Sponsor



Slider

বিশ্ব

জাতীয়

মেহেরপুর জেলা


গাংনী উপজেলা

মুজিবনগর উপজেলা

ফিচার

খেলা

মেহেরপুর সদর উপজেলা

ছবি

ফেসবুকে মুজিবনগর খবর

» » » » » তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান কেন বারবার ক্ষমতায়




তুরস্কের প্রেসিডেন্ট পদে টানা তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। রোববার দেশটিতে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফা ভোটে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। এরদোগান পেয়েছেন ৫২ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট। আর প্রধান বিরোধী জোটের প্রার্থী কেমাল কিলিচদারওলু পেয়েছেন ৪৭ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট। এতে এরদোগান বেসরকারি প্রেসিডেন্ট পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন। Advertisement আজারবাইজান, কাতার, হাঙ্গেরি, উজবেকিস্তান, উত্তর সাইপ্রাস, পাকিস্তান, রাশিয়া, লিবিয়া, আফগানিস্তান, ইরান, ফিলিস্তিন, জর্জিয়া, আলজেরিয়া, কসোভো ও সোমালিয়া ১৩তম নবনির্বাচিত তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এখন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী থেকে শুরু করে তুরস্কের গণমানুষের সোশ্যাল মিডিয়ায় আলহামদুলিল্লাহ শব্দে ছেয়ে গেছে। তুরস্কের নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান একটি সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক নীতির মাধ্যমে দৃঢ়তা, বাস্তববাদিতা এবং বৈশ্বিক অঙ্গনে তুরস্কের প্রভাব প্রসারিত করেছে। ২০০২ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এরদোগানের সবচেয়ে প্রভাবশালী নীতিগুলোর মধ্যে একটি ছিল আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে তুরস্কের ভূমিকা গতিশীল রাখা। এরদোগানের লক্ষ্য ছিল তুরস্ককে এ অঞ্চলে ও এর বাইরেও একটি প্রধান শক্তি হিসাবে তুলে ধরা। উদাহরণস্বরূপ, সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে, সিরিয়ার বিরোধী দলগুলোকে সমর্থন করেছিল ও লাখ লাখ সিরীয় উদ্বাস্তুকে সাহায্য প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। এটি করার মাধ্যমে এরদোগান মূলত তুর্কি শক্তিকে জানান দেয়, সংঘাতের গতিপথকে প্রভাবিত করা। এরদোগানের নেতৃত্বে সিরিয়ার শরণার্থী সংকটে তুরস্কের প্রতিক্রিয়া প্রশংসনীয়। এরদোগানের বৈশ্বিক নীতি নব্য-ওসমানী ও প্যান-ইসলামিক পরিচয়ের নীতি দ্বারা অবহিত করা যায়, যা মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে তুরস্কের ঐতিহাসিক প্রভাবকে পুনরুজ্জীবিত করার আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে। উসমানীয় খিলাফতে ঐতিহ্যের আহ্বান জানিয়ে এরদোগান মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে সংহতি গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এর মাধ্যমে তুর্কি জনগণের কাছে ও মুসলিম বিশ্বের মধ্যে নিজেকে বিশ্ব নেতা হিসাবে স্থান করে নিয়েছেন। এরদোগান তার প্রতিরক্ষা নীতির মূল দিক হিসাবে সামরিক আধুনিকায়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তার নেতৃত্বে, তুরস্ক তার প্রতিরক্ষা সক্ষমতা উন্নত করতে, প্রতিরক্ষা উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা বাড়াতে এবং একটি আঞ্চলিক শক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এরদোগানের সামরিক আধুনিকীকরণ কৌশলের একটি মৌলিক স্তম্ভ হলো দেশীয় প্রতিরক্ষা শিল্পের প্রচার ও প্রসার। অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার ওপর এ ফোকাসের ফলে বিভিন্ন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সফলভাবে উৎপাদন করা হয়েছে, যার বাইরাকতার ও খিজিরএলমার মতো ড্রোন, মিসাইল। টিচিজি আনাদোলু ড্রোন ওয়ারশিপের মতো নৌযান রয়েছে। তুরস্কের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য, এরদোগানের সরকার প্রযুক্তি এবং গবেষণা ও উন্নয়ন কর্মসূচিতে বিনিয়োগ করেছে। উপরন্তু, এরদোগানের সরকার তুরস্কের সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষার জন্য সিরিয়ায় সামরিক হস্তক্ষেপ এবং পিকেকে, ওয়াইপিজে ও আইএসআইএসের মতো সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই এবং আজারবাইজান, ইউক্রেন, রাশিয়া, কাতার, লিবিয়া, উত্তর সাইপ্রাস, প্যালেস্টাইন, আফগানিস্তান, সোমালিয়ায় কূটনৈতিক ও সামরিক সহযোগিতা করাসহ এ চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করার জন্য একটি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। এরদোগানের সরকার সারা বিশ্বে, বিশেষ করে আরব বসন্তের সময় ইসলামি আন্দোলন ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি সমর্থন প্রদর্শন করেছিল। তুরস্ক মিসরে মুসলিম ব্রাদারহুডের মতো গোষ্ঠীকে সমর্থন করেছে এবং সিরিয়ায় বিরোধী শক্তিকে সমর্থন করেছে। এই গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সমর্থন প্রদর্শনের মাধ্যমে এরদোগান মুসলিম দেশগুলোতে উম্মাহের ঐক্যের একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রচার করাসহ তুরস্কের আঞ্চলিক উদ্দেশ্যগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল এমন মিত্রদের এক করে তোলার অভিপ্রায় করেছিলেন। মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে, সাম্প্রতিক সময়ে, এরদোগান একটি সক্রিয় ও বহুমুখী মধ্য এশিয়ার নীতি অনুসরণ করেছেন। যার লক্ষ্য ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করা, অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রচার করা এবং এই অঞ্চলে তুরস্কের প্রভাব বিস্তার করা। বিভাজিত তুর্কি ঐতিহ্য, ভাষা ও ঐতিহাসিক সংযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তুরস্ক এই অঞ্চলের সঙ্গে শক্তিশালী সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সম্পর্কের বিস্তার লাভ করাতে চেয়েছে। অরগানাইজেশন অফ তুর্কি কস্টেটস (ওটিএস) এর সাম্প্রতিক সূচনার মাধ্যমে, তুরস্ক মানুষের একে-অপরের মধ্যে সংযোগ বাড়ানো এবং তুর্কিভাষী দেশগুলোর মধ্যে সাধারণ পরিচয়ের চেতনাকে আরও অধিক পরিমাণে জাগ্রত করার লক্ষ্য নিয়েছে। উপরন্তু, মধ্য এশিয়ায় এরদোগানের সবচেয়ে স্বার্থমুখীনীতির একটি হলো এই অঞ্চলের বিশাল শক্তিসম্পদ এবং শক্তি সহযোগিতার সম্ভাবনা। তুরস্ক প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান, পরিবহণ এবং অবকাঠামো উন্নয়নসহ এনার্জি সেক্টরে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চেয়েছে। পাইপলাইন নির্মাণ, যেমন বাকু-তিবিলিসি-সেহান পাইপলাইন ও ট্রান্স-আনাতোলিয়ান প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইন (TANAP), তুরস্ক এবং কাস্পিয়ান সাগর অঞ্চলের মধ্যে শক্তি নিরাপত্তা সংযোগ বৃদ্ধি করেছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে শক্তিশালী করেছে। পররাষ্ট্রও প্রতিরক্ষানীতি ছাড়াও, এরদোগানের অভ্যন্তরীণ নীতি তুরস্কের আধুনিকীকরণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও রক্ষণশীল মূল্যবোধের প্রচারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে বহুমুখী এজেন্ডা অনুসরণ করেছে। অর্থনৈতিক সংস্কার, সামাজিক কল্যাণ কর্মসূচি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিকনীতির মাধ্যমে এরদোগানের সরকার জীবনযাত্রার উন্নতি, দারিদ্র্য হ্রাস এবং আর্থ-রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপ পরিবর্তনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। এরদোগানের সরকার দারিদ্র্য হ্রাস, স্বাস্থ্যসেবা অ্যাক্সেসের উন্নতি ও দুর্বল গোষ্ঠীগুলোকে আর্থিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি সামাজিক কল্যাণমূলক কর্মসূচিও চালু করেছে। হেলথ ট্রান্সফরমেশন প্রোগ্রামের মতো প্রোগ্রাম স্বাস্থ্যসেবা কভারেজকে প্রসারিত করেছে। চিকিৎসা সুবিধা উন্নত করেছে, জনসেবা উন্নত করেছে ও উন্নত স্বাস্থ্য ফলাফলে অবদান রেখেছে। উপরন্তু, সরকার সামাজিক ন্যায্যতা ও অন্তর্ভুক্তির প্রতি অঙ্গীকার প্রদর্শনকরে নিম্ন আয়ের পরিবার, ছাত্র ও বয়স্কদের পাশে থাকার উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছে। রক্ষণশীল ও ইসলামিক মূল্যবোধের প্রচার এরদোগানের দেশীয়নীতির একটি উল্লেখযোগ্য দিক। তার সরকার শিক্ষা, সাংস্কৃতিকনীতি ও ধর্মীয় অনুশীলনে সংস্কার প্রবর্তন করে যাতে সেগুলোকে ইসলামীনীতি ও সামাজিক নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্য করা যায়। উদাহরণস্বরূপ, সরকার ধর্মীয় শিক্ষার ওপর জোরদার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় যথাসাধ্য পরিবর্তন বাস্তবায়ন করেছে। ধর্মীয় বৃত্তিমূলক স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছে ও সারা দেশে অসংখ্য মসজিদ নির্মাণের সুবিধা দিয়েছে। এ পদক্ষেপগুলো জনসংখ্যার একটি অংশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে যার রক্ষণশীল মূল্যবোধের সঙ্গে যোগসাজশ তৈরি করে ও তুরস্কের আর্থ-রাজনৈতিক পরিবর্তনে অবদান রাখে। এরদোগানের সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও নগরায়ণের ওপর উল্লেখযোগ্য জোর দিয়েছে। সেতু, বিমানবন্দর, মহাসড়ক এবং উচ্চ-গতির রেলপথ নির্মাণের মতো উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলো শুধু দেশের অভ্যন্তরে যোগাযোগ এবং পরিবহণের উন্নতি করেনি বরং তুরস্ককে বাণিজ্য ও পর্যটনের একটি আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসাবে স্থান দিয়েছে। এই উদ্যোগগুলো বিভিন্ন অঞ্চলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করেছে, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করেছে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। ড. মো. নাজমুল ইসলাম সহকারী অধ্যাপক, আংকারা ইলদিমির বেয়েজিদ ইউনিভার্সিটি তুরস্ক, এশিয়া ও ইন্দো-প্যাসিফিক স্টাডিজের প্রধান






«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply