বিরাট দুঃসংবাদ পেলেন ইমরান খান
বিরাট দুঃসংবাদ পেলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। দুর্নীতির অভিযোগে তার ওপর পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এর ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না তিনি।
আল-জাজিরার প্রতিবেদন মতে, পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) শুক্রবার (২১ অক্টোবর) এক সিদ্ধান্তে জানিয়েছে, তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এজন্য তাকে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করা হলো।
তবে নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেছে ইমরান খানের দল পিটিআই। দলটি বলেছে, কমিশনের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে শিগগিরই আপিল করবে তারা। একই সঙ্গে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের রাজপথে নামার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন মতে, ইমরান খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির এ মামলা হয় গত আগস্ট মাসে। মামলাটি দায়ের করেন ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের (পিএমএল-এন) এক নেতা।
অভিযোগ, বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দেয়া উপহারের মধ্য থেকে থেকে একটি মূল্যবান স্বর্ণের হার তিনি এক অলঙ্কার ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেছেন এবং তা তে প্রাপ্ত অর্থের অতি সামান্য অংশ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে (তোষাখানা) জমা দিয়েছেন। আরও অভিযোগ, নির্বাচনে কমিশনের কাছে দেয়া আর্থিক হিসাবে এসব সম্পদ প্রকাশ করেননি তিনি।
২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের মধ্যদিয়ে প্রধানমন্ত্রী হন বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক হয়ে ওঠা ইমরান খান। কিন্তু মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই চলতি বছরের এপ্রিলে পার্লামেন্টে বিরোধী দলগুলোর আনা অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান।
অবশ্য পাকিস্তানের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত নির্বাচিত কোনো প্রধানমন্ত্রীই তার মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। তবে ইমরানের আগে আর কেউ অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হননি।
ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে আগাম নির্বাচনের দাবির পাশাপাশি নতুন করে দল গোছানোর চেষ্টা করছেন ইমরান খান। সেই লক্ষ্যে গত কয়েক মাস ধরে দেশজুড়ে একের পর এক সভা, সমাবেশ ও লংমার্চ করছেন তিনি।
এতে সারাদেশে তার পক্ষে একটা ব্যাপক জনসমর্থন গড়ে উঠেছে। উপনির্বাচনগুলোতে যার প্রভাব স্পষ্ট। গত কয়েক মাসে অনুষ্ঠিত সব কটি নির্বাচনে তার দলের জয়জয়কার দেখা গেছে। এর ফলে আগামী নির্বাচনে ব্যাপক জয় নিয়ে ইমরানের আবারও ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনাও দেখছেন অনেকেই।
এদিকে ইমরান খানকে রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসা করার চেষ্টা করছিল ক্ষমতাসীন জোট। অবশেষে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে রাজনীতিতে নিষিদ্ধ করা হলো। পাকিস্তান নির্বাচন কমিশন জানায়, সংবিধানের আর্টিকেল ৬৩ (১)-এর অধীনে ইমরান খানকে ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের এক লিখিতি সিদ্ধান্তে যা বলা হয়েছে তা অনেকটা এমন, ২০১৭ সালের নির্বাচন আইনের ১৩৭, ১৬৭ ও ১৭৩ ধারায় উল্লেখিত বিধানগুলো ‘ইচ্ছাকৃত ও বেপরোয়াভাবে’ লঙ্ঘন করেছেন ইমরান খান। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে কমিশনের সামনে জমা দেয়া আর্থিক হিসাবে মিথ্যা ও ভূল তথ্য দিয়েছেন তিনি।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে ইমরান খানের দল পিটিআই একে ‘অপমানজনক ও বিবৃতিকর’ বলে অভিহিত করেছে। এই সিদ্ধান্তকে ‘পাকিস্তানের জনগণের মুখে চপেটাঘাত’ বলে আখ্যা দিয়েছেন পিটিআই নেতা ফাওয়াদ চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র ইমরান খানের ওপরেই আঘাত নয়, এটা পাকিস্তানি সংবিধান ও পাক জনগণের ওপরও বড় আঘাত।
Tag: English News others world
No comments: