সুদানে আবারও ব্যর্থ অস্ত্রবিরতি, রক্ত ঝরছেই

সুদানে সময় পূর্ণ হওয়ার আগেই ব্যর্থ হলো ৭২ ঘণ্টার অস্ত্রবিরতি। আবারও শুরু হয়েছে সেনাবাহিনী এবং আধাসামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যকার লড়াই। এতে দেশটিতে প্রাণহানির সংখ্যা কেবল বাড়ছেই। তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। দুই পক্ষের লড়াইয়ের ফলে খার্তুম শহরের কয়েকটি এলাকা থেকে ধোঁয়া উড়ছে। ছবি: এএফপি সুদানের চিকিৎসকদের সংগঠন সুদানিজ ডক্টরস-এর কেন্দ্রীয় কমিটি, অস্ত্রবিরতি ভেস্তে গিয়ে আবারও দুই পক্ষের মধ্যকার লড়াই শুরু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। শনিবার (২২ এপ্রিল) সংগঠনটি জানিয়েছে, সেনাবাহিনী এবং আরএসএফ অস্ত্রবিরতির শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হওয়ায় এবার হাসপাতালগুলোতে আরও বেশি হতাহত আসতে শুরু করেছে। সুদানে কর্মরত আনাদোলু এজেন্সির নিজস্ব সংবাদদাতা জানিয়েছেন, রাজধানী খার্তুম ছাড়াও পাশের শহর বাহরি এবং অমদুরমানেও সেনাবাহিনী এবং আরএসএফের মধ্যে লড়াই চলছে। উভয় পক্ষই অস্ত্রবিরতির শর্ত ভঙ্গের জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছে। শহর দুটি ছাড়াও খার্তুমে সেনাবাহিনীর প্রধান কার্যালয় এবং প্রেসিডেন্ট প্রাসাদকে কেন্দ্র করেও লড়াই চলছে। আরও পড়ুন: সুদানে সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়াল সুদানের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, আরএসএফ অস্ত্রবিরতির শর্ত ভঙ্গে করে খার্তুমে সেনা সংখ্যা বাড়াচ্ছে। জবাবে আরএসএফ দাবি করেছে, সেনাবাহিনীই আগে বিভিন্ন অবস্থানে হামলা চালিয়েছে। এদিকে, সেনা ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘাত অব্যাহত থাকায় দেশটিতে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিদেশিদের সরিয়ে নেয়ার এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সুদানি সেনাবাহিনী (এসএএফ)। আরএসএফও জানিয়েছে, তারাও বিদেশিদের সরিয়ে নিতে বিমানবন্দর খুলে দিতে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। সুদানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং চীন খার্তুম থেকে নিজ নিজ নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার জন্য সামরিক বিমান পাঠাবে খার্তুমে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সৌদি আরবই প্রথম দেশ যারা তাদের কূটনীতিকদের বন্দরনগরী পোর্ট সুদানের মাধ্যমে সরিয়ে নিয়েছে। জর্ডানও একই পথ অনুসরণ করবে। আরও পড়ুন: অস্ত্রবিরতি প্রস্তাব ব্যর্থ, নিহত বেড়ে প্রায় ৩০০ অপরদিকে, গত সপ্তাহে শুরু হওয়া রক্তক্ষয়ী সংঘাতে নিহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত ৪১৩ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৫০০ জন। উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (২১ এপ্রিল) সুদানে ঈদুল ফিতরে উপলক্ষ্যে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছিল আরএসএফ। সেনাবাহিনীও বিষয়টি মেনে নিয়েছিল। যা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে। কিন্তু আচানক সবকিছু উল্টাপাল্টা হয়ে গেছে। একদিন পার না হতেই আবারও শুরু হয়ে গেছে লড়াই।