Sponsor



Slider

দেশ - বিদেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » কংগ্রেসম্যানদের চিঠি: অসত্য, বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানোর অপকৌশল




কংগ্রেসম্যানদের চিঠি: অসত্য, বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানোর অপকৌশল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, সরকারকে চাপে রাখতে ষড়যন্ত্রও তত বাড়ছে। কেবল দেশের ভেতরেই না, বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে সেই ষড়যন্ত্রের জাল। তারই অংশ হিসেবে সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে একটি চিঠি লিখেছেন ছয় কংগ্রেসম্যান। এতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের প্রতি নিপীড়নসহ বিভিন্ন মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মার্কিন কংগ্রেস। ছবি: সংগৃহীত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘চিঠিতে দেয়া তথ্য যেমন সত্য না, তেমনই সেটির ভাষাও কূটনৈতিক শিষ্টাচারসুলভ না, বরং অশালীন। এতে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেয়া হয়েছে। চিঠির ভাষাও খুবই দুর্বল।’ বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে অর্থের বিনিময়ে এ চিঠি দেয়া হয়েছে বলে তারা অভিযোগ করেন। তারা বলেন, এমন ঘটনা নতুন না, বরং অনেক আগে থেকেই তারা সরকারকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। বিশ্লেষকরা আরও বলেন, যে ছয় কংগ্রেসম্যান এ চিঠি লিখেছেন, তারা এর আগে কখনও বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেননি। লবিস্ট নিয়োগ করে তাদেরকে দিয়ে এ চিঠি লেখানো হয়েছে। এমনকি ছয় কংগ্রেসম্যানের মধ্য থেকে মাত্র একজন তাদের এ চিঠি নিজস্ব ওয়েবসাইটে আপ করেছেন। অর্থাৎ চিঠিকে তারা সবাই গুরুত্বসহকারে নেননি। আরও পড়ুন: দায়িত্বের বাইরে কাজ করলে রাষ্ট্রদূতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এর আগে তারা কখনও বাংলাদেশের ভালো-মন্দ নিয়ে কথা বলেননি। কিন্তু প্রথম চিঠিতেই তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন বলে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকেরা। গেল ২৫ মে চিঠিটি হোয়াইট হাউসে পাঠানো হযেছে। সোমবার (৫ জুন) এ প্রতিবেদন লেখার আগ পর্যন্ত কংগ্রেসম্যান বব গুড ছাড়া বাকিরা এটি নিজস্ব ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করেননি। মানহীন চিঠির ভাষা কূটনৈতিক শিষ্টাচারসুলভ না চিঠির ভাষাকে অশালীন বলে উল্লেখ করে গবেষক ও সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত বলেন, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে যখন যুদ্ধাপরাধের দায়ে কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় হয়েছিল, তখন সেই ফাঁসি কার্যকরের আগে যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন দিয়েছিলেন, যাতে এ রায় কার্যকর করা না হয়। শেখ হাসিনাকে কেরি বলেন, ‘আপনি এ ফাঁসির দণ্ড স্থগিত রাখেন। যদি তা না-করেন, তাহলে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি যে নির্বাচন হবে, তাতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।’ যুক্তরাষ্ট্র এটা নতুন করছে না। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দণ্ড কার্যকর স্থগিত করার জন্য আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। অজয় দাশগুপ্ত বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে লবিস্ট নিয়োগ করা যায়। যে কোনো দেশ বা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান এ লবিস্ট নিয়োগ করতে পারেন এবং তাতে সত্যতার কোনো প্রতিফলন ঘটে না। তিনি বলেন, কংগ্রেসম্যানরা হলেন মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য। সিনেট হচ্ছে উচ্চকক্ষ। তাদেরকে পয়সা দিয়ে যেকোনো কথা বলিয়ে নেয়া যায়। তারা সবসময় যে ন্যায়ের পক্ষে কথা বলবে, তা কিন্তু না। আরও পড়ুন: বিদেশিদের কাছে ধরনা দিয়ে কোনো লাভ নেই: হানিফ ‘সিনেটররা যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং তাদের যে ভাষা তাও কূটনৈতিক শিষ্টাচারসুলভ না। চিঠিতে এমন কিছু শব্দ ও বাক্য আছে, যা অন্য দেশের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায় না—অনুচিত। কূটনৈতিক ভাষা, রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে দরখাস্তের ক্ষেত্রে আমরা যা করি, সেগুলোতেও কিন্তু এটা হয় না,’ যোগ করেন তিনি। বীর এ মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, গণতন্ত্র, সংবাদপত্র ও বাক স্বাধীনতা না থাকলে বাংলাদেশের ভেতর থেকেও তা বলা যেতে পারে। কিন্তু তারা বিদেশিদের দিয়ে বলিয়েছে। বাংলাদেশে কথা বলার অধিকার যে আছে, তার বড় প্রমাণ হচ্ছে তাদের বক্তব্য বাংলাদেশের টেলিভিশনেও প্রচার হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্রেও প্রচার হয়েছে। অজয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘কাজেই কথা বলার অধিকার নেই বলে যে দাবি তারা করেছে, সেটা কিন্তু সঠিক না। গণতান্ত্রিক অধিকার আছে বলেই..। এই যে তারা বলেছে নিপীড়নের কথা, কয়েকদিন আগেই গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপক ও নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে, হয়রানি করা হচ্ছে - এ রকম একটি বিবৃতি দিয়েছিল চল্লিশজন মিলে। বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রভাবশালী পত্রিকায় বিজ্ঞাপন হিসেবে তা প্রকাশ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, দেখা গেল যে, ড. ইউনূস নিজে কর ফাঁকি দিয়েছেন, যা তিনি নিজে স্বীকারও করে নিয়েছেন, সেই মামলাকে হয়রানি হিসেবে বলা হয়েছে। একজন বিশিষ্ট পরিচিত ব্যক্তি, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, তিনি কর ফাঁকি দিয়েছেন, যে জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেই মামলাকে আমেরিকার কিছু লোক, যাদের মধ্যে সিনেটর, প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যসহ চল্লিশজন বিশিষ্ট ব্যক্তি সেটাকে ‘হয়রানি’ বলেছেন। অজয় দাশগুপ্ত বলেন, ‘ধর্মান্ধ, চরমপন্থি, জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নেয়, তখনই সেটিকে রাজনৈতিক নিপীড়ন বলে উল্লেখ করা হয়। তারা সেটিকে হয়রানি বলছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই বলে দাবি করছেন। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচন যারা বানচাল করতে চেয়েছে, হত্যা, ধর্ষণ তো বটেই; আগুন জ্বালানো, পেট্রোল বোমা, ২০১৫ সালে তারা একটানা তিন মাস হরতাল-অবরোধ করেছে, সেইসব সহিংস কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দাঁড়িয়েছে, পদক্ষেপ নিয়েছে, সেটাকেও তারা কিন্তু রাজনৈতিক নিপীড়ন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।’ আরও পড়ুন: বিএনপির বিষদাঁত ভেঙে দিতে হবে: নানক ‘প্রকৃত সঠিক কোনো ঘটনা ঘটলে, রাষ্ট্র যদি কোনো অন্যায় করে, মানুষের অধিকার হরণ করে, সেটা নিয়ে তারা কথা বলতে পারেন। কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে, এই ছয় কংগ্রেসম্যান যেসব কথা বলেছেন, তার অধিকাংশই মনগড়া অথবা অপরের শিখিয়ে দেয়া বুলি। লবিস্ট ফার্মের হয়ে কাজ করার মতো করে তারা কথা বলেছেন,’ যোগ করেন অজয় দাশগুপ্ত। এ গবেষক আরও বলেন, আমেরিকার জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি হয়ে এভাবে তাদের কথা বলা উচিত না। অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার ব্যাপারে তাদের সতর্ক থাকা উচিত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক পরিসর ছাড়াও নানা কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশ জড়িত। জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের সদর দফতর যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশ সব সময় সেসব প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডে সক্রিয় এবং ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। ‘সেই রকম একটি দেশ, যারা ত্রিশ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং আমেরিকা সেই স্বাধীনতার বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে অর্থ ও অস্ত্র দিয়েছে, বাংলাদেশ সম্পর্কে বিবৃতি দেয়ার আগে তাদের তো এখনও এই কথাটা বলা উচিত। বাহান্ন বছর আগে অস্ত্র দিয়ে বাংলাদেশে গণহত্যা চালাতে পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্র যে সহায়তা করেছে, সেই পদক্ষেপ ভুল ছিল। চিঠির শুরুতে তাদের উল্লেখ করা উচিত ছিল, শেষ পর্যায়ে যখন মুক্তিবাহিনী বিজয়ের পথে ছিল, তখন পরমাণু অস্ত্রবাহী সপ্তম নৌবহর বঙ্গোপসাগরে পাঠিয়ে ভুল করেছিল, সেটির নিন্দা করেই আমরা বলছি, বাংলাদেশের এখন গণতন্ত্রের পথে চলা উচিত.’ যোগ করেন তিনি। আরও পড়ুন: বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার দিবাস্বপ্ন দেখছে, বলছে আওয়ামী লীগ অজয় দাশগুপ্ত বলেন, কিন্তু তখনকার মার্কিন সরকারের সেই পদক্ষেপের নিন্দা করেনি তারা। কিন্তু কোনো বিবৃতি দিলে তার শুরুতেই এ কথাটা তাদের বলা উচিত যে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানের গণহত্যার পক্ষে দাঁড়িয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, আমরা সেটার নিন্দা করি, পাকিস্তানিদের অস্ত্র দিয়েছিল, সেটির নিন্দা করি, আমরা আশা করি, বাংলাদেশ যেন গণতন্ত্রের পথে চলে। এছাড়াও বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের বড় বাণিজ্য অংশীদার উল্লেখ করে অজয় দাশগুপ্ত বলেন, আমরা তাদের দেশে পোশাক রফতানি করি। কিন্তু সবসময় আমাদের শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি পায়ও না। তারপরেও আমরা সে দেশে পোশাক রফতানি করি। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ন্যায্য মজুরি থেকেও অনেক সময় বঞ্চিত হই। এই কংগ্রেসম্যানরা কি তার সমালোচনা করে, নিন্দা করে? চিঠির ভাষা খুবই অশালীন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এই ভাষা অকূটনৈতিক ছিল।’ চিঠিতে যা বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। এছাড়াও বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠু হয়, সে জন্য সর্বোচ্চ পরিবেশ তৈরিতে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্র হরণের অভিযোগ তোলা হয়েছে। যদিও তার কোনো প্রমাণ তুলে ধরা হয়নি। অভিযোগে বলা হয়, বর্তমান সরকারের সময় বাংলাদেশে হিন্দুদের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ধ্বংস, ধর্ষণ, বলপ্রয়োগে ধর্মান্তকরণ ও খ্রিষ্টানদের নিপীড়নের কথা বলা হয়েছে। এছাড়াও সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর ব্যাপক ধরপাকড়ের অভিযোগ তোলা হয়েছে। সংখ্যালঘুদের নিয়ে তথ্য বিভ্রান্তিকর জো বাইডেনকে দেয়া ছয় মার্কিন কংগ্রেসম্যানের এ চিঠিকে বিভ্রান্তিকর বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত। শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে যে অভিযোগ চিঠিতে করা হয়েছে, তা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যদি পরিসংখ্যান ব্যুরোর প্রতিবেদন দেখি, দেখা যায়, ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে পূর্ববঙ্গে মোট জনসংখ্যার ২৯ দশমিক সাত শতাংশ ছিল সংখ্যালঘু। ১৯৭০ সালের দিকে এসে সেটা নেমে যায় ১৯ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে। অর্থাৎ পাকিস্তানের প্রথম তেইশ বছরে হারিয়ে গেল প্রায় ৯ দশমিক সাত শতাংশ। ‘১৯৭০ সালের সংখ্যালঘুরা একচ্ছত্রভাবে ছয়দফার পক্ষে ভোট দিয়েছে। পাকিস্তান সরকার যখন অপারেশন সার্চলাইট শুরু করল, তখন তাদের পাঁচটি নির্দেশনা ছিল। তার মধ্যে একটি হচ্ছে সংখ্যালঘুদের নির্মূল ও নিশ্চিহ্ন করা,’ যোগ করেন রানা দাশগুপ্ত। আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে যা বললেন আওয়ামী লীগ নেতারা মানবতাবিরোধী আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এই প্রসিকিউটর বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় দেখেছি যে ওই নির্দেশনা অনুযায়ী তৎকালীন পূর্ববঙ্গের সংখ্যালঘু পল্লীগুলোতে নির্বিচারে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ ও ধর্মান্তকরণ হয়েছে। এমনকি এক কোটি লোক যে উদ্বাস্তু হলো, তাদের মধ্যে ৯২ লাখের মতো ছিলেন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। মুক্তিযুদ্ধের পরে তারা এক কাপড়ে দেশে ফিরে এলেন নিজেদের ভিটেমাটিতে। রানা দাশগুপ্ত বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের সময় যে সংখ্যালঘু জনসংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে দাবি করা হয়েছে, তা সঠিক না। গত ৫২ বছর ধরেই সংখ্যালঘুর সংখ্যা কমতে দেখেছি। যদি ছয় কংগ্রেস জো বাইডেনকে চিঠি দিয়ে শেখ হাসিনা সরকারের সময় অর্ধেক জনসংখ্যা হারিয়ে গেছে বলে দাবি করে, তাহলে তা সত্য না।’ তিনি বলেন, ‘এ কথা যদি বলা হয়ে থাকে, তাহলে এটি সত্য না। এটা বিভ্রান্তিকর।’ সংখ্যালঘুদের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসা নিয়ে বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি পুরোদস্তুর মিথ্যা কথা। বাস্তবতা হলো, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহায়তা আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির সঙ্গে বসবাস করছি।’ সরকারের ওপর চাপ তৈরি করতে চায় তারা সিনিয়র সাংবাদিক নাইমুল ইসলাম খান বলেন, আমরা ধরেই নিতে পারি, এই চিঠি বাংলাদেশের বিরোধী দলের লোকজন কংগ্রেসম্যানদের লবিস্ট ফার্মের মাধ্যমে তাদের ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে। তাদের বুঝিয়েছে, তাদের দিয়ে চিঠি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আমেরিকা যাতে জাতিসংঘের মাধ্যমে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে শান্তিরক্ষী মিশনে না নেয়। এতে বোঝা যায়, মানুষের মধ্যে একটা অস্থিরতা তৈরি করতে, সরকারি দলের ওপর চাপ তৈরি করতে এগুলো করা হচ্ছে। তার মতে, কিন্তু এই মুহূর্তে এই চিঠি বিপজ্জনক কিছু না। কারণ এটি একটি চিঠি মাত্র। এটার ব্যাপারে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে কোনো প্রতিক্রিয়াও দেয়া হয়নি। এটি এখন পর্যন্ত সাধারণ একটি চিঠি। মজার বিষয় হলো, কালকে যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হন, তিনি বিভিন্ন দেশের এসব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার পক্ষে না। ‘বিগত মেয়াদে ট্রাম্প কোথাও এসব নিয়ে পদক্ষেপ নেয়নি। কিন্তু ডেমোক্র্যাটদের অগ্রাধিকার এটি। তারা সবাই যে রিপাবলিকান দলীয়, তাও অবাক করার মতো। কারণ ট্রাম্পের আমলে পৃথিবীর কোনো দেশে গণতন্ত্র আছে কি নেই, নির্বাচন ভালো হলো কি মন্দ হলো, এ নিয়ে বিষয় কোনো আগ্রহ দেখায়নি.’ বলেন তিনি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা চিঠিটি সংগ্রহ করেছি। এখানে অতিরঞ্জন আছে। এমনকি তথ্যের বড় ধরনের ঘাটতি আছে। আপনারা নিজেরাও লাইন বাই লাইন পরীক্ষা করে দেখতে পাবেন, অসঙ্গতি আছে। আমাদের দেশেও সংসদ সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনেক কিছু বলেন। হয়তো লেখেন, আমরা জানি। কিন্তু তা আমলে নেবেন না কিনা; সেটা রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব।’ আরও পড়ুন: উন্নয়ন-গণতন্ত্রকে বাঁচাতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই: কাদের তিনি আরও বলেন, এ রকম চিঠি অতীতেও এসেছে, ভবিষ্যতেও বেশি করে আসবে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, এ ধরনের তৎপরতা বাড়বে। আমরা এসব কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে। সবাইকে এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান জানাব। এরআগে গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এই চিঠির ভাষার সঙ্গে বিএনপির ভাষার মিল আছে বলে দাবি করেন তিনি। তখন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ২০১৫ সালে নির্বাচনের পরাজয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় একটি লিখা লিখেছিলেন, সেখানে যে ধরণের ভাষা ব্যবহার করা হয়েছিল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই চিঠির ভাষাও তেমনই। এর আগে ২০১৫ সালেও এমন চিঠি দেয়ার গুঞ্জন উঠেছিল। কিন্তু পরে সেটারও কোনো সত্যতা মেলেনি, যা ছিল পুরোপুরি ভুয়া। সরকারকে বিপদে ফেলতে এবং অস্থিরতা তৈরি করতে বিএনপির পক্ষ থেকে ওই ভুয়া চিঠি ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল। ফলে বিএনপির যুক্তরাষ্ট্র শাখা থেকে কয়েকজন নেতাকে বহিষ্কারও করা হয়।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply