দেশকে দুরবস্থায় রেখে বিদায় নিচ্ছেন বরিস জনসন
ব্রেক্সিট পরবর্তী অর্থনৈতিক সংকট দূর করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছিলেন বরিস জনসন। তবে বাস্তবতা হলো করোনা মহামারি, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা ইস্যুতে ভঙ্গুর দশায় ব্রিটিশ অর্থনীতি। রেকর্ড মূল্যস্ফীতিতে নাজেহাল বাসিন্দারা। বেকারত্ব চরমে পৌঁছেছে। দেশকে এমন অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যেই বিদায় নিচ্ছেন বরিস। লিজ ট্রাস কিংবা ঋষি সুনাক, ক্ষমতায় যিনিই আসুক তার সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে অর্থনীতি।
২০১৯ এর জুলাইয়ে ক্ষমতায় আসেন বরিস জনসন। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের অঙ্গীকার করে থেরেসা মেকে সরিয়ে দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর। তবে বিদায় বেলায় পরিস্থিতি একেবারেই ভিন্ন।
গত তিন বছরে বরিসের শাসনামলে সবচেয়ে বড় ধাক্কা ছিল করোনা মহামারি। যার জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে দেশটির অর্থনীতি। সামলে ওঠতে না ওঠতেই আবার রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব। জ্বালানির তীব্র সংকট ও মূল্যবৃদ্ধি। রেকর্ড ১১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি। খাদ্যপণ্যের চড়া দাম। ডলারের বিপরীতে পাউন্ডের দর কমে দাঁড়িয়েছে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে। জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে নাভিশ্বাস বাসিন্দাদের। এরইমধ্যে বেড়ে চলেছেবেকারত্ব।
দেশটির এক বাসিন্দা বললেন, অনেকেই আছে যাদের আগে কখনও সহায়তার দরকার হয়নি। অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী মানুষেরা এখন হিমশিম খাচ্ছেন জীবিকা নির্বাহে। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন।
আরেকজন বলেন, যেসব পরিবার আর্থিক সংকটে আছে, তাদের সহায়তায় একটি চ্যারিটি প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করতাম। তবে প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেলো অনুদানের অভাবে। নীতিনির্ধারকরা হয়তো বুঝতেও পারছেন না কোন ধরনের সংকটে দেশের মানুষ।
কয়েক দফা ভোটাভুটির পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌঁড়ে শেষ পর্যন্ত টিকে রয়েছেন তার সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস ও সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক। ধারণা করা হচ্ছে, লিজ ট্রাস জয় পাবেন। স্থানীয় সময় সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে যুক্তরাজ্যের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম জানা যাবে।
বিশ্লেকরা বলছেন, ক্ষমতায় যেই আসুক, ব্রিটেনের কয়েক দশকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে তাকে। তবে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন দুজনেই।
লিজ ট্রাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে এক সপ্তাহের মধ্যেই জ্বালানির দাম কমাতে পদক্ষেপ নেবো। শীতের আগে সরবরাহ নিশ্চিতের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ দুইটি বিষয় একে অপরের সাথে জড়িত। মূল্যস্ফীতি ঠেকাতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেবো।
অন্যদিকে, ঋষি সুনাক বলেন, আগামী শীতে মানুষকে অর্থনৈতিক দুরবস্থা থেকে উদ্ধারে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার পাশাপাশি মানুষের সুরক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নেবো।
ক্ষমতার পালাবদলে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে কতটা পরিবর্তন আসে সেটাই এখন দেখার।
Tag: English News Featured world
No comments: