হিজবুল্লাহর নিশানায় ইসরাইল, ‘তাক করা’ দেড় লাখ রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র!
ইসরাইল-হামাস সংঘাত শুরুর পরপরই ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে ইরান-সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ। সীমান্তে ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে তাদের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এর মধ্যেই জানা গেলো, ইসরাইলের দিকে দেড় লাখ রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ‘তাক করে রেখেছে’ হিজবুল্লাহ। ইসরাইলি বাহিনী গাজায় হামলা বন্ধ না করলে যে কোনো সময় আক্রমণ করা হবে বলেও সতর্ক করেছে তারা।
লেবানন থেকে শত শত কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার মতো প্রচুর রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে হিজবুল্লাহর হাতে। ছবি: সংগৃহীত
ল
হিজবুল্লাহ ইসরাইলের জন্য কী ধরনের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে কিংবা তাদের ভাণ্ডারে থাকা অস্ত্র ইসরাইলের জন্য কতটা হুমকির, সেসব বিষয় নিয়ে সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিশ্লেষণধর্মী এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে ইসরাইলি দৈনিক হারেৎজ। সেখানেই উঠে আসে রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের তথ্য।
ইরানের সহায়তায় ও সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ নেতৃত্বাধীন সরকারকে সহায়তার মাধ্যমে ব্যাপক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে হিজবুল্লাহ, যা কাজে লাগিয়ে গোষ্ঠীটি রকেটসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের মজুত বৃদ্ধি করেছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধে জড়ালে ‘বড় ভুল’ করবে হিজবুল্লাহ, নেতানিয়াহুর হুমকি
সাম্প্রতিক হিসাব অনুযায়ী, হিজবুল্লাহর কাছে প্রায় দেড় লাখ রকেট এবং ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে, যার বেশিরভাগই বহু দূরের লক্ষবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। লেবানন থেকে শত শত কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতেও আঘাত হানার মতো প্রচুর রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র গোষ্ঠীটির কাছে আছে বলে একাধিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে হারেৎজের সঙ্গে আলাপকালে ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের গবেষক দলের সদস্য শান শাইখ সতর্ক করে বলেছেন,
হিজবুল্লাহকে আরও অত্যাধুনিক এবং নিখুঁতভাবে আঘাত হানতে সক্ষম স্ট্যান্ডঅফ ক্ষেপণাস্ত্র দিতে পারে সিরিয়া, ইরান ও রাশিয়া। বিষয়টি উদ্বেগের।
ইনস্টিটিউট ফর ন্যাশনাল সিকিউরিটি স্টাডিজ প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহর কাছে বর্তমানে প্রায় ৪০ হাজার স্বল্প-পাল্লার রকেট, ইরানের তৈরি মাঝারি-পাল্লার ৮০ হাজার ফজর-৩, ফজর-৫, খাইবার ও রা’আদ রকেট রয়েছে। এছাড়াও দূরপাল্লার ৩০ হাজার জিলজাল রকেট ও ফাতেহ-১১০ (এম৬০০) ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইসরাইলে রকেট ছুড়লো হিজবুল্লাহ
ইসরাইলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ শুরুর প্রথম কয়েক দিনে ইসরাইলে কয়েক হাজার রকেট নিক্ষেপ করেছে হিজবুল্লাহ। প্রতিদিন দেড় হাজার করে রকেট ছোড়ার সক্ষমতা রয়েছে গোষ্ঠীটির। এছাড়া বিগত বছরগুলোতে নিখুঁতভাবে নিশানায় আঘাত হানতে সক্ষম অস্ত্র মজুত প্রকল্প জোরদার করেছে হিজবুল্লাহ।
অস্ত্র ভাণ্ডারের পাশাপাশি হিজবুল্লাহর কাছে রয়েছে বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের বিপুল মজুত। এছাড়া ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ও ভারী আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও রয়েছে হিজবুল্লাহর কাছে। এই ক্ষেপণাস্ত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে আকাশে থাকা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
বিশাল ক্ষেপণাস্ত্র ভাণ্ডারের পাশাপাশি হিজবুল্লাহ গত দুই দশকে নিজস্ব শক্তিশালী বাহিনী গড়ে তুলেছে, যার মূলে রয়েছে ইরানে এবং স্থানীয়ভাবে তৈরি বিভিন্ন ধরনের ড্রোন। ইসরাইলের আলমা রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন সেন্টারের ধারণা, হিজবুল্লাহর কাছে বিভিন্ন আকার ও সক্ষমতার প্রায় দুই হাজার ড্রোন রয়েছে।
আরও পড়ুন: আল-আকসা মসজিদে মুসলমানদের প্রবেশ বন্ধ করে দিলো ইসরাইল
হিজবুল্লাহর বিশেষ কমান্ডো ইউনিটও রয়েছে। ইসরাইলের সঙ্গে ‘রাদওয়ান বাহিনী’ নামে পরিচিত এই বাহিনীর যুদ্ধ করার সক্ষমতা আছে বলে মনে করা হয়। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, হামাসের মতো একইভাবে হামলা চালিয়ে ইসরাইলের সীমান্তবর্তী অনেক শহর ও গ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে গোষ্ঠীটি। রাদওয়ান বাহিনীর প্রায় আড়াই হাজার সদস্য রয়েছে বলে জানা যায়, যারা লেবানন এবং ইরানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
Tag: English News lid news world
No comments: