বাংলাদেশে প্রথম আর্চ স্টিল সেতু, কাজ শুরু জুনে
দেশের প্রথম দৃষ্টিনন্দন আর্চ স্টিল সেতু হচ্ছে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদে। তিন হাজার ২৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এর নির্মাণ কাজ শুরু হবে আগামী মাসে। এটি হলে যানজট নিরসনের পাশাপাশি বিভাগের ছটি জেলায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটবে।
ময়মনসিংহের পাটগুদাম এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে নির্মিত হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম আর্চ স্টিল সেতু। ছবি: সমং সংবাদ (ভিডিও থেকে নেয়া)
এরই মধ্যে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই ছাড়াও সেতুটি নির্মাণে সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেছে সড়ক বিভাগ।
জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর পাটগুদাম এলাকার একমাত্র সড়ক সেতু দিয়ে যাতায়াত করে জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের মানুষ। গাড়ির চাপ বাড়ায় যানজটে স্থবির হয়ে পড়ে বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহ।
নগরীর পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর পাটগুদামে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু মোড়ের এ যানজট নিরসনে নির্মাণ করা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি হারবারের আদলে দৃষ্টিনন্দন স্টিল আর্চ সেতু। এর বিশিষ্টতা হচ্ছে নদের দুপাশে থাকলেও মাঝে কোনো পিলার থাকবে না। দুপাড়ে দুটি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে থাকবে ৬.২ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুটি।
সংযোগ সড়কটি মূল সেতুর সঙ্গে মিলিত হওয়ার আগেই থাকবে ২৫০ মিটার রেলওয়ে ওভারপাস। এরপরই সংযোগ সড়ক মিলবে ৩২০ মিটার দীর্ঘ মূল আর্চ স্টিল সেতুর সঙ্গে। এতে ২০২ মিটার র্যাম্পসহ ভারী যান চলাচলের জন্য চারটি এবং মোটরসাইকেল ও হালকা যান চলাচলের জন্য দুটিসহ মোট ছটি লেন থাকবে।
আরও পড়ুন: পিলার ছাড়াই দৃষ্টিনন্দন সেতু তৈরি হচ্ছে ময়মনসিংহে
সেতুটি নির্মিত হলে ময়মনসিংহ ও আশপাশের জেলার যানজট অনেকাংশেই কমবে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ সদর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। এর নির্মাণ কাজ শেষ হলে বিভাগীয় প্রতিটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমুল পরিবর্তন আসবে। সেই সঙ্গে কমবে যানজটও।
অর্থনৈতিক দিক থেকেও সেতুটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছে ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স। সংগঠনের সহ-সভাপতি শংকর সাহা বলেন, যানজটের কারণে রাস্তায় গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকায় জ্বালানি খরচ বাড়ে, পরিবহন করা পণ্যও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নতুন এ সেতুটি হলে এসব ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলবে; সুফল পাবেন ব্যবসায়ীরা।
সেতু বিভাগ বলছে, কাজ শুরু হওয়ার মাস খানেকের মধ্যেই দৃশ্যমান হবে সেতুর নির্মাণ কাজ।
ময়মনসিংহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কেবিএম সাদ্দাম হোসেন বলেন, সেতু নির্মাণে দরপত্র জমা হয়েছে; এখন চলছে মূল্যায়ন। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ হলে কাজ শুরু হবে জুনেই।
সেতুটির প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে ঋণ দেবে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক।
গত ১৩ এপ্রিল পরামর্শক হিসেবে ভারতের এলইএ অ্যাসোসিয়েটস সাউথ এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড ও দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়ংমা ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। পরামর্শক প্রতিষ্ঠান দুটি কেওয়াটখালী সেতুর নকশা পুনর্মূল্যায়ন ও পরবর্তী সময়ে নির্মাণকাজের তদারকিও করবে।
Tag: English News politics
No comments: