ভারতে আম আদমি পার্টির উত্থান
ভারতে ধীরে ধীরে উত্থান হচ্ছে আম আদমি পার্টির। দিল্লি বিধানসভার পর চলতি বছর পাঞ্জাবের নির্বাচনে জয় পেয়েছে দলটি। আসন্ন গুজরাট ও হিমাচলের বিধানসভা নির্বাচনেও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল অনেকটা এগিয়ে থাকবে বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে, বিধানসভা নয় আগামী লোকসভা নির্বাচনে মোদি বনাম কেজরিওয়ালের লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছেন দেশটির অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। খবর জি নিউজের।
২০১২ সালের ২৬ নভেম্বর ভারতে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে আম আদমি পার্টি বা আপ। যার নেতৃত্বে থাকেন দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনকর্মী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
এর এক বছরের মাথায় ২০১৩ সালে দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসেবে নিজেদের জানান দেয় আপ। ভারতীয় কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে রাজ্যে সরকারও গঠন করেন কেজরিওয়াল। দুর্নীতিবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে সরব হয়ে সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয় দলটি।
২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করে আম আদমি পার্টি। যদিও ওই নির্বাচনে কোনো আসনেই জয় পায়নি দলটি। তবে, ২০১৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ৭০ আসনের মধ্যে ৬৭টি আসনে জয় পেয়ে এককভাবে দিল্লিতে সরকার গঠন করে আপ। দ্বিতীয়বারের মতো মুখ্যমন্ত্রী হন অরবিন্দ কেজরিওয়াল। এরপর শুধু সামনে এগিয়ে যাওয়া। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ১টি আসনে জয় ও ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পুনরায় বিপুল আসন অর্জন করে দলটি।
আরও পড়ুন: অমুসলিমদের নাগরিকত্ব: ভোটের আগে বিজেপির নতুন কৌশল?
২০২২ এ এসে আবার ভারতজুরেই চমক দেখাচ্ছে আম আদমি পার্টি। কংগ্রেসকে হটিয়ে প্রথমবারের মতো পাঞ্জাবের ক্ষমতায় যায় আপ। গোয়া ও উত্তরাখণ্ডেও নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিয়েছে তারা। এখন লক্ষ্য আসন্ন গুজরাট ও হিমাচলের বিধানসভা নির্বাচন। ডিসেম্বরের ভোটে রাজ্য দুটিতেও হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করতে পারে কেজরিওয়ালের দলটি।
ভারতে কংগ্রেস ও বিজেপিকে টেক্কা দিয়ে আম আদমি পার্টির দিকে কোনো মানুষ আকর্ষিত হচ্ছে কি না, এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো। দিল্লিতে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে যে সংস্কার এনেছে আপ, ঠিক তেমন পরিবর্তন চাচ্ছে অন্য রাজ্যের জনগণ। দিল্লিতে শিক্ষা খাতে ব্যাপক সংস্কার এনেছেন কেজরিওয়াল, যার সুবিধা পাচ্ছে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে অভিভাবকরা।
আরও পড়ুন: দিল্লির বাতাসে বিষ!
শিক্ষার মতো স্বাস্থ্য খাতেও কাঠামোগত সংস্কার করেছে আপ। যার প্রধান মডেল হচ্ছে মহল্লা ক্লিনিক। এই মহল্লা ক্লিনিকের মাধ্যমে জনগণকে ফ্রিতে সবধরণের চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা করেছে দলটি। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় অনেক রাষ্ট্রীয় সেবা পেতে চালু করা হয়েছে দিল্লি মডেল। এর ফলে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়াই সেবা পাচ্ছে দিল্লির জনগণ।
সরকারি চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে আসা অরবিন্দ কেজরিওয়ালও মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরই মধ্যে, 'মেক ইন্ডিয়া নাম্বার ওয়ান' স্লোগানে প্রচারণা শুরু করেছেন তিনি। দলটি যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে তাতে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস নয় বিজেপির সঙ্গে আম আদমি পার্টির লড়াই হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
Tag: English News lid news others world
No comments: