আসেনি। সবাই বাস্তুচ্যুত। আশ্রয়কেন্দ্রে ছোটো একটা ঘরে গাদাগাদি করে একসাথে ৭০ থেকে ৮০ জন একসাথে থাকেন। দমবন্ধ ঐ পরিবেশ থেকে বেরিয়ে তারা একটু শান্তিতে নিঃশ্বাস নিতে চাইছেন কেবল।
আরেক গাযাবাসী বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রের বদ্ধ ঘরে আর থাকতে পারছি না। তাই শুদ্ধ বাতাসে একটু শ্বাস নিতে এসেছি। তবে সত্যি বলতে একটুও আনন্দ হচ্ছে না। বরং চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করছে। জানি না, আমার বাচ্চাদের কী হবে?
কেউ কেউ এসেছেন জীবিকার তাগিদেও। যুদ্ধবিরতির সুযোগে চেষ্টা করছেন মাছ ধরে যদি আয় করা যায় দু’টো পয়সা। ‘অস্থায়ী’ এমন একজন জেলে বলছেন, বাড়ি ছাড়ার সময় কিছুই আনিনি সাথে। আমি মাছ ধরেই সংসার চালাতাম। তাই ভাবলাম মাছ ধরে যদি কিছু আয় করতে পারি। তাছাড়া, নিজেরও একবেলা খাবার ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
অবশ্য নানা অনিশ্চয়তার মুখে সমুদ্রের বিশালতাও দূর করতে পারছে না গাজাবাসীর দুশ্চিন্তা। সংঘাত থেমে যাবে। থাকবে না জীবন বাঁচানোর চিন্তা কিংবা রুটি নিয়ে কাড়াকাড়ি। নিশ্চিন্ত হয়ে উপভোগ করবেন সমুদ্র পাড়ের এ সৌন্দর্য, এমনটাই প্রত্যাশা নিরীহ এ মানুষগুলোর।
Tag: English News others world
No comments: