মণিপুর কাণ্ড নগ্ন করে ঘোরাতে বাধা দেয়ায় নারীর ছোট ভাইকে হত্যা

মণিপুর কাণ্ড নগ্ন করে ঘোরাতে বাধা দেয়ায় নারীর ছোট ভাইকে হত্যা ভারতের মণিপুরে দুই নারীকে ধর্ষণের পর নগ্ন করে ক্যামেরার সামনে রাস্তায় ঘোরানোর ঘটনা ঘটেছে। এমনকি এতে বাধা দেয়ায় ধর্ষণের শিকার একজনের কিশোর ভাইকে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। মণিপুর সহিংসতা। ছবি: সংগৃহীত

গত ৩ মে মণিপুরে সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগোষ্ঠী মেইতেইকে তফসিলি আদিবাসী ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে বিক্ষোভের সূত্র ধরে রাজ্যে কুকি সম্প্রদায়ের সঙ্গে জাতিগত সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে মেইতেইরা। জাতিগত সংঘাত শুরুর মাত্র একদিন পর এই ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষণের শিকার ওই দুই নারী মূলত তাদের পরিবারের সঙ্গে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। এর মধ্যে একদল লোক খবর পায়, তাদের গোষ্ঠীর দুই নারী ধর্ষিত হয়েছে এবং তাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি যাচাই না করেই ওই দলটি পালিয়ে যাওয়া পরিবারের পিছু ধাওয়া করে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, ওই দলটির পাঁচ সদস্যের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং তিনজন নারী। দুজন পুরুষের মধ্যে একজনের বয়স ৫৬ বছর, তার ছেলের বয়স ১৯ বছর। তার মেয়ের বয়স ২১ বছর। এছাড়া অন্য দুই নারীর বয়স যথাক্রমে ৪২ ও ৫২ বছর। আরও পড়ুন: সরকার ব্যবস্থা না নিলে আমরা নেব, মণিপুরের ঘটনায় প্রধান বিচারপতি পুলিশের দায়ের করা এফআইআরে বলা হয়েছে, দলটি যখন বলের দিকে যাচ্ছিল তখন তাদের সঙ্গে নঙপোক সেকমাই পুলিশ স্টেশনের কয়েক সদস্যের দেখা হয়। সেকমাই পুলিশ স্টেশন থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দুরে পাঁচজনের ওই দলটিকে দেখতে পায় প্রায় ৮০০ থেকে ১ হাজার জনের একদল জনতা। পরে তারা পুলিশের কাছ থেকে ওই পাঁচ জনকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সে সময় জনতার হাত থেকে ২১ বছর বয়সী বোনকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে ১৯ বছর বয়সী ভাইকে হত্যা করা হয়। পুলিশের কাছে ভুক্তভোগী ওই দুই নারীর আত্মীয়-স্বজনদের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, নগ্ন করে ঘোরোনোর আগে তাদের একজনকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। প্রায় এক মাস পর বুধবার (১৯ জুলাই) ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে এ নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। আরও পড়ুন: মণিপুরের যে ঘটনায় ভারতজুড়ে তোলপাড় বৃহস্পতিবার সংসদের বাদল অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মণিপুরের ঘটনা মেনে নেয়া যায় না। এটা ভারতের জন্য লজ্জাজনক ঘটনা। যে কোনো সভ্য সমাজের পক্ষে মণিপুরের ঘটনা মেনে নেয়া সম্ভব নয়।’ এছাড়া মণিপুরের ঘটনায় কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেছেন, যদি সরকার এ ব্যাপারে পদক্ষেপ না নেয় তাহলে সুপ্রিম কোর্ট ব্যবস্থা নেবে।