ভেটো ক্ষমতা জাতিসংঘের সংস্কারে বড় বাধা মজলুম ও দুর্বলের সুরক্ষার যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে জাতিসংঘ গড়ে উঠেছিল, তা অধরাই থেকে গেছে। সফলতার চেয়ে বিশ্ব এ সংস্থাটির ব্যর্থতার পাল্লাই ভারী। বিশ্বে যুদ্ধ ও সংঘাত বন্ধ করে কার্যকর শান্তি প্রতিষ্ঠায় একে নতুন করে ঢেলে সাজানো এখন সময়ের দাবি। কিন্তু এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা এর তথাকথিত পরাশক্তি পাঁচ সদস্য দেশ ও তাদের ভেটো ক্ষমতা।
জাতিসংঘে যে কোন এক বা একাধিক দেশ কোন জোরালো প্রস্তাব আনলেও তার বিপক্ষে ভোট দিয়ে প্রস্তাবটিকে অচল করার ক্ষমতাই হচ্ছে ভেটো। আর এ ভেটো দেয়ার ক্ষমতা আছে কেবল নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্য রাষ্ট্রের। এ পাঁচ স্থায়ী সদস্যদের স্বার্থের বাইরে জাতিসংঘ কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পারে না। এর ফলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান হয় না। যেমন চীন ও রাশিয়ার ভেটোর কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যদের অসীম ক্ষমতার চর্চা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ী দেশগুলোর হাত ধরে ১৯৪৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতিসংঘ। বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মানবাধিকার রক্ষা এবং আন্তর্জাতিক আইন সমুন্নত রাখার নীতিগত ম্যান্ডেট নিয়ে যার যাত্রা শুরু। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ (ইউএনএসসি) হলো এর সবচেয়ে প্রভাবশালী অঙ্গ সংগঠন। বিশ্বে শান্তি বজায় রাখতেই এর প্রতিষ্ঠা। এর সিদ্ধান্তগুলো বাধ্যতামূলক এবং সদস্য ও অ-সদস্য উভয় রাষ্ট্রের জন্যই প্রযোজ্য। এ পরিষদে ১৫ জন সদস্য প্রত্যেকে নিজেদের মতামত দিতে পারেন। প্রত্যেকের ১টি করে ভোট প্রয়োগের ক্ষমতা রয়েছে। যখনই বিশ্বশান্তি বিপদের মুখে পড়ে, তখন সদস্য রাষ্ট্র ও আগ্রাসনের সাথে জড়িত পক্ষগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আগ্রাসন প্রতিরোধে করণীয় নির্ধারণ করতে উদ্যোগ নেয় নিরাপত্তা পরিষদ। ইউএনএসসি কখনও কখনও নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করে। তবে ইউএনএসসির স্থায়ী ৫টি দেশ বিশেষ অধিকার ভোগ করে। ভোটের ক্ষেত্রে এ পাঁচটি দেশ সে বিশেষ অধিকার প্রয়োগ করে। এ পাঁচটি দেশের কোনো একটা দেশ যদি কোনো প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়, তাহলে সেই প্রস্তাব রদ হয়ে যায়। নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য দেশের মধ্যে এ পাঁচটি স্থায়ী সদস্য। আর বাকি ১০টি অস্থায়ী সদস্য। স্থায়ী সদস্য দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া ও চীন। এ দেশগুলোর হাতে রয়েছে ভেটো ক্ষমতা। আরও পড়ুন: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জাতিসংঘের যে ক্ষমতা বলে তারা অধিবেশনে উত্থাপিত যেকোনো প্রস্তাব আটকে দিতে সক্ষম। তা সেই প্রস্তাবের পক্ষে যত বেশি সদস্য দেশই ভোট দিক না কেন, এই পাঁচটি দেশের যেকোনো একটি দেশ ভেটো দিলে তা আর একচুলও সামনে এগোবে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, বিশ্বের এ পাঁচ শক্তিশালী দেশ জাতিসংঘে অন্যান্য সদস্য দেশের তুলনায় ব্যতিক্রম ও অসীম ক্ষমতার চর্চা করছে। যেমনটা বলছেন প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ের অধ্যাপক ও ফিলিস্তিনি মানবাধিকার বিষয়ে জাতিসংঘের সাবেক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার রিচার্ড ফাল্ক। সম্প্রতি তুর্কি সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ডকে এক সাক্ষাৎকারে এ অধ্যাপক বলেন, ‘(জাতিসংঘ) স্থায়ী সদস্য দেশগুলোর ব্যতিক্রমী একটি ক্ষমতা রয়েছে, যা অন্যান্য দেশগুলোর নেই।’ রিচার্ড ফাল্ক আরও বলেন, নিরাপত্তা পরিষদের (ইউএনএসসি) স্থায়ী পাঁচ সদস্য রাষ্ট্রকে আলাদা ও একচেটিয়াভাবে ভেটো ক্ষমতা দেয়ার মানে হলো ‘তারা জাতিসংঘের কাছে দায়বদ্ধ নয়’। আর তাই আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের ব্যাপারেও তারা স্বাধীন। মাত্র পাঁচটি দেশের হাতে ভেটো ক্ষমতা থাকার বিপদগুলো তুলে ধরে ফাল্ক বলেন, ‘যেহেতু এ পাঁচটি দেশ আর সবচেয়ে প্রভাবশালী, সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করে না, তাই তাদের বিশেষ ক্ষমতার মাধ্যমে জাতিসংঘকে একটি অবৈধ সংস্থা বলে দৃষ্ট হয়। সুতরাং সংস্থার বৈধতা ও কার্যকারিতার বিচারে ভেটো একটি দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার।’ জাতিসংঘ তার পুরো ইতিহাসজুড়ে বড় মানবিক বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে ভালো কোনো সমাধান দিতে বারবার ব্যর্থ হয়েছে। গণহত্যা, জাতিগত নিধনযজ্ঞ ও গৃহযুদ্ধসহ বিশ্বজুড়ে চলমান সংঘাত ও নৃশংসতা প্রতিরোধে ব্যর্থতা ও অক্ষমতার জন্য প্রায়ই সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছে সংস্থাটি। ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে এর ভূমিকা নিয়ে নানা সময়ে প্রশ্ন ওঠেছে। এসব কিছুই ইঙ্গিত দেয় যে, জাতিসংঘের কাঠামোর মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। ফিলিস্তিনে ইসরাইলের দখলদারিত্ব: নিরাপত্তা পরিষদের বড় ব্যর্থতা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ইস্যু হচ্ছে ফিলিস্তিন সংকট। গত প্রায় ৮ দশক ধরে এ নিয়ে কাজ করছে জাতিসংঘ। কিন্তু সুনির্দিষ্ট বেশ কয়েকটি সমস্যা মিমাংসা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এর মধ্যে ফিলিস্তিন সংকটের কোনো সমাধান করতে না পারা এর সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। জাতিসংঘ নিজেকে ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধানের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার দাবি করে আসলেও তারা সমস্যার কোনো সমাধান দিতে পারেনি। বরং সংস্থাটির হাতে সংকট আগের চেয়ে আরও জটিল হয়েছে। ফিলিস্তিন সংকটের শুরু ১৯২০-এর দশকে। ১৯৪৭ সালে সংকটের তথাকথিত একটি ‘সমাধান’ দেয় জাতিসংঘ। ‘পার্টিশন প্লান ফর প্যালেস্টাইন’র অধীনে ফিলিস্তিনকে ভাগ করা হয়। মোট জনসংখ্যার দুই তৃতীয়াংশ আরব জাতিগোষ্ঠীর হলেও ফিলিস্তিনি জমির ৫৫ শতাংশই দেয়া হয় জবরদখলকারী ইহুদিদের। সেই দখলকৃত জমির ওপর ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয় ইসরাইল। বাকি অংশ তথা ৪৫ শতাংশ ফিলিস্তিনিদের দেয়া হলেও তা কার্যত আর তাদের নেই। গত সাত দশকে আস্তে আস্তে দখল করে নিয়ে ইসরাইল। অসহায় ফিলিস্তিনিদের জমি দখল করে বসতি স্থাপন অব্যাহত রয়েছে। আর এক্ষেত্রে ইসরাইলকে প্রত্যক্ষভাবে সমর্থন করছে জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র। আজ ফিলিস্তিন বলতে গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরের শুধু দুই টুকরা জমি অবশিষ্ট আছে। এরপরও প্রতিনিয়ত গাজা ও পশ্চিম তীরে বোমা নিক্ষেপ করছে ইসরাইলি বাহিনী। ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দিচ্ছে, তাদের অবরুদ্ধ করছে, তাদের সন্তানদের পঙ্গু করে দিচ্ছে। এমনকি অমানবিকভাবে ত্রাণকাজেও বাধা দিচ্ছে। অথচ এ বিষয়ে জাতিসংঘের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেই। আরও পড়ুন: মিয়ানমারে অস্ত্র বিক্রি বন্ধে জাতিসংঘের আহ্বান অধ্যাপক ফাল্কের মতে, ইসরাইল নয়, ফিলিস্তিনিরা সবচেয় বড় ও ধ্বংসাত্মক আঘাতটা পেয়েছে জাতিসংঘ থেকে। আর সেই আঘাতটি হচ্ছে, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে কোনোরূপ পরামর্শ ছাড়াই’ ফিলিস্তিনকে দ্বিখণ্ডিত করার ব্যাপারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত। ফাল্কের কথায়, ‘ফিলিস্তিনের বিভাজনই ছিল ‘ফিলিস্তিনি জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন যা তারা দেশটির প্রধান জাতিগোষ্ঠী হিসাবে হাজার হাজার বছর ধরে বসবাস করছে।’ অধ্যাপক ফাল্ক আরও বলেন, ‘জাতিসংঘ শুধুমাত্র ফিলিস্তিনিদের আত্ম-নিয়ন্ত্রণের অধিকার বাস্তবায়নেই ব্যর্থ হয়নি, বরং সংস্থাটি তার নিজস্ব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। যে পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনিদের নিজস্ব একটি রাষ্ট্র দেয়ার প্রতিশ্রুতি ছিল।’ নিরাপত্তা পরিষদ জাতিসংঘের কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করছে? সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় জাতিসংঘের ব্যর্থতা ও বিতর্কিত আচরণ আরও একবার স্পষ্ট হয়। যা বিশ্বের অনেককেই হতাশ করেছে। কারণ দেশটির সাধারণ মানুষ মানবিক বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য সংস্থাটি কোনো ভূমিকা কার্যত রাখতে পারেনি। এর আগে লিবিয়া ও ইরাকে জাতিসংঘের কোনো ভূমিকাই দেখা যায়নি। যদিও যুদ্ধ ও সংঘাত থেকে মানুষকে রক্ষার অঙ্গীকারই ছিল জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ভিত্তি। গত বছর ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হয় এবং এরপর গত প্রায় দেড় বছর ধরে তা অব্যাহত রয়েছে। যার প্রভাবে টালমাটাল হয়ে উঠেছে বিশ্ব। কিন্তু কিছু বক্তব্য ও বিবৃতি ছাড়াও জাতিসংঘের তেমন কোনো কর্মকাণ্ড চোখে পড়ছে না। এমন পরিস্থিতিতে অনেকেরই প্রশ্ন, বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ কি তার ভূমিকা পালন করতে পারছে। এমন প্রশ্নের ব্যাপারে অধ্যাপক ফাল্কের বক্তব্য স্পষ্ট। তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ এখন বড় এক হতাশার নাম। কারণ এটি এখন আর সেসব মূল্যবোধ ও লক্ষ্য পূরণ করছে বলে মনে হচ্ছে না যে মূল্যবোধ ও লক্ষ্য বাস্তবায়নে এর প্রতিষ্ঠা। নিরাপত্তা পরিষদ তথা ইউএনএসসি জাতিসংঘের কার্যনির্বাহক সমিতি বলা যেতে পারে। বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও নিরাপত্তা রক্ষার মূল দায়িত্ব এই নিরাপত্তা পরিষদের ওপর অর্পিত। এর এমন বিশেষ কিছু ক্ষমতা ও তা অনুশীলনের কর্তৃত্ব রয়েছে যা বিশ্বের আরও কোনো সংস্থার নেই। তবে সেই ক্ষমতা চর্চার জন্য একটা মেকানিজম তথা কার্যকর ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা অপরিহার্য। কিন্তু তেমন কোনো ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। অধ্যাপক ফাল্ক বলছেন, ‘যথাযথ তদারকি ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে নিরাপত্তা পরিষদ এখন এক ‘অতিকায় দানব’-এ পরিণত হয়েছে। এখন এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে যার বেশিরভাগই যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত। তাতে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। নোংরা দর কষাকষিও জড়িত। সাধারণ পরিষদের কাছে জবাবদিহি করার মতো কোনো দায়বদ্ধ কাউন্সিলও নেই।’ আরও পড়ুন: স্কুলে স্মার্টফোন নিষিদ্ধের আহ্বান জাতিসংঘের ফাল্ক বলেন, ‘আরেকটি সমস্যা হল নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিত্ব অনুপাত, যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম। পাঁচটি স্থায়ী সদস্য, যা ১৯৪৫ সালে তথা জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার শুরুতে সেই সময় সদস্য দেশগুলোর ১০ শতাংশ প্রতিনিধিত্ব করত, এখন কেবল মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশের প্রতিনিধিত্ব করে। বিশ্বের জনসংখ্যা এখন ৮০০ কোটি, যেখানে ২০০ কোটি মুসলিম, সেখানে নিরাপত্তা পরিষদে মুসলিমদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই।’ ফাল্কের প্রশ্ন, এ পাঁচ স্থায়ী সদস্য যদি শান্তি ও নিরাপত্তার বিরুদ্ধে কাজ করে তাহলে ফলাফল কী হবে? নিজেই এ প্রশ্নের জবাব দিয়ে তিনি বলেন, ‘তখন জাতিসংঘের কার্যক্ষমতাই অদৃশ্য হয়ে যায়। তার মানে হলো স্থায়ী সদস্য দেশগুলো সব আন্তর্জাতিক আইনের ঊর্ধ্বে।’Slider
দেশ - বিদেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: