আলোচনায় বসতে রাশিয়াকে শর্ত ইউক্রেনের
রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য শর্ত দিয়েছে ইউক্রেন। তবে আলোচনার বিষয়ে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছে তারা। ইউক্রেন থেকে রুশ সেনারা পুরোপুরি সরে গেলে তারা আলোচনায় বসতে পারে। খবর আল জাজিরার।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সোমবার (০৭ নভেম্বর) রাতে দেয়া এক ভাষণে বলেন, সীমানা পুনরুদ্ধার, রাশিয়ার হামলার ক্ষতিপূরণ এবং যুদ্ধাপরাধে দায়ীদের সাজা নিশ্চিত করবে এমন ‘প্রকৃত’ আলোচনায় কিয়েভ মস্কোর সঙ্গে বসতে রাজি।
কিয়েভের একরোখা ভাব তাদের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থন নষ্ট করে দিতে পারে, এই আশঙ্কায় ইউক্রেন যেন আলোচনায় বসতে তাদের আগ্রহের সংকেত দেয় যুক্তরাষ্ট্র তা খুব করে চাইছিল বলে কয়েকদিন আগেই ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল।
গত ০৭ নভেম্বর ইতালির লা রিপাবলিকা পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেনের সেনারা খেরসন অঞ্চল মুক্ত করার পর পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর পক্ষ থেকে মস্কোর সঙ্গে আলোচনায় বসার সম্ভাব্যতা দেখতে বলা হয়। এতে কিয়েভ অনেকটা শক্তিশালী অবস্থানে থেকে আলোচনা করতে পারবে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মাইখাইলো পোদোলিয়াক বলেছেন, রুশ সেনারা যদি ইউক্রেন ছেড়ে যান, তবেই কেবল মস্কোর সঙ্গে আলোচনায় বসবে কিয়েভ। ২০১৪ সালে দখল করা ক্রিমিয়াও ছাড়তে হবে রুশ সেনাদের।
আরও পড়ুন: ‘গোপন বৈঠক’ নিয়ে যা বললেন পেসকভ
পোদোলিয়াক বলেন, রাশিয়ার পক্ষ থেকে ইউক্রেনকে কেবল হুমকি দেয়া হয়েছে। এ হুমকির ভিত্তিতে যেকোনো শান্তিচুক্তি অস্থায়ী হবে বলে মনে করে ইউক্রেন। রাশিয়া এ শান্তিচুক্তি তাদের সেনা জড়ো করার ও সেনাবাহিনীকে আধুনিক করার কাজে লাগাবে এবং একই হুমকি দিতে থাকবে।
মস্কোর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে সোমবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, তারা আলোচনায় রাজি থাকলেও কিয়েভ তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছে।
এদিকে ইউক্রেনে যুদ্ধ সত্ত্বেও ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যম খোলা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। সোমবার (৭ নভেম্বর) নিউইয়র্কে বক্তব্যে সুলিভান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্বার্থে’ ক্রেমলিনের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাড়ছে সংঘাত, উদ্বাস্তু হওয়ার শঙ্কায় কিয়েভের বাসিন্দারা
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একটি প্রতিবেদনের বিষয়ে ক্রেমলিন মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে এ ঘোষণা আসে। রোববার (৬ নভেম্বর) ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, জ্যাক সুলিভান বৃহত্তর যুদ্ধ বা পরমাণু যুদ্ধের ঝুঁকি কমানোর আশায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পররাষ্ট্রনীতি সহায়ক ইউরি উশাকভ ও রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের প্রধান নিকোল পাত্রুশেভের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
সংশ্লিষ্ট মার্কিন কর্মকর্তারা ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে জানান, ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে শান্তি-মীমাংসার পরিবর্তে আলোচনার লক্ষ্য ছিল ‘ঝুঁকি থেকে রক্ষা এবং যোগাযোগের মাধ্যমগুলো খোলা রাখা’। তবে কখন এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বা সেগুলো ফলপ্রসূ হয়েছে কি না, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
No comments: