মাকে পাঁচ টুকরো করে হত্যায় ছেলেসহ ৭ জনের মৃত্যুদণ্ড
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে নুর জাহান বেগম (৫৭) নামে এক নারীকে পাঁচ টুকরো করে হত্যার ঘটনায় ছেলে হুমায়ুন কবিরসহ ৭ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন জেলা জজ আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের প্রত্যেককে অতিরিক্ত আরও ৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
প্রতীকী ছবি
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন জাহাজমারা গ্রামের আবদুল বারেকের ছেলে হুমায়ুন কবির (২৯), একই গ্রামের মিলন মাঝির ছেলে নীরব (২৮), নূরে আলমের ছেলে কসাই নূর ইসলাম (২৮), দুলাল মাঝির ছেলে আবুল কালাম মামুন (২৮), হারুনের ছেলে মিলাদ হোসেন মামুন (২৮), মমিন উল্যার ছেলে ইসমাইল হোসেন (৩৫) এবং মারফত উল্যার ছেলে হামিদ (৩৫)।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বুধবার বিকেলে সুবর্ণচরের জাহাজমারা গ্রামের একটি বিলের মাঝের ধানক্ষেত থেকে নূর জাহান নামের ওই গৃহবধূর ৫ খণ্ডের মৃতদেহের একটি অংশ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে নিহতের শরীরের আরও ৪টি খণ্ড উদ্ধার করে পুলিশ।
এর আগের দিন ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর রাতে খাওয়ার পর নিজের শয়ন কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন নূর জাহান। ওইদিন রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত ১২টার কোনো একসময় হুমায়ুন কবির তার অপর ৬ সহযোগীকে নিয়ে ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় নূর জাহানকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী মরদেহ পার্শ্ববর্তী একটি ধানক্ষেতে নিয়ে প্রথমে ধারাল অস্ত্র দিয়ে মাথা আলাদাসহ মোট ৫ টুকরো করে। পরে মৃতদেহের খণ্ডিত অংশগুলো ধান ক্ষেত ও একটি বিলের মধ্যে ফেলে দেয়। যা গ্রেফতার আসামিদের মধ্যে ৫ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে স্বীকার করে।
আরও পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধে ময়মনসিংহে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড
এ ঘটনায় প্রথমে নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে চরজব্বার থানায় একটি মামলা করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে ওই মামলার বাদী হুমায়ুনকে সন্দেহজনক ভাবে আটক করে। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে তার পরিকল্পনা অনুযায়ী খুন হয়েছে প্রমাণ মিললে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হুমায়ুনসহ মোট ৭ জনকে গ্রেফতার করে। মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য জেলা গোয়েন্দা পুলিশ হস্তান্তর করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল। তিনি বলেন, এ ঘটনায় আদালত মোট ২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুর রহমান বলেন, আসামিরা সবাই বয়সে নবীন। যেহেতু পারিবারিক বিরোধেরে জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেহেতু মৃত্যুদণ্ড রায়টি তাদের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আসামিদের উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ রয়েছে
Tag: English News politics
No comments: