Sponsor



Slider

দেশ - বিদেশ

মেহেরপুর জেলা খবর

মেহেরপুর সদর উপজেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

যাবতীয়

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » খুলনায় নতুন আতঙ্ক ডেভিলস ব্রেথ' বা শয়তানের নিঃশ্বাস




খুলনায় নতুন আতঙ্ক ডেভিলস ব্রেথ' বা শয়তানের নিঃশ্বাস খুলনায় দিনদিন বেড়েই চলেছে প্রতারক চক্রের দৌরাত্ম্য। অভিনব কায়দায় হাতিয়ে নিচ্ছে ইজিবাইক, স্বর্ণালংকার, টাকা-পয়সাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। ছবি: সংগৃহীত

এসব প্রতারক চক্রের মূল হাতিয়ার হলো ভয়ংকর মাইন্ড কন্ট্রোল ড্রাগ 'ডেভিলস ব্রেথ' বা শয়তানের নিঃশ্বাস খ্যাত স্কোপোলামিন। যা নাক বা মুখের কাছে নিলেই স্বেচ্ছায় সব কিছু বিলিয়ে দেন ভুক্তভোগীরা। এ চক্রের দুই থেকে একজনকে ধরা হলেও মূলহোতারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। নগরীর রয়েল মোড়, ময়লাপোতা, শামসুর রহমান রোডসহ বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় চক্রটি বলে জানা গেছে। কখনও পুলিশ, কখনও যাত্রী আবার কখনও চালক সেজে হাতিয়ে নিচ্ছে ইজিবাইক, স্বর্ণালংকার, টাকা-পয়সাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র। এ ঘটনার শিকার খুলনার লবণচরা এলাকার বাসিন্দা আকলিমা আক্তার আঁখি নামে এক নারী। তিনি জানান, গত ৮ এপ্রিল প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে খোয়া গেছে তার মূল্যবান স্বর্ণালংকার। এ ঘটনায় নগরীর সদর থানায় একটি মামলা করেছেন। পরবর্তীতে দু’জন গ্রেফতার হলেও এ চক্রের মূলহোতারা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। আকলিমা আক্তার আঁখি বলেন, গত ৮ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে নগরীর মালাপোতা মোড়ে একটি চক্ষু হাসপাতালে মায়ের চিকিৎসার করানোর পর সোনার মালা মেরামতের জন্য হেলাতলা স্বর্ণপটিতে যাওয়ার পথে এ চক্রের খপ্পরে পড়েন তিনি। আরও পড়ুন: ফরিদপুরে ডিজিটাল লেনদেন মাধ্যমে প্রতারক চক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার আঁখি বলেন, ময়লাপোতা মোড় থেকে একটি ইজিবাইকে উঠেছিলাম। ওই ইজিবাইকে আগে থেকে আরও দুই জন ছিল। ইজিবাইকটি জাতিসংঘ শিশু পার্কের পূর্ব পাশে পৌঁছানো মাত্র পেছনে থাকা অন্য একটি ইজিবাইক থেকে এক যুবক দৌঁড়ে এসে আমাদের ইজিবাইকে উঠে বসেন। ইজিবাইকটি তখন ফুল মার্কেটের সামনে দিয়ে সোজা না গিয়ে শামছুর রহমান রোডে প্রবেশ করে। ইজিবাইকে থাকা এক যুবক একটি কাগজ বের করে অপর একজনকে বলেন, এই কাগজে কি লেখা আছে, আপনি কি পড়ে আমাকে জানাতে পারবেন?। তখন সে বলে আমি লেখাপড়া জানি না। পরবর্তীতে ইজিবাইকে থাকা ওই যুবক আমাকে কাগজ দিয়ে বলেন, আপা এই কাগজে কি লেখা আছে; আপনি একটু পড়ে দেবেন! আমি ওই যুবকের কথায় সরল মনে কাগজ হাতে নেয়ার সাথে সাথে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তখন তারা আমাকে বলে কাছে যা আছে আমাদের দেন। আমি তাদের কথা মতো আমার কাছে থাকা তিনটি স্বর্ণের চেইন ও কানের দুল তাদের হাতে তুলে দেই। তারা আমাকে শহীদ হাদিস পার্কের সামনে নামিয়ে দিয়ে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর আমার জ্ঞান ফিরে আসে। গত ১১ এপ্রিল নগরীর কেডিএ এভিনিউ সড়কে অভিনব পন্থায় ছিনতাই করা হয় একটি ইজিবাইক। ঘটনাটির অনুসন্ধানে নামে পুলিশ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ঘড়ির কাটায় তখন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা। নগরীর কেডিএ এভিনিউ সড়কের তেঁতুলতলা মোড়ে এসে দাঁড়ায় একটি ইজিবাইক। ঠিক তার পেছনে এসে সাদা একটি প্রাইভেট কার থামিয়ে এক ব্যক্তি নামেন। এরপর ইজিবাইকে থাকা ব্যক্তি নেমে যান। এরপর প্রাইভেট কারের ব্যক্তি ইজিবাইকে ওঠেন। কিছুটা সামনে গিয়ে চালককে কৌশলে অচেতন করে ইজিবাইকটি নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইজিবাইক চালক মো. রাতুল বলেন, ওইদিন সাতরাস্তা মোড় থেকে একজন যাত্রী ইজিবাইকে ওঠেন। তেঁতুলতলা মোড়ে আসতেই তিনি ইজিবাইকটি থামাতে বলেন। পেছন থেকে একটি সাদা প্রাইভেট কার এসে দাড়ায়। ইজিবাইকে থাকা যাত্রীটি নেমে যান ও প্রাইভেট কারে থাকা এক ব্যক্তি আমার ইজিবাইকে ওঠেন। কিছুদূর সামনে গিয়ে ওই ব্যক্তি আমাকে বলেন, তোমাকে অনেক চেনা চেনা লাগছে। এ কথা বলে তার হাত দিয়ে আমার মুখে থাকা মাস্কটি টেনে খুলে দেয়। এরপর থেকে আমি বেহুশ হয়ে পড়ি। তিনি আমাকে যেদিকে যেতে বলেছে আমি সেদিকেই গিয়েছি। একপর্যায়ে তারা আমাকে রাস্তায় ফেলে ইজিবাইক নিয়ে যায়। এসব ঘটনায় কয়েকটি সিটি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত করতে ব্যবহৃত হচ্ছে সাদা একটি প্রাইভেট কার। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ইজিবাইকগুলোতে উঠছে এ চক্রটি। ব্যবহার করছে ক্ষতিকর ভয়ংকর মাইন্ড কন্ট্রোল ড্রাগ 'ডেভিলস ব্রেথ' বা শয়তানের নিঃশ্বাস খ্যাত স্কোপোলামিন। খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, এ ধরনের ড্রাগ শরীরে প্রবেশ করলে ভারসাম্যহীন ও মৃত্যু ঝুঁকি রয়েছে। স্কোপোলামিন একটি প্রাকৃতিক বা কৃত্রিমভাবে উৎপাদিত ট্রোপেন অ্যালকালয়েড এবং অ্যান্টিকোলিনার্জিক ড্রাগ। এটি মস্তিষ্কের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এর প্রভাব এতটাই ভয়ংকর যে, কোনো ব্যক্তিকে সেকেন্ডেই নিজের নিয়ন্ত্রণে অনায়াসেই আনা যায়। অন্যের আদেশ পালন করতে বাধ্য করানোই হয়। ভুক্তভোগীরা হেপনোটাইজ হয়ে অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। খুলনায় এর ব্যবহার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নানাভাবে ও নানা কৌশলে এটি প্রয়োগ করা হয়। যেমন, হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে, ঘ্রাণের মাধ্যমে, খাবারের সঙ্গে, চিরকুটের মাধ্যমে, কোমল পানীয় এর সঙ্গে, বাতাসে ফুঁ দিয়ে করা যায়। স্কোপোলামিন তরল ও শুকনো দুই ফরমেটেই পাওয়া যায়। এ ড্রাগটি শ্বাসের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে যার প্রতিক্রিয়া থাকে ২০ থেকে ৬০ মিনিট। এটি অতিমাত্রায় অত্যন্ত ক্ষতিকর। মানুষ কিছু চিরতরে পাগল হয়ে যেতে পারেন বলেও জানান তিনি। এ বিষয়ে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (সাউথ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি নগরীতে ইজিবাইক চুরি, প্রতারণাসহ বিভিন্ন অপরাধ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেক অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার পর সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করা হয়েছে। এ চক্রের দুই সদস্যকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্য মতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ চক্রের মূলহোতাকে ধরতে কাজ করা হচ্ছে। আর ইজিবাইক চুরির বিষয়েও অভিযোগ পেয়েছি। সাদা প্রাইভেটককারের মালিককে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এছাড়া অনেক সময় দেখা যায় ইজিবাইক ছিনতাই করতে গিয়ে হত্যার মতো ঘটনা ঘটছে। এমন একটি চক্রকে আমরা গতমাসে গ্রেফতার করেছি। সব ধরনের অপরাধ রোধে কাজ করা হচ্ছে। আশাকরি, দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply