ফিলিপিন্সের উত্তরাঞ্চলে সুপার টাইফুন ‘ডকসুরি’র তাণ্ডব
ফিলিপিন্সের উত্তরাঞ্চলে আঘাত হেনেছে সুপার টাইফুন ‘ডকসুরি’। আঘাত হানার পর রীতিমতো তাণ্ডব চালিয়েছে ঘূর্ণিঝড়টি। এতে এখন পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া ওই অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
টাইফুন ‘ডকসুরি’র প্রভাবে ফিলিপিন্সের উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক বন্যা দেখা দিয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
চলতি সপ্তাহে প্রশান্ত মহাসাগরে তৈরি হয় প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি। এরপর এটি সুপার টাইফুনে রূপ নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপিন্স ও তাইওয়ানের উপকূলের দিকে ধেয়ে আসতে থাকে।
ঘূর্ণিঝড়টির মোকাবিলায় আগে থেকেই ব্যাপক প্রস্তুতি নেয় ফিলিপিন্স কর্তৃপক্ষ। উপকূলীয় অঞ্চল থেকে ১২ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়।
ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন মতে, শক্তিশালী টাইফুনটি মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) রাত ৩টার দিকে ফিলিপিন্সের উত্তরাঞ্চলে ফুগা দ্বীপে আছড়ে পড়ে। এ সময় ঘণ্টায় এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ১৭৫ কিলোমিটার। এরপর এটি ওই অঞ্চলের ছোট ছোট কয়েকটি দ্বীপ এলাকায় তাণ্ডব চালায়।
আরও পড়ুন: ফিলিপিন্স ও তাইওয়ানের দিকে ধেয়ে আসছে সুপার টাইফুন ‘ডকসুরি’
প্রতিবেদন মতে, ওই অঞ্চলের বহু ঘরের চাল উড়ে গেছে। ফলে হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। ঝড়ের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতে নিম্ন এলাকার গ্রামগুলোতে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। টাইফুনের আঘাতে লুজোন এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বহু গাছপালা ভেঙে পড়েছে।
উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কাগায়নের গভর্নর ম্যানুয়েল মাম্বা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমাদের উপকূলীয় শহরগুলো ব্যাপকভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থা বিভাগ জানিয়েছে, ঝড়ের প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় রিজাল প্রদেশে পানি ডুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ফিলিপিন্স কোস্ট গার্ডের মতে, সমুদ্র ভ্রমণ বাতিল করায় বন্দর এলাকাগুলোতে চার হাজারের বেশি যাত্রী আটকে পড়েছেন।
প্রশান্ত মহাসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড়কে 'টাইফুন' বলা হয়। চীন, তাইওয়ান, ফিলিপিন্স ও জাপানে প্রায় প্রতিবছর একাধিক টাইফুন আঘাত হানে। সিএনএনের এক প্রতিবেদন মতে, প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট টাইফুনটির নামকরণ করা হয় ‘ডকসুরি’। চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকেই আবহাওয়াবিদরা এটিকে ‘সুপার টাইফুন’ হিসেবে অভিহিত করেন।
আরও পড়ুন: চীনে তালিমের আঘাতে ঘর ছাড়া ২ লক্ষাধিক মানুষ
প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্টি হওয়ার পর ডকসুরির কেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতি ছিল ১৫০ মাইল তথা ২৪০ কিলোমিটার। তবে মঙ্গলবার রাতে ফিলিপিন্সে আঘাত হানার পর এটি অনেকটা দুর্বল হয়ে এখন তাইওয়ান ও চীনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে তাইওয়ানে এরই মধ্যে প্রায় ৫০টি অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ও চারটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ প্রধান বন্দরনগরী কাওশিউংসহ দক্ষিণ তাইওয়ানের বেশ কয়েকটি এলাকায় সতর্কতা জারি করেছে।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় চীন সতর্ক সংকেত ২ নম্বর থেকে বাড়িয়ে ৩ নম্বরে আপগ্রেড করেছে। দেশটির জাতীয় আবহাওয়া কেন্দ্র ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করেছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে দক্ষিণ-পূর্ব চীনে ‘ল্যান্ডফল’ তথা আঘাত হানতে পারে ডকসুরি।
Tag: English News lid news others world
No comments: