চীন-রাশিয়াকে রুখতে দল ভারী করছে যুক্তরাষ্ট্র
চীন ও রাশিয়াকে রুখতে এবার জি-৭-এর বাইরের দেশগুলোকে দলে ভেড়াতে তৎপর বিশ্ব মোড়ল যুক্তরাষ্ট্র। পশ্চিমাদের এই উদ্যোগ নিয়ে বিশ্ব রাজনীতিতে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন ইস্যুতে ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ভিয়েতনামসহ কয়েকটি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকলেও রাশিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রয়েছে তাদের। তাই পশ্চিমাদের এই তৎপরতার ভবিষ্যৎ নিয়ে রয়েছে নানা সংশয়।
জি-৭ সম্মেলনে নেতারা। ছবি: সংগৃহীত
জ
বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর সবচেয়ে শক্তিশালী জোট জি-৭। ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই জোটের সদস্য হলেও মূলত এর পেছনের শক্তি যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা বৈশ্বিক সংকটে প্রচণ্ড চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ায় জাপানের হিরোশিমায় হয়ে গেল জোটের শীর্ষ সম্মেলন। নিজেদের নড়বড়ে অবস্থানকে সুদৃঢ় করতে অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইউক্রেন, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিলসহ বেশ কয়েকটি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
প্রশ্ন উঠেছে জোটের বাইরে কেন এই দেশগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সমালোচকরা বলছেন, চীনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব রয়েছে এমন দেশগুলোকেই ডাকা হয়েছিল। ক্রমবর্ধমান অর্থনেতিক শক্তি বেইজিংকে রুখতে বিশ্ব মোড়ল হিসেবে অস্তিত্ব সংকটে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন চাল।
আরও পড়ুন: চীনের সঙ্গে ‘গঠনমূলক এবং স্থিতিশীল’ সম্পর্ক চায় জি-৭
দীর্ঘদিন ধরেই সীমান্ত ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে বিরোধ চলছে চীনের। অরুণাচল প্রদেশ এবং লাদাখে প্রায়ই সংঘাতে জড়ায় দেশদুটির সেনাবাহিনী। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে চীনের বিরুদ্ধে ভারতকে কাজে লাগতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। আর তাতে সাড়া দিয়ে নিজেকে রক্ষায় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বৈঠকে যান।
দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানা নিয়ে বেইজিংয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনামসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর। শুধু তা-ই নয়, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেশটির প্রভাব নিয়ে চিন্তিত অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়াও। সেটা প্রতিরোধের একটা প্ল্যাটফর্ম পাওয়ায় তারা সবাই ছোটে জি-সেভেন জোটসভায়।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, চীন ও রাশিয়াকে মোকাবিলায় আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন স্বার্থকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চায় যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশগুলো। এই কৌশল কতটা কাজে লাগবে আসলে। চীন ইস্যুতে পশ্চিমা দেশগুলোর পাশে থাকলেও রাশিয়ার ক্ষেত্রে একেবারেই উল্টো ভারত। কারণ, তাদের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল আমদানি অব্যাহত রেখেছে মোদি প্রশাসন।
আরও পড়ুন: জি-৭ সম্মেলনকে ‘প্রপাগান্ডা শো’ হিসেবে অভিহিত করেছে রাশিয়া
অন্যদিকে ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়ার সামরিক অস্ত্রের মূল জোগানদাতা রাশিয়া। আবার পশ্চিমা বিশ্বের তুলনায় চীনের অর্থনীতির ওপর নির্ভরতা আগের চেয়ে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে লাতিন আমেরিকা ও আফ্রিকার দেশগুলোর। সম্প্রতি চীন সফরে গিয়ে সেই সম্পর্ক আরও জোরদারের ঘোষণা দেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা। এ অবস্থায় চীন-রাশিয়াকে চাপে ফেলতে জি-সেভেন জোটের এমন চাল কতটুকু সফল হবে, তা নিয়ে রয়েছে নানা সংশয়।
চীনের অদম্য গতির রশিকে টেনে ধরতে যখন হিরোশিমায় ছক কষেন বাইডেন মিত্ররা, তখন জিয়ান শহরে সেন্ট্রাল এশিয়ার ৫টি দেশকে নিয়ে সম্মেলনের আয়োজন করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানকে নিয়ে সম্মেলনে জি-সেভেন জোটকে একহাত নেন শি জিনপিং। বলেন, চীনের অগ্রগতি রুখতে পশ্চিমা দেশগুলো যে ষড়যন্ত্র করছে, বিশ্বে তার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই
Tag: English News Featured others world
No comments: