Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » আসন্ন বিশ্ব খাদ্যসঙ্কট, কারা আক্রান্ত হবে বেশি?




আসন্ন বিশ্ব খাদ্যসঙ্কট, কারা আক্রান্ত হবে বেশি? গত বছর ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর মধ্য দিয়ে ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলে যে সংঘাতের শুরু, তার উত্তাপে শুধু ইউরোপেই নয়, ছড়িয়ে পড়েছে বাকি বিশ্বেও। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই সংঘাতের কারণে সৃষ্ট খাদ্য সঙ্কট বিশ্বের কোটি কোটি ক্ষুধার্ত মানুষের জীবন মরণের প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আসন্ন বিশ্ব খাদ্যসঙ্কট, কারা আক্রান্ত হবে বেশি? রাইসুল ইসলাম

৫ মিনিটে পড়ুন ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরুর পর ওডেসাসহ ইউক্রেনের বন্দরগুলো অবরোধ করে রাখে রুশ বাহিনী। এতে বন্ধ হয়ে যায় ইউক্রেনের খাদ্য রপ্তানি। দেশটিতে আটকা পড়ে তিন কোটি টনেরও বেশি খাদ্যশস্য। বাকি বিশ্বের ওপর যার প্রভাব হয় মারাত্মক। বিশ্বজুড়ে আকাশচুম্বী হয়ে পড়ে খাদ্যের দাম। দেশে দেশে দেখা দেয়, খাদ্যদ্রব্যের মূল্যস্ফীতি। বিশ্বজুড়ে খাদ্যের দাম বেড়ে যায় কমবেশি ৫০ শতাংশ। সবচেয়ে বিপদে পড়ে এশিয়া ও আফ্রিকার দরিদ্র দেশগুলো। জাতিসংঘ ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় শস্যচুক্তি যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যাপকভাবে ঝুঁকির মুখে পড়লে সঙ্কট উত্তরণে এগিয়ে আসে তুরস্ক ও জাতিসংঘ। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোগানের ব্যক্তিগত প্রচেষ্টা ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় শেষ পর্যন্ত কৃষ্ণ সাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানির ওপর বাধা তুলে নেয় রাশিয়া। মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে হওয়া “দি ইনিশিয়েটিভ অন দি সেফ ট্রান্সপোর্টেশন অব গ্রেইন অ্যান্ড ফুডস্টাফস ফ্রম ইউক্রেনিয়ান পোর্টস” বা সংক্ষেপে ব্লাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ নামে অভিহিত এই চুক্তিতে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে শামিল ছিলো তুরস্ক ও জাতিসংঘ। প্রথমে মাত্র ১২০ দিনের জন্য স্বাক্ষর হয় এই চুক্তি, যার বাস্তবায়ন শুরু হয় গত বছরের ২২ জুলাই থেকে। তবে একই বছরের ১৮ নভেম্বর চুক্তিটির মেয়াদ আরও ১২০ দিন বাড়ানো হয়। যা শেষ হয় চলতি বছরের ১৭ মার্চ। রাশিয়ার আপত্তিতে সেবার এই চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয় মাত্র ৬০দিন। গত ১৭ জুলাই শেষ হয় এই ৬০ দিনের মেয়াদ। এরপরই পুরোপুরি চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয় রাশিয়া। গত বুধবার (১৯ জুলাই) রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ইউক্রেনের কৃষ্ণ সাগরীয় এলাকায় থাকা সব জাহাজকেই সামরিক লক্ষ্যবস্তু হিসেবে বিবেচনা করা হবে। আরও পড়ুন: বিশ্বে তীব্র খাদ্য সংকটে ভুগছে ৭৩ কোটিরও বেশি মানুষ শস্য চুক্তি থেকে রাশিয়ার সরে যাওয়ার প্রভাব এই চুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য ছিলো, ইউক্রেনে আটকা পড়া বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য রপ্তানির ব্যবস্থা করে বিশ্বের খাদ্য সঙ্কট দূর করা। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর বিশ্বজুড়ে বেড়ে যাওয়া খাদ্যপণ্যের দাম কমিয়ে আনতে গত এক বছরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই “ব্লাক সি গ্রেন ডিল”। তবে সোমবার চুক্তি থেকে রাশিয়ার সরে দাঁড়ানোর ঘোষণার পরপরই বিশ্বজুড়ে বেড়ে যায় খাদ্য শস্যের দাম। একদিনের ব্যবধানেই টনপ্রতি গমের দাম বেড়ে যায় ১৫ থেকে ২০ ডলার। বর্তমানে প্রতি টন গম বিক্রি হচ্ছে গড়ে ২৫০ ডলারে। গত বছর যুদ্ধ শুরুর পর এই দাম উঠে গিয়েছিলো ৪২০ ডলারে। এখন শস্য চুক্তি নবায়ন না হওয়ায় এই দাম ফের পূর্বের অবস্থায় পৌঁছানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিবিসির দেয়া তথ্য অনুযায়ী, শস্য চুক্তি বাতিল হওয়ার পর বুধবার ইউরোপের বাজারে গমের দাম আগের দিনের থেকে ৮ দশমিক ২ শতাংশ ও ভুট্টার দাম বেড়ে গেছে সাড়ে ৫ শতাংশ। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রে পাইকারি গমের বাজারে দাম বেড়ে গেছে ৮.৫ শতাংশ। কেন চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ালো রাশিয়া গত সোমবার চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন সতর্ক করে বলেছিলেন, রাশিয়ার খাদ্য ও সার রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না করা হলে মস্কো এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসবে। রাশিয়ার অভিযোগ, ইউক্রেন শুধু ধনী দেশগুলোকেই খাদ্য দিচ্ছে। দরিদ্র দেশগুলো এখনও খাদ্য ঝুঁকিতে ভুগছে। অথচ চুক্তিতে বলা হয়েছিল, ইউক্রেন এমন দেশগুলোকে শস্য রপ্তানিতে প্রাধান্য দেবে যারা দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে আছে। কিন্তু এর বদলে তারা তাদের ইউরোপীয় মিত্র দেশগুলোকে খাদ্য সরবরাহ করে যাচ্ছে। তবে চুক্তি নবায়নের জন্য রুশ প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি লিখেছিলেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শস্য চুক্তি বাতিলের প্রভাবে খাদ্য সঙ্কটে স্বল্পোন্নত দেশগুলো গত মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, বিশ্ব বর্তমানে গত ৭০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে জটিল ক্ষুধা ও মানবিক সঙ্কটের মুখোমুখি। খাদ্য সঙ্কট ও দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত দেশগুলোতে সংস্থাটির চালানো খাদ্য সহায়তা কার্যক্রমের অন্যতম শস্য সরবরাহকারী ইউক্রেন। আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেনের জনগণের জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির সরবরাহ করা ৭ লাখ ২৫ হাজার টন গমও সরবরাহ করা হয় ইউক্রেন থেকে। আরও পড়ুন: জাপানের ১০ অঞ্চলের খাদ্য আমদানিতে চীনের নিষেধাজ্ঞা এই চুক্তি ভণ্ডুল হওয়ায় খাদ্য এসব দেশে খাদ্য সঙ্কট আরও প্রকট হবে বলে জানিয়েছে কেয়ার ও সেভ দ্যা চিলড্রেনের মতো সাহায্য সংস্থাগুলো। সেভ দ্যা চিলড্রেন জানিয়েছে, এই চুক্তি নবায়ন না হওয়া আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের খাদ্য সঙ্কটে থাকা শিশুদের জন্য মারাত্মক একটি আঘাত। ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির দেয়া তথ্যমতে, পূর্ব আফ্রিকার ৮০ শতাংশ খাদ্য শস্যের আমদানি রাশিয়া ও ইউক্রেনের ওপর নির্ভরশীল। এই মুহূর্তে এই অঞ্চলের ৫ কোটি লোক অনাহারের সম্মুখীন। খাদ্যে সঙ্কট মোকাবেলায় কৃষ্ণসাগরে ইউক্রেনের বন্দর কেন গুরুত্বপূর্ণ? ইউক্রেনকে বলা হয়, বিশ্বের রুটির ঝুড়ি। রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডার পরপরই বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম গম রপ্তানিকারক দেশটি। শুধু গমই নয়, সূর্যমুখী তেল, বার্লি, ভুট্টারও অন্যতম শীর্ষ উৎপাদক ও রপ্তানিকারক ইউক্রেন। বিশ্বের গমের বাজারের দশ শতাংশ, ভুট্টার ১৫ শতাংশ এবং বার্লির ১৩ শতাংশ সরবরাহকারী ইউক্রেন। লেবানন, পাকিস্তান, লিবিয়া ও ইথিওপিয়ার মত দেশগুলোর অধিকাংশ গমই আমদানি হয় ইউক্রেন থেকে। আরও পড়ুন: শস্য চুক্তি নিয়ে রাশিয়ার সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়বে কোটি কোটি মানুষ: জাতিসংঘ মূলত কৃষ্ণসাগরে অবস্থিত নিজেদের বন্দরগুলো দিয়েই খাদ্য শস্য রপ্তানি করে থাকে দেশটি। গত বছরের জুলাই মাসে এই চুক্তির পর এসব বন্দর দিয়ে ইউক্রেন থেকে বিশ্বের ৪৫টি দেশে ৩৩ মিলিয়ন টন খাদ্য শস্য রপ্তানি হয়। যার অধিকাংশেরই গন্তব্য ছিলো স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো। এশিয়ার ওপর শস্য চুক্তি বাতিলের প্রভাব জাপানের নিক্কি এশিয়াকে সুমিতোমো কর্পোরেশন গ্লোবাল রিসার্চ-এর চিফ ইকোনোমিস্ট তাকায়ুমি হোমা বলেন, কৃষ্ণসাগরের শস্য চুক্তি বাতিলের প্রভাবে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় খাদ্য সঙ্কট তৈরি হবে। ভবিষ্যতে এশিয়ার দেশগুলোও এতে আক্রান্ত হবে। এশিয়ার খাদ্য পরিস্থিতির ওপর ইউক্রেনের এই শস্য চুক্তি বাতিলের প্রভাব আরও ব্যাপকভাবে পড়ার পেছনে রয়েছে জলবায়ু সঙ্কট এল নিনোর আঘাত। ইতোমধ্যেই থাইল্যান্ডসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশের ওপর এল নিনোর প্রভাব দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় বিশ্বের অন্যতম চাল রপ্তানিকারক থাইল্যান্ডে এবার উৎপাদন ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply