Sponsor



Slider

দেশ - বিদেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » চীনের ঋণের কূটকৌশলে পড়ে পিষ্ট হচ্ছে, আফ্রিকা, এশিয়া ও লাতিন দেশশুলো




চীনা ঋণের যাঁতাকলে পিষ্ট যেসব দেশ চীনের ঋণের কূটকৌশলে পড়ে পিষ্ট হচ্ছে, আফ্রিকা, এশিয়া ও লাতিন দেশশুলো। পাশাপাশি দেনা পরিশোধের সক্ষমতা না থাকায় তাদের সম্পদ চলে যাচ্ছে বেইজিংয়ের দখলে। প্রতীকী ছবি

অন্যদিকে এর প্রভাবে বিশ্বব্যাপী আধিপত্য হারাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। আর তাতে ধীরে ধীরে কমছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফ’র মোড়লগিরিও। প্রায় ১৫০ বছর ধরে এক নম্বর অর্থনীতির দেশ হিসেবে বিশ্বজুড়ে নিজেদের প্রভাব ধরে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে গেল কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে চীন। বাণিজ্য কিংবা রাজনীতি সব ক্ষেত্রেই প্রভাব বিস্তার করে চলেছে শি জিনপিং প্রশাসন। গত এক দশকে বিশ্বের বৃহত্তম একক ঋণদাতা দেশ হয়ে উঠেছে দেশটি। বিভিন্ন দেশকে দেয়া চীনের মোট ঋণের পরিমাণ এখন বৈশ্বিক জিডিপির ৬ শতাংশের বেশি। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছে চীন। বিশ্বে নিজেদের আধিপত্য নিশ্চিত করতে এশিয়া, আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার উন্নয়নশীল দেশগুলোর অবকাঠামো নির্মাণ, গভীর সমুদ্রবন্দর, বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণের মতো বড় বড় প্রকল্পে বিপুল অঙ্কের বিনিয়োগ করছে বেইজিং। গত এক দশকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে দেয়া ঋণের পরিমাণ তিনগুণ বাড়িয়েছে চীন। ২০২০ সালের শেষ নাগাদ এর পরিমাণ দাঁড়ায় ১৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের উইলিয়াম অ্যান্ড মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্র এইডডাটা'র প্রতিবেদন বলছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে চীন যে পরিমাণ ঋণ দিয়েছে তার অর্ধেক তথ্যই গোপন রাখা হয়েছে। আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ২২৫ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি বাংলাদেশের চীনা ঋণ সবচেয়ে বেশী যাচ্ছে আফ্রিকার দেশগুলোতে। বিশেষ করে জিবুতি, অ্যাঙ্গোলা, ইথিওপিয়া, জাম্বিয়া, কেনিয়া, মিশর, নাইজেরিয়া, ক্যামেরুন, দক্ষিণ আফ্রিকা, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও ঘানার মতো দেশ এখন চীনা ঋণের যাঁতাকলে পিষ্ট। বর্তমানে অ্যাঙ্গোলা ৪২ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার, ইথিওপিয়া ১৩ দশমিক ৭, জাম্বিয়ায় ৯ দশমিক ৯, কেনিয়া ৯ বিলিয়ন, ক্যামেরুনে ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন এবং মিশর, ঘানা ও সুদান ৫ বিলিয়ন ডলার। পূর্ব আফ্রিকার দেশ জিবুতির ৭০ শতাংশ দেনাই চীনা ঋণের অন্তর্ভুক্ত। দেশটিকে ঋণ দেয়ার পেছনে চীনের সবচেয়ে বড় স্বার্থ আরব ও লোহিত সাগরের সংযোগ স্হলে প্রভাব বজায় রাখা। জিবুতির মতো বেশিরভাগ আফ্রিকার দেশে সমুদ্রবন্দর তৈরিতে অবকাঠামোগত ও আর্থিক সহায়তায় চীনের আগ্রহের প্রধান কারণ একদিকে যেমনি অর্থনৈতিক, অন্যদিকে সামরিক। আফ্রিকায় উগান্ডার একমাত্র বিমানবন্দর, মাদাগাস্কারের সমুদ্রবন্দরও ঋণের কারণে চীনের হাতে চলে গেছে। বন্দর তৈরিতে ঋণ দেয়ার সুবাদে একটি লম্বা সময়ের জন্য আফ্রিকার দেশগুলোর বন্দর ইজারা নিয়ে থাকে চীন। সমালোচকরা বলছেন, আফ্রিকায় রয়েছে প্রাকৃতিক সম্পদ নিকেলের মতো ধাতু, যেটি বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আর এই প্রাকৃতিক সম্পদ কৌশলে বাগিয়ে নিতে চালিয়ে যাচ্ছে ঋণ কার্যক্রম। বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই ঋণ-ফাঁদ কূটনীতি অনুশীলনের অভিযোগ করে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। তাদের দাবি, চীনের ঋণ সংক্রান্ত কার্যকলাপ একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, এমন সব দেশকে লক্ষ্য করে ঋণ দিচ্ছে চীন। যাদের দেনা পরিশোধের ক্ষমতা তেমন নেই বললেই চলে। আরও পড়ুন: আবারো তুঙ্গে চীন-তাইওয়ান উত্তেজনা অভিযোগ আছে, চীন এমন সব প্রকল্পে বিনিয়োগ করে থাকে যার কোনো কোনোটি অর্থনৈতিকভাবে নড়বড়ে হওয়ায় ওইসব প্রকল্পের আয় থেকে সুদসহ ঋণ পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এতে ঋণের ফাঁদে আটকা পড়ে ঐসব দেশ। বাধ্য হয়ে প্রকল্পগুলোর দীর্ঘমেয়াদি কর্তৃত্ব চলে যায় চীনের হাতে। অথবা নিজেদের সার্বভৌমত্ববিরোধী নানা সুবিধা দিতে বাধ্য হয় ঋণগ্রস্ত দেশগুলো। শ্রীলঙ্কা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর গত বছরের সবচেয়ে আলোচিত খবর ছিল দেশটির দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার খবর। খাবার ও জ্বালানির সংকট দেখা দিলে রাজপথে নামেন সাধারণ মানুষ। প্রেসিডেন্টের পালিয়ে যাওয়া, আইএমএফের কাছে বেইল আউট প্রার্থনা। রিজার্ভ শূন্যের কোটায় নেমে আসা থেকে শুরু করে প্রায় সব কটি খবরই ভয় ধরিয়ে দেয় দক্ষিণ এশিয়ার বাকি উন্নয়নশীল দেশগুলোর মনে। আর শ্রীলঙ্কার ঐ পরিস্থিতির জন্য অর্থনীতিবিদরা দায়ী করেন, চীনা ঋণের ফাঁদে পা দেয়ার মতো অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তকে। ২০১০ সালে চালু হওয়া শ্রীলংকার হাম্বানটোটা বন্দর থেকে কাঙ্ক্ষিত লাভ করতে না পারায় ও ঋণ শোধ করতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৭ সালে ১১০ কোটি ডলারের বিনিময়ে বন্দরটির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় চীনের হাতে। শুধু হাম্বানটোটা নয়, বন্দর সংলগ্ন ১৫ হাজার একর জমি চলে যায় চীনের অধীনে। এসব জমি থেকে হাজার হাজার গ্রামবাসীকে উচ্ছেদ করে তৈরি করা হয় শিল্পনগরী। যার আসল সুবিধাভোগী চীন। এছাড়াও কলম্বো পোর্ট সিটি ও রাজাপাকসে বিমানবন্দরের মতো অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পে শ্রীলঙ্কাকে উদ্বুদ্ধ করার পেছনে চীনকে দায়ী করা হয়। শ্রীলঙ্কার পর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পাকিস্তানের। দেউলিয়া হওয়ার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা পাকিস্তানও অন্যান্য দেশের মতো চীনা ঋণের ফাঁদে পড়েছে বলে মনে করেন খোদ দেশটির অর্থনীতিবিদরা। বর্তমানে পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ঋণদাতা চীন। দেশটির ৩০ শতাংশ ঋণই তাদের দেয়া। আরও পড়ুন: সম্পর্ক উন্নয়নে চীনকে যে শর্ত দিল ভারত ২০২১-২২ অর্থবছরে পাকিস্তানকে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন চীনা ঋণের বিপরীতে কেবল সুদই দিতে হয়েছে ১৫০ মিলিয়ন ডলার। একইভাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ বিলিয়ন চীনা ঋণের বিপরীতে পাকিস্তানকে সুদ দিতে হয়েছে ১২০ মিলিয়ন ডলার। এদিকে জ্বালানি খাতে ঋণ পরিশোধের জন্য একের পর এক চাপ প্রয়োগ করছে চীন। এ খাতে পাকিস্তানের কাছে চীনের পাওনা ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। যেখানে পাকিস্তান পরিশোধ করেছে মাত্র ২৮০ মিলিয়ন ডলার। আসল টাকা দিতেই যেখানে নাভিশ্বাস অবস্থা। সেখানে সুদসহ ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে চোখে-মুখে সরষে ফুল দেখছে পাকিস্তান। ঋণের ফাঁদে পড়ে পাকিস্তানের গোয়াদর বন্দরের রাজস্বের সিংহভাগ চলে যাচ্ছে চীনের পকেটে। অন্যদিকে দেনা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে পামির পর্বতমালার ১ হাজার ১১৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা চীনের কাছে সমর্পণ করেছে তাজিকিস্তান। চীনা কোম্পানিকে সোনা, রৌপ্যসহ খনিজ সম্পদ আহরণের অধিকারও দিয়েছে দেশটি। মহামারির ধাক্কার পর দেনার দায়ে জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডের বেশির ভাগের নিয়ন্ত্রণ চীনের হাতে তুলে দেয় এশিয়ার ছোট্ট দেশ লাওস। ঋণ থেকে বাঁচতে ভবিষ্যতে নিজেদের ভূখণ্ড ও প্রাকৃতিক সম্পদ চীনের হাতে তুলে দেয়া ছাড়া লাওসের হাতে আর কোনো বিকল্প থাকবে না বলে মনে করেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা। একইভাবে লাতিন আমেরিকার দেশ কোস্টারিকা, হন্ডুরাস, নিকারাগুয়া, গুয়াতেমালা, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা চীনা ঋণের ফাঁদে পড়ে একই পথে হাঁটছে। সূত্র: বিবিসি, দ্য জিওপলিটিক্স ও দ্য ডিপ্লোম্যাট।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply