সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আমরা মানুষকে দিতে পারব: শেখ হাসিনা
সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আমরা মানুষকে দিতে পারব: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আমরা মানুষকে দিতে পারব। সামনের বছর রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট চালুর ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।
সংকটে আশা জাগাচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। বসানো হলো দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল। কার্যক্রমের উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রূপপুরের স্বচ্ছ বিদ্যুতে বদলে যাবে উত্তরের জনপদ। পরমাণুর শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে বাংলাদেশ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলেও উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান।
বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের (আরএনপিপি) দ্বিতীয় ইউনিটের পরমাণু চুল্লি স্থাপনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন তিনি।
এলিট নিউক্লিয়ার ক্লাবের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে অর্জন করছে একের পর এক মাইলফলক। রাশিয়ার ভিভিইআর এক হাজার ২০০ মডেলের তৃতীয় প্রজন্মের দুটি পরমাণু চুল্লি বসানো হচ্ছে এখানে। যার দ্বিতীয়টিও এগোচ্ছে সমানতালে।
এসব প্ল্যান্টের মূল যন্ত্রাংশ রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল বা পরমাণু চুল্লিপাত্রকে হৃদপিণ্ডের সঙ্গে তুলনা করেন বিজ্ঞানীরা। যেখানে নিউক্লিয়ার জ্বালানি ধারণসহ, সুরক্ষা কবচের মূল কাজটি সম্পন্ন হয়। আনুষঙ্গিক সব প্রস্তুতি শেষ করলেই কেবল ভেসেল স্থাপনের এই স্তরে আসে একেকটি নির্মাণযজ্ঞ।
আরও পড়ুন: সফল বাস্তবায়নের পথে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প
নির্মাণসূচি ঠিক রেখে সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে রূপপুরের দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল ইনস্টলেশনের অনুমতি দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; জয় বাংলা ধ্বনি ছড়িয়ে যায় গণভবন থেকে রূপপুরে।
পরে প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর তার প্রকৌশলী দল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন ইনস্টলেশন পরিস্থিতি।
এ আনুষ্ঠানিকতায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তায় কোনো ছাড় দেয়া হচ্ছে না। দুটো ইউনিটেই স্বচ্ছ ও নিরাপদ বিদ্যুৎ পাবে দেশবাসী।
২০২৩ সালের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিট চালু হবে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। হয়তো ২০২৩ সালের মধ্যেই প্রথম যে ইউনিট সেখান থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে। ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটও চালু হওয়ার আশা রাখি। পরামাণু শক্তি থেকে যে বিদ্যুৎ আসবে; এখন যেমন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন, আমাদের কিন্তু এ ব্যাপারে কোনোরকম ইমিশন হবে না। কোনো রকম পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়বে না। আমরা এখনো আমাদের দেশটাকে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা করে চলছি কিন্তু পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে সেটা অত্যন্ত পরিবেশবান্ধব হবে। এটা আমাদের দেশে কোনো রকম ক্ষতিই করবে না। বরং আমাদের দেশের মানুষ খুব স্বচ্ছ একটা বিদ্যুৎ পাবে। যে বিদ্যুৎ তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রেখে যাবে। প্রথম ইউনিটে ১ হাজার ২০০ এবং দ্বিতীয় ইউনিট মিলে প্রায় ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করবে। সেটাও আমাদের জন্য কম কথা নয়। এত বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে যা আমাদের দেশের দারিদ্র্যমুক্তি, মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতিতে বিরাট অবদান রেখে যাবে।
সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সময়মতোই এ প্ল্যান্ট চালু হবে বলে আবারও নিশ্চিত করেন সরকারপ্রধান।
রূপপুরের এই অবিরাম মহাকর্মযজ্ঞ এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা; সব ঠিক থাকলে এখান থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
Tag: English News lid news national
No comments: