ফ্রান্সের সঙ্গে মনোমালিন্য দূর করতে প্যারিসে শলৎস
ফ্রান্সের সঙ্গে মনোমালিন্য দূর করতে প্যারিসে শলৎস
ফাইল ছবি
জ্বালানি ও প্রতিরক্ষাসহ একাধিক ক্ষেত্রে জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে মতপার্থক্য তুঙ্গে উঠেছে। ইউক্রেন সংকটের মাঝে এমন মনোমালিন্য দূর করতে প্যারিস সফর করলেন জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের চালিকা শক্তি হিসেবে পরিচিত দুই দেশ জার্মানি ও ফ্রান্সের মধ্যে সম্পর্ক ইদানীং কিছুটা শীতল হয়ে পড়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধের জের ধরে জ্বালানি ও অন্যান্য সংকটের মাঝে এমন ঘটনা ইউরোপীয় স্তরে পরিস্থিতি সামাল দেবার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বার্লিন ও প্যারিসের মধ্যে মতপার্থক্য, ভুল বোঝাবুঝি, যোগাযোগের অভাব এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দুই দেশের মধ্যে নির্ধারিত মন্ত্রিসভার যৌথ বৈঠক পিছিয়ে দিতে হয়েছে, যেমনটা আগে কখনো ঘটে নি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের ‘একলা চলো রে’ নীতিকে এমন শীতল সম্পর্কের জন্য দায়ী করছে ফ্রান্স।
এমনই প্রেক্ষাপটে বুধবার সংক্ষিপ্ত প্যারিস সফর করলেন শলৎস। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের সময়ে আলোচনা ‘গঠনমূলক’ হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। বিশেষ করে ইউরোপীয় জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা নীতির প্রশ্নে মতপার্থক্য কিছুটা হলেও নাকি দূর করা সম্ভব হয়েছে। জার্মান প্রতিনিধিদলের মতে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন উদ্দীপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা গেছে। তবে শলৎস ও মাক্রোঁ হাসিমুখে ছবি তোলালেও শেষ মুহূর্তে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন বাতিল হওয়ায় সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
গত সপ্তাহে ব্রাসেলসে ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে মাক্রোঁ শলৎসকে সতর্ক করে বলেছিলেন, একাধিক সংকটের মুখে জার্মানির নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা উচিত নয়। ইইউ স্তরে গ্যাসের মূল্যের ঊর্ধ্বসীমার বিরুদ্ধে জার্মানির অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেন তিনি। তাছাড়া জার্মানি ও ফ্রান্স ইউরোপীয় স্তরে প্রতিরক্ষা আরও মজবুত করতে চাইলেও বার্লিন ইউরোপে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরির যৌথ উদ্যোগকে উপেক্ষা করছে বলে প্যারিস অভিযোগ করছে। যেমন এফসিএস জঙ্গি বিমান তৈরির প্রকল্পের প্রতি শলৎসের সরকার কোনো আগ্রহ না দেখাচ্ছে না। জার্মান সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করে তুলতে ১০,০০০ কোটি ইউরো অংকের এককালীন ব্যয়ের সিদ্ধান্ত নিলেও জার্মানি অ্যামেরিকা ও ইসরায়েলের মতো দেশ থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনছে বলেও ফ্রান্সের সরকারি মহলে ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে। ১৪টি ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে মিলে জার্মানি ইউরোপীয় এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম গড়ে তোলার উদ্যোগ নিলেও ফ্রান্স সেই প্রকল্পে অংশ নিচ্ছে না।
ফ্রান্সের প্রতি এমন ‘অবজ্ঞা’ দেখানোর জন্য জার্মানিতেও শলৎসের বিরুদ্ধে জোরালো সমালোচনা শোনা যাচ্ছে। বিরোধী সিডিইউ দলের নেতা ফ্রিডরিশ ম্যার্ৎস দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতির জন্য শলৎসের সরকারকে পুরোপুরি দায়ী করে ‘ফ্রাংকো-জার্মান ইঞ্জিন’ আবার নতুন করে চালু করার আহ্বান জানিয়েছেন। মাক্রোঁর সঙ্গে আলোচনার পর শলৎস এক টুইট বার্তায় লেখেন, ‘আজ ইউরোপীয় স্তরে জ্বালানি সরবরাহ, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও যৌথ প্রতিরক্ষা প্রকল্প সম্পর্কে খুব ভালো ও জরুরি সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জার্মানি ও ফ্রান্স কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যৌথভাবে চ্যালেঞ্জগুলি সামলাচ্ছে।’ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের দফতরও দুই শীর্ষ নেতার আলোচনা সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
Tag: English News lid news others world
No comments: