চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২০৭১ কোটি টাকা। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ একই সময়ে ২৭৩২ কোটি টাকা খেলাপি কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। শুধু তাই নয়, খেলাপি কমানোর লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) স্বাক্ষর করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। কিন্তু সর্বশেষ হিসাবে দেখা গেছে গত জুলাই-সেপ্টেম্বর এ তিন মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে খেলাপি ঋণ কমেনি, উলটো বেড়েছে। একই সময়ে ঋণখেলাপিদের কাছ থেকে আদায়ের হারও হতাশাজনক। ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ প্রথম প্রান্তিকের খেলাপি ঋণ কমানো ও আদায়ে লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। সূত্র আরও জানায়, খেলাপি ঋণের এই অবনতিতে ব্যাংকগুলোর ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। কারণ ব্যাংকগুলোই খেলাপি ঋণ কমাতে এবং আদায় করতে পারেনি। ফলে আগামীতে খেলাপি ঋণ কমানো ও আদায়ে আরও মনোযোগী হতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, এপিএ’র আওতায় প্রথম প্রান্তিকে অন্যান্য আর্থিক সূচকের অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু একমাত্র নেতিবাচক হয়েছে খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে। তার মতে, করোনাভাইরাসে সৃষ্ট দুর্যোগ থেকে ঋণ গ্রহীতাদের সুরক্ষা দিতে নীতি ছাড় দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০২০ সালে ঋণের কোনো কিস্তি পরিশোধ না করেই খেলাপি হওয়া থেকে নিষ্কৃতি পেয়েছেন গ্রাহকরা। আবার ২০২১ সালজুড়েও ছিল নীতিছাড়ের ছড়াছড়ি। ঋণ গ্রহীতারা নীতিছাড়ের সুফল উপভোগ করছেন চলতি বছরও। অন্যদিকে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের নীতিমালাও অনেক সহজ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকের হাতেই পুনঃতফসিলের সব ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঋণ পরিশোধের বাধ্যবাধকতা ফিরে আসায় চলতি বছরের প্রথম থেকেই খেলাপি ঋণ বাড়তে শুরু করেছে। জুন শেষে খেলাপি ঋণের যে পরিমাণ দাঁড়িয়েছে, সেটি বাংলাদেশের ইতিহাসেই সর্বোচ্চ। আর জুলাই-সেপ্টেম্বরে এসে এটি আরও বেড়ে গেছে অস্বাভাবিক হারে। গত জুন পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের অঙ্ক ছিল ৫৫ হাজার ৪২৯ কোটি টাকা। এরপর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের অঙ্ক ৪৪ হাজার ৫শ কোটি টাকায় নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয়। এটি উল্লেখ করেছে এপিএ’তে। এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে পুরো বছরে খেলাপি ঋণ ১০ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা কমাতে হবে এবং প্রতি প্রান্তিকে কমাতে হবে ২৭৩২ কোটি টাকা। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে প্রথম প্রান্তিকে অর্জন সম্ভব হয়নি। জানতে চাইলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর যুগান্তরকে বলেন, বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি অনুযায়ী আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ খেলাপি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি। কিন্তু এসব চুক্তি করার পর কোনো ফলোআপ করা হয় না কিংবা ব্যর্থতার জন্য কারও দায়-দায়িত্ব নিরূপণ হয় না। কোনো জবাবদিহিতাও নেই। এটি বড় সমস্যা। তিনি আরও বলেন, এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব নয় ব্যাংকগুলোর পারফরম্যান্স উন্নতি করার। মন্ত্রণালয়কে নিতে হবে দায়-দায়িত্ব। বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘অর্থনীতি জানা-বোঝা ও নীতিনিষ্ঠ ব্যক্তিরা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর পর্ষদে থাকলে সমস্যা সৃষ্টিই হতো কম। অনেক ক্ষেত্রেই এর ঘাটতি দেখা যায়। আবার রাষ্ট্র মালিকানাধীন ছয় ব্যাংকের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেকটা নীরব থাকে। ভাবটা এমন যে আমাদের কী? এ মনোভাব থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বের হয়ে আসা উচিত।’ এদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ও আদায়, অবলোপনকৃত ঋণ ও আদায়, শীর্ষ ২০ খেলাপি থেকে আদায় নিয়ে সম্প্রতি বৈঠক করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ। এতে সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরাই (এমডি) উপস্থিত ছিলেন। সার্বিক কৃতিত্বের (পারফরম্যান্স) মূল্যায়ন করে বৈঠকে ব্যাংকগুলোর ওপর অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। সেখানে বিভিন্ন সূচকে ব্যাংকগুলোতে দৃশ্যমান পরিবর্তন আনতে নির্দেশনাই দেওয়া হয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রতিবেদনে খেলাপি ঋণ ও আদায়ের অঙ্ক, কৃষি এবং এসএমই ঋণ বিতরণ, শিল্প ঋণ, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেনের অঙ্কসহ অন্যান্য সূচকের অগ্রগতি তুলে ধরা হয়। সেখানে দেখানো হয় কৃষিঋণ বিতরণ করা হয়েছে প্রথম প্রান্তিকে ৫২৪০ কোটি টাকা, এসএমই খাতে ঋণ বিতরণ করা হয় ৬২ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। তবে এসএমই খাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ঋণ গেছে। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে পুরো অর্থবছরে ৪ হাজার ২০০ কোটি টাকার শিল্প ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সেখানে প্রথম তিন মাসে বিতরণ করা হয় ১১৭৮ কোটি টাকা। এছাড়া ৫১৮ কোটি টাকা বিতরণ করা হয় নারী উদ্যোক্তাদের মধ্যে।
Slider
দেশ - বিদেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
No comments: