দুই সপ্তাহ সফর শেষে যা জানাল আইএমএফ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) দ্বিতীয় দফায় বাংলাদেশে টানা দুই সপ্তাহ সফর শেষে দেশের সার্বিক অর্থনীতির পরিস্থিতি নিয়ে অভিমত জানিয়েছে। এ ব্যাপারে আইএমএফ ছাড়াও কথা বলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম।
আইএমএফের পক্ষে বাংলাদেশ সফর মিশনের প্রধান ছিলেন রাহুল আনান্দ। ২৫ এপ্রিল থেকে ৭ মে টানা ১২ দিনের সফর শেষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সফরের সার্বিক দিক উল্লেখ করে রাহুল বলেন, অনেক বড় বড় চ্যালেঞ্জ থাকার পরও বাংলাদেশ সব উতরে এশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে।
যদিও বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি, বিশ্ববাজারের অস্থিরতা, ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা, রিজার্ভ সংকট ও টাকার অবমূল্যায়নের মতো চ্যালেঞ্জ আছে। তবে এসব চ্যালেঞ্জ নিয়েই বাংলাদেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানান রাহুল।
বাংলাদেশ সফরে আলোচনার বিষয়বস্তু উল্লেখ করে রাহুল বলেন, ‘এই সফরে আমরা বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতি ও বিভিন্ন খাত সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেছি। এ ছাড়া দ্বিতীয় দফার কিস্তি নিয়েও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ আইএমএফ থেকে যেসব শর্তে ঋণ নিয়েছে সেটির প্রথম রিভিউ ছিল এ সফর।’
আরও পড়ুন: আইএমএফের সব শর্ত মানতে হবে এমন নয়: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী
এই সফরে আইএমএফের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থসচিব ফাতিমা ইয়াসমিন ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ সরকারি ও ব্যাংক সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে। এ ছাড়া এবারের সফরে আইএমএফ বেসরকারি খাতের ব্যক্তিবর্গ, দ্বিপাক্ষিক দাতা সংস্থা ও উন্নয়ন অংশীদার দলের অনেকের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে।
আইএমএফের সফর নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক জানান, আর্থিক খাতে নেয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সংস্কার উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আইএমএফ। এ ছাড়া আসছে মুদ্রানীতিতে সংস্কারের প্রথম ধাপ হিসেবে রিজার্ভ হিসাব পরিবর্তন, বৈদেশিক মুদ্রা ডলারের অভিন্ন দাম ও ঋণের বাজারভিত্তিক সুদহার নির্ধারণে ঘোষণা আসবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে আইএমএফের প্রতিনিধিদলের সফর ও বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনীতি নিয়ে রোববার (৭ মে) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) আয়োজিত এক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশকে আইএমএফের সব শর্ত মেনে নিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। হোক আইএমএফ বা বিশ্বব্যাংক, বাংলাদেশ সেসব শর্তই মানবে যা দেশের অর্থনীতির জন্য ভালো।’
মূল্যস্ফীতি এখন দেশের অর্থনীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি বাড়লে সুদের হার বাড়িয়ে দেয়া হয়। এ নীতি দেশে খুব একটা কার্যকর হবে না। এ ছাড়া বাংলাদেশকে নিজস্ব নীতিতে চলতে হবে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামী অক্টোবরে আবারও সফরে আসবে আইএমএফ। অক্টোবরের সফরের পর আইএমএফ বাংলাদেশ নিয়ে আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা প্রকাশ করবে।
Tag: English News lid news national
No comments: