ফিলিস্তিনকে সমর্থনের বিষয়ে আফ্রিকায় কেন বিভক্তি
চলমান ইসরাইল-হামাস সংঘাত নিয়ে বিভক্ত আফ্রিকার দেশগুলো। কয়েক দশক আগেও নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বেশিরভাগ দেশের সমর্থন থাকলেও ধীরে ধীরে পাল্টাচ্ছে সে অবস্থা। নিজেদের স্বার্থরক্ষার জন্যই আফ্রিকার দেশগুলোর এ অবস্থান পরিবর্তন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তবে মহাদেশটির কয়েকটি দেশ এখনো ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরতার পরও দখলদার ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে জাম্বিয়া, ঘানা, মরক্কো, ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোসহ আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ। (প্রতীকী ছবি)
নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরতার পরও দখলদার ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে জাম্বিয়া, ঘানা, মরক্কো, ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোসহ আফ্রিকার বেশ কয়েকটি দেশ। (প্রতীকী ছবি)
ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে বিশ্বের প্রায় সব দেশেরই রয়েছে নিজ নিজ অবস্থান। ১৯৭০-এর দশকে ফ্রান্সসহ বিভিন্ন ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে আফ্রিকার অনেক দেশ।
এরপর এদের বেশিরভাগই ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে দ্ব্যার্থহীন সমর্থন জানায় নির্যাতিত ফিলিস্তিনের পক্ষে। যদিও দারিদ্রতা আর যুদ্ধ-সংঘাতে বিপর্যস্ত আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলোর অনেকেই নিজেদের দৈন্যদশার কারণে ধীরে ধীরে সরে এসেছে সেই অবস্থান থেকে।
গেল শনিবার (৭ অক্টোবর) ইসরাইলি ভূখণ্ডে রকেট হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এর জবাবে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তেল আবিব।
এরপরপরই উত্তেজনা সৃষ্টির জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকার। বর্ণবাদী আন্দোলনের পর নেলসন ম্যান্ডেলার হাত ধরে নিপীড়িত ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ফিলিস্তিনিদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে আরেক দেশ আলজেরিয়া।
আরও পড়ুন: হামাসের রহস্যময় সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্কেই কুপোকাত ইসরাইল!
যদিও এ ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে ইসরাইলের প্রতি সংহতি জানান কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটো। হামাসের কার্যক্রমকে ‘সন্ত্রাসবাদ’ বলে উল্লেখ করে এর নিন্দা জানান তিনি। নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরতার পরও দখলদার ইসরাইলের পক্ষ নিয়েছে জাম্বিয়া, ঘানা, মরক্কো, ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোসহ আফ্রিকার আরও বেশ কয়েকটি দেশ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকট নিয়ে ঐতিহাসিকভাবে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন থাকলেও আফ্রিকার দেশগুলোর এ বিভক্তির কারণ মূলত দেশগুলোর নিজ নিজ স্বার্থের বিষয়টি।
খরা-বন্যায় বিপর্যস্ত আফ্রিকার কৃষিখাতে বহুদিন ধরেই ব্যাপকভাবে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ইসরাইল। কৃষিতে আফ্রিকার দেশগুলোকে প্রযুক্তিগত সহয়তাও করছে তারা। এছাড়াও মিলছে সামরিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা। ইসরাইলের সাহায্য সংস্থা ‘মাশাভ’- এর মাধ্যমে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশকে শত শত কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে তেল আবিব।
এসব কারণেই ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিস্ময়করভাবে বদলে গেছে আফ্রিকার দেশগুলোর অবস্থান। আর অঞ্চলটিতে অবস্থান শক্তিশালী করছে ইসরাইল।
আরও পড়ুন: ইসরাইলের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দৌড়ঝাঁপ, সৌদির হুঁশিয়ারি
আফ্রিকার ৫৪টির মধ্যে ৪৪টি দেশই ইসরাইলকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তেল আবিবে দূতাবাস কিংবা কনস্যুলার অফিস রয়েছে প্রায় ৩০টি দেশের। যদিও অঞ্চলটিতে ইসরাইলের এত প্রভাব বিস্তারের পরও নিয়মিত চ্যালেঞ্জের মুখেও পড়তে হচ্ছে ইসরাইলকে। ২০২১ সালে আফ্রিকান ইউনিয়নকে পর্যবেক্ষকের মর্যাদা দেয়ার অনুরোধ জানায় ইসরাইল। তবে আলজেরিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার তীব্র বাধার মুখে তা প্রত্যাখ্যাত হয়
No comments: