মানহানি মামলায় ট্রাম্পকে ‘ইমিউনিটি’ দেয়ার সুযোগ নেই
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জিন ক্যারলের দায়ের করা মানহানি মামলায় ‘ইমিউনিটি’ দেয়ার সুযোগ নেই। ফলে যৌন সহিংসতার অভিযোগ এনে দায়ের করা মামলাটি আগামী জানুয়ারিতে আবারও নতুন করে শুরু করা যাবে। মার্কিন বিচার বিভাগ বা ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জিন ক্যারল। ছবি: সিএনএন
ড
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের এ সিদ্ধান্তে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এ মামলা চালিয়ে নেয়াতে আর কোনো আইনি বাধা থাকলো না।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন লেখিকা ই জিন ক্যারল। সে সময় ট্রাম্প মামলাটির বিষয়ে এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, তিনি মামলাকারীকেই চেনেনই না এবং তিনি তার পছন্দের মতো কেউ নন।
ট্রাম্প এবং ক্যারলের আইনজীবীদের কাছে লেখা পৃথক চিঠিতে জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ক্যারল যখন মামলা দায়ের করেছিলেন, তখন ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই মামলার বিষয়বস্তু অস্বীকার করার ক্ষেত্রে তার নিজের সরকারি ক্ষমতা ব্যবহার করেননি, তার পর্যাপ্ত প্রমাণ তাদের কাছে নেই।
আরও পড়ুন: ধর্ষণ মামলায় ট্রাম্পের বিচার শুরু, শুনানিতে যা বললেন ক্যারল
অথচ এর আগে ট্রাম্প এবং জো বাইডেন উভয় প্রেসিডেন্টের আমলেই জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছিল, ২০১৯ সালে যখন ক্যারল মামলা দায়ের করেন তখন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নিজের ক্ষমতার মধ্যে থেকেই আচরণ করেছিলেন। তখন বিষয়টি এমন দাঁড়িয়েছিল যে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভুয়া মামলা দায়ের করায় উল্টো জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের বিরুদ্ধেই মামলা হবে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে বিষয়টি আবারও ট্রাম্পের বিপক্ষে চলে গেল।
বর্তমানে ক্যারলের বয়স ৭৯ বছর। প্রবীণ এ নারীর দাবি, নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি ম্যানহাটনের ফিফথ অ্যাভিনিউতে একটি বিলাসবহুল ডিপার্টমেন্ট স্টোরে তাকে যৌন নির্যাতন করেন ট্রাম্প। তার অভিযোগ, ট্রাম্প নারীদের অন্তর্বাস উপহার দেয়ার বিষয়ে পরামর্শ চাওয়ার নাম করে একটি পোশাক পরিবর্তন করার কক্ষে (ট্রায়াল রুমে) ক্যারলকে ডেকে নিয়ে যান এবং সেখানেই তাকে ধর্ষণ করেন।
ক্যারলের আইনজীবী শন ক্রাউলি ম্যানহাটন আদালতকে বলেন, ‘ট্রায়াল রুমে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর ক্যারলের সঙ্গে জোরজবরদস্তি শুরু করেন ট্রাম্প। ট্রাম্পের জোরের কাছে পেরে ওঠেননি ক্যারল।’ ২০১৯ সালে নিউ ইয়র্কের একটি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রথম মুখ খোলেন ক্যারল।
বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে ক্যারল ‘মিথ্যা’ কথা বলছেন বলে দাবি করেন ট্রাম্প। রিপাবলিকান নেতা ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট এ দাবিও করেন যে, ক্যারলের সঙ্গে তার কখনও দেখাই হয়নি।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের অভিযোগকে ‘হাস্যকর গল্প’ আখ্যা দিলেন ট্রাম্প
এরপরই ক্যারল ২০১৯ সালে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। কিন্তু বহু বছর পর অভিযোগ করার কারণে ধর্ষণের মামলা রুজু করতে পারেননি। কিন্তু গত বছরের নভেম্বরে নিউইয়র্কে নতুন একটি আইন কার্যকর হওয়ায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেন ক্যারল।
শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে মুখ না খুলতে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেয়ার অভিযোগে সম্প্রতি গ্রেফতার হন ট্রাম্প। যদিও সঙ্গে সঙ্গে জামিন পেয়ে যান তিনি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আইন মতে, শেষ পর্যন্ত সব কটি অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলে ১৩৬ বছর পর্যন্ত জেলে কাটাতে হতে পারে ট্রাম্পকে।
তবে তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ ও বিচারকে প্রত্যাখ্যান করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলছেন, আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়া বাধাগ্রস্ত করতে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থিতার দৌড়ে সামনের সারিতে থাকা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
No comments: