কৃষিতে বিপ্লব নতুন জাতে শতাংশে মিলছে এক মণ ধান উচ্চ ফলনশীল ও পুষ্টি সমৃদ্ধ ব্রি-১০২ জাতের ধান খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষিতে বিপ্লব ঘটাবে বলছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে ধানটির পরীক্ষামূলক চাষে মিলেছে সাফল্য। প্রতি শতাংশে প্রায় মণ খানেক ধান মিলেছে। খুব দ্রুত দেশের সব জেলায় এ ধানের জাত ছড়িয়ে দেয়ার কথা জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। দ
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বলছে, বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ এমনকি উদ্বৃত্ত হলেও আমাদের বিপুল জনগোষ্ঠীর এখনও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় উচ্চফলনশীল জাতের পাশাপাশি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান উৎপাদনে বিশেষ নজর দিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত নতুন জাতের ধান এলাকাভেদে ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২, বঙ্গবন্ধু-১০০ এবং ব্রি-১০২ জাতগুলো বিভিন্ন এলাকায় পরীক্ষামূলক চাষ করে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। প্রতি শতাংশে এক মণ করে ধান পেয়েছে কৃষকরা। এতে একদিকে তারা লাভবান হচ্ছে, অন্যদিকে খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ আরও একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। এদিকে সম্প্রতি টাঙ্গাইলের ধনবাড়িতে ব্রি-৯২ ও ব্রি-১০২ জাতের ধান কাটা ও কৃষক সমাবেশ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। এ সময় কৃষকদেরকে পুষ্টিসমৃদ্ধ এবং উচ্চফলনশীল ধানের জাত আবাদ করার পরামর্শ দেয়া হয়। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের রাইস ফার্মিং সিস্টেম বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত ফসল কাটা ও কৃষক সমাবেশে ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক (মনিটরিং) কৃষিবিদ আশরাফ উদ্দিন ও ঢাকা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক এসএম সোহরাব উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্রি বিজ্ঞানি সমিতির সভাপতি ড. আমিনা খাতুন। আরও বক্তব্য রাখেন ব্রি’র রাইস ফার্মিং সিস্টেমস বিভাগের প্রধান ড. মো. ইব্রাহিম ও টাঙ্গাইলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আহসানুল বাশার, কৃষক প্রতিনিধি সোহরাব উদ্দিন ও আনসার আলী। টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আহসানুল বাশার বলেন, ‘শুধু ধানের ফলন বৃদ্ধিই নয়, পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান উৎপাদনের দিকেও সমান গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ এমনকি উদ্বৃত্ত হলেও আমাদের বিপুল জনগোষ্ঠীর এখনো পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয় উচ্চফলনশীল জাতের পাশাপাশি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধান উৎপাদনে দিকে বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে।’ আরও পড়ুন: বীজ বোর্ডের অনুমোদন পেল ধানের দুইটি জাত তিনি আরও বলেন, ‘কৃষকের বোরো ফলনের ধারণা বদলে দিয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত নতুন জাতগুলো। এবার এলাকাভেদে ব্রি-৮৯, ৯২, বঙ্গবন্ধু-১০০ ও ব্রি-১০২ নতুন জাতগুলোর উৎপাদন ৩৩ শতকে ৩৩ মণের মতো হয়েছে। অর্থাৎ শতকে এক মণ ফলন হয়েছে। কোথাও কোথাও এর বেশিও ফলনের রেকর্ড রয়েছে। যেখানে ব্রি উদ্ভাবিত পুরনো জাতগুলোর ফলন ছিল বিঘাপ্রতি ২২-২৫ মণ মাত্র।’ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ‘প্রতি বছর আমাদের জনসংখ্যার সঙ্গে ২০-২২ লাখ লোক যোগ হচ্ছে। ১৭ কোটি জনসংখ্যার এ দেশে খাবারের নিশ্চয়তা দিতে হলে অবশ্যই ব্রি উদ্ভাবিত নতুন জাতের উচ্চফলনশীল ধানগুলো চাষ করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। কেননা ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত নতুন জাতগুলোর ফলন আগের পুরনো জাত ব্রি-২৮ ও ২৯ এর চেয়ে অনেক বেশি। এগুলো যদি ভালো পরিচর্যা করা যায়, তাহলে আরও বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব। সুতরাং এখন পুরনো জাত বাদ দিয়ে নতুন জাতের ধান ব্রি-৮৯, ব্রি-৯২, বঙ্গবন্ধু-১০০ এবং ব্রি-১০২ চাষ করতে হবে। উপরন্তু বঙ্গবন্ধু-১০০ এবং ব্রি-১০২ চিকন, উচ্চজিংকসমৃদ্ধ, জিরা টাইপের যা আমাদের পুষ্টির চাহিদাও পূরণ করবে। এগুলো প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান হওয়ায় বাজারমূল্যও অন্য ধানের তুলনায় বেশি।’ সরিষা অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে দুই ফসলি শস্য বিন্যাসকে তিন ফসলি শস্য বিন্যাসে রূপান্তর প্রদর্শনীর প্রধান গবেষক ড. আমিনা খাতুন জানান, নতুন উদ্ভাবিত ব্রি-৯২ ও ব্রি ১০২ জাতের ধান উৎপাদনে অনেক বেশি ফসল পেয়েছেন কৃষকরা। এছাড়া এ ধানে জিংকের পরিমাণ প্রতি কেজিতে ২৫ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম। সুতরাং এ দুটি জাত আবাদ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। স্থানীয় কৃষক প্রতিনিধি সোহরাব উদ্দিন জানান, তিনি এবার আগে যে জমিতে দুই ফসল করতেন ব্রির বিজ্ঞানিদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় এখন আমনের পর সরিষা তারপর বোরো আবাদ করেছেন। এভাবে দু’ফসলি জমিকে তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করায় তার লাভের পরিমাণ দেড় থেকে দুগুণ বেড়েছে। আরও পড়ুন: হিলিতে ক্যানসার প্রতিরোধী ব্ল্যাক ধানের চাষ স্থানীয় কৃষক আনসার আলী বলেন, ‘এবার মুশুদ্ধিতে ব্রির নতুন জাতের ধান ব্রি-৯২ চাষ করে তিনি ৩০ শতকের বিঘায় ফলন পেয়েছেন ৩৪ মণ এবং ব্রি-১০২ এর ফলন পেয়েছেন ৩২ মণ। বাড়তি হিসেবে আমনের পরে বারি সরিষা-১৪ আবাদ করে বিঘায় প্রায় ৬ মণ করে সরিষা পেয়েছেন। যার বাজার মূল্য ২৪০০০ টাকা। কৃষিকে আমরা আগে অলাভজনক ভাবতাম কিন্তু এখন কৃষি অনেক বেশি লাভজনক পেশা।’ অনুষ্ঠানের আগে কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে ফসল কর্তনে অংশ নেন প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিরা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ব্রির সিনিয়র বিজ্ঞানি ড. খায়রুল কায়েস, এবিএম জামিউল ইসলাম, মো. আব্দুল মোমিন, বীর জাহাঙ্গীর সিরাজী ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান প্রমুখ। টাঙ্গাইলে এ বছর এক লাখ ৭৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। ব্রি উদ্ভাবিত পুরনো জাতগুলোর ফলন ছিল ৩৩ শতাংশে ২২-২৫ মণ, আর নতুন জাতের ব্রি-৯২ ও ব্রি-১০২ ৩৩ শতাংশে ৩৩ মণ ধান হচ্ছে।Slider
দেশ - বিদেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: