হঠাৎ কেন গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সুদানে
সুদানের সশস্ত্র বাহিনী এবং আধা সামরিক বাহিনীর মধ্যে ক্ষমতার ভাগ-বণ্টন নিয়ে বেধে গেছে রক্তক্ষয়ী লড়াই। এতে এখন পর্যন্ত ৫৬ জন নিহত এবং ৬শ জনের মতো আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে যেমন বেসামরিক লোকজন আছে; তেমনি আছে উভয় পক্ষের সৈন্যও। কিন্তু কেন রক্তক্ষয়ী এ লড়াই? কেন হঠাৎ দেশটিতে গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হলো?
সম্প্রতি খার্তুমে সেনাবাহিনী-আরএসএফ রক্তক্ষয়ী লড়াই চলাকালে শহরটির একটি এলাকা থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। ছবি: রয়টার্স
সম্প্রতি খার্তুমে সেনাবাহিনী-আরএসএফ রক্তক্ষয়ী লড়াই চলাকালে শহরটির একটি এলাকা থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। ছবি: রয়টার্স
দ্বন্দ্বের শুরু মূলত সুদানের সশস্ত্র বাহিনীতে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স বা আরএসএফের প্রস্তাবিত একত্রীকরণের ঘোষণার মধ্যদিয়ে। এর কারণে, দেশটিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সমর্থিত গণতন্ত্রে উত্তরণ প্রক্রিয়াও পিছিয়ে গেছে।
আরএসএফের মূল কারিগর ছিলেন সুদানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির। তিনি ২০১৩ সালে আরএসএফ গঠন করেন। পরে অবশ্য গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনের কারণে ২০১৯ সালে ওমর আল-বশির ক্ষমতাচ্যুত হন। এরপর বেসামরিক লোকদের সমন্বয়ে গঠিত সরকার ক্ষমতা দখল করে। ২০২১ সালে এসে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী সে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে। এ কাজে সশস্ত্র বাহিনীকে সহায়তা করে আরএসএফ।
আরও পড়ুন: সুদানে সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত বেড়ে ৫৬, আহত ৫৯৫
এর পর থেকেই দুপক্ষের মধ্যে মূলত টানাপোড়েন শুরু। কারণ উভয় পক্ষই নিজেদের ক্ষমতার বৈধ হকদার বলে দাবি করতে থাকে এবং দেশ পরিচালনায় নিজেদের অংশগ্রহণ দাবি করতে থাকে আরএসএফ। তবে সাম্প্রতিক সময়ে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং আরএসএফের প্রধান জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগালোর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় এ সংকট আরও গভীর হয়।
দুই শীর্ষ জেনারেলের মধ্যে দ্বন্দ্বের শুরুটা মূলত আরএসএফকে কোন উপায়ে মূল সেনাবাহিনীর সঙ্গে আত্তীকরণ করা হবে সেই বিষয়টি নিয়ে। বিশেষ করে দেশের কোন কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফের আত্তীকরণ তত্ত্বাবধান করবে তা নিয়ে দুই জেনারেলের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠে।
উল্লেখ্য, এ দুই বাহিনীর একীভূতকরণ প্রক্রিয়া দেশটির গণতন্ত্রে উত্তরণের অন্যতম শর্ত।
আরও পড়ুন: সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে সুদানের বিভিন্ন শহরে
লড়াই সংঘটিত হচ্ছে কোথায়
সুদানের সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের লড়াইয়ের মূল কেন্দ্র দেশটির রাজধানী খার্তুম। বিশেষ করে রাজধানীতে অবস্থিত প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ, রাষ্ট্রীয় টিভি ও বেতার ভবন এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে কেন্দ্র করে তীব্র লড়াই চলছে। রাজধানীর বাইরে খার্তুমের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর অমদুরমান এবং উত্তরে অবস্থিত বাহরি শহরেও লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে।
এ তিন শহরের বাইরে বন্দরনগরী পোর্ট সুদানেও গোলাগুলির আওয়াজ শোনা গেছে। এছাড়া পশ্চিম সুদানে অবস্থিত কাবকাবিয়া সেনা ঘাঁটিতে দুই পক্ষের বন্দুকযুদ্ধের মধ্যে পড়ে বিশ্ব খাদ্য সংস্থার ৩ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা
Tag: English News others world
No comments: