প্রিন্সেস ডায়ানার জীবনের শেষ মুহূর্তে যা ঘটেছিল 'নারীটি ভাঁজ হয়ে একটি বিচূর্ণ মার্সিডিজ গাড়ির ফ্লোরে অচেতন অবস্থায় পড়েছিল। এ সময় তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল।' ফরাসি চিকিৎসকের কোনো ধারণাই ছিল না তিনি কে ছিলেন! তিনি শুধু ওই মুমূর্ষু নারীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছিলেন।
পঁচিশ বছর পর চিকিৎসক ফ্রেদেরিক ম্যালিয়েজকে এখনো স্মরণ করা হয় ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট প্যারিসের আলমা সুড়ঙ্গে প্রিন্সেস ডায়ানাকে জীবিত অবস্থায় শেষবারের মতো দেখা ব্যক্তিদের একজন হিসেবে। অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ম্যালিয়েজ বলেন, 'আমি এটা ভালো করেই বুঝতে পেরেছি যে আমার নামটা ওই ট্র্যাজিক রাতের সঙ্গে চিরতরে জড়িয়ে গেছে।' ঘটনার দিন রাতের বেলা একটি পার্টি থেকে বাড়ি ফিরছিলেন ম্যালিয়েজ। তিনি বলেন, ‘আমি ওই রাতে ডায়ানার শেষ মুহূর্তগুলোর জন্য নিজেকে সামান্য দায়ীও করি।’ ব্রিটেন এবং সারা বিশ্বে ডায়ানার গুণমুগ্ধরা যখন তার মৃত্যুর ২৫ বছরে তাকে স্মরণ করছে, ম্যালিয়েজও দুর্ঘটনা-পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহকে নতুন করে ভেবে দেখছেন। ওই রাতে ম্যালিয়েজ সুড়ঙ্গ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় ধোঁয়াময় অবস্থায় একটি মার্সিডিজ গাড়িকে প্রায় দুই টুকরা হয়ে পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি বলেন, ‘আমি ঐ ভগ্নস্তূপের কাছে গিয়ে গাড়ির দরজা খুললাম এবং ভেতরে তাকালাম।’ তিনি যা দেখেছিলেন ‘চারজন মানুষ, যাদের দুজনকে মৃত মনে হচ্ছিল; যাদের কোনো অভিব্যক্তি ছিল না; কোনো শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়ার ইশারা পাওয়া যাচ্ছিল না। অন্যপাশে পড়েছিল বাকি দুজন; যারা জীবিত থাকলেও অবস্থা বিপন্ন ছিল। সামনের সিটের জন শ্বাস নিতে পারছিলেন; তিনি চিৎকার করছিলেন। তাকে দেখে কয়েক মিনিট টিকে থাকতে পারবেন মনে হচ্ছিল। অন্যদিকে আরেক নারী যাত্রী, যিনি কমবয়সী ছিলেন; তিনি তার হাঁটুতে ভর দিয়ে মার্সিডিজের ফ্লোরে মাথা নিচু করে ছিলেন। তার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। তার জরুরি সাহায্য দরকার ছিল।’ এরপর ম্যালিয়েজ জরুরি সেবা নম্বরে ফোন করার জন্য এবং রেসপিরেটরি ব্যাগ (শ্বাস-প্রশ্বাসে সাহায্যকারী ব্যাগ) আনার জন্য দ্রুত তার নিজের গাড়ির দিকে ছুটে যান। ম্যালিয়েজ ওই নারীর তখনকার অবস্থা বর্ণনা করে বলেন, 'সে অচেতন ছিলেন। ধন্যবাদ রেসপিরেটরি ব্যাগটিকে। এটা পাওয়ার পর কিছুটা প্রাণ ফিরে পেয়েছিল সে; তবে কিছু বলতে পারছিল না।' সারা বিশ্বের সঙ্গে এ চিকিৎসকও পরে জানতে পারেন, যে নারীকে তিনি চিকিৎসা সেবা দিয়েছিলেন তিনি প্রিন্সেস ডায়ানা; ব্রিটেনের অমূল্য এক রত্ন, যাকে বিশ্বের লাখো মানুষ ভালোবাসে। ওই মুহূর্তের স্মৃতিচারণায় তিনি বলেন, ‘আমি জানি এটা অবাক করার মতো বিষয়। তবে এটা সত্যি যে আমি প্রিন্সেস ডায়ানাকে চিনতে পারিনি। আমি গাড়ির পেছনের সিটে বসে তাকে সাহায্য করছিলাম। এ সময় আমার মনে হয়েছিল, সে অনেক সুন্দরী। কিন্ত আমার সমস্ত মনোযোগ তার জীবন বাঁচানোর দিকেই ছিল। আমার এটা ভাবার কোনো সময়ই ছিল না- ওই নারীটির পরিচয় কী।’ ম্যালিয়েজ বলেন, ‘আমার পেছনে থাকা কেউ আমাকে বলল, আহতরা ইংরেজি বলতে পারেন। তখন আমি ইংরেজিতে তাদের জানালাম যে, আমি একজন ডাক্তার এবং একটি অ্যাম্বুলেন্স ডেকেছি।’ ম্যালিয়েজ বলেন, ‘ওইদিন ফটোগ্রাফারদের ওপর আমার কোনো ক্ষোভ সৃষ্টি হয়নি; কারণ আহতদের কাছে যেতে তারা কোনো বাধা সৃষ্টি করেনি। আমি তাদের কাছে কোনো সাহায্য চাইনি। তবে এটাও ঠিক যে তারাও আমাকে আমার কাজ করতে কোনো বাধার সৃষ্টি করেনি।’ তিনি জানান, দমকল কর্মীরা খুব দ্রুতই চলে আসে এবং ডায়ানাকে প্যারিস হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে নেয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। তার সঙ্গী ডোডি ফায়েদ এবং গাড়ির চালক উভয়েই মারা যান। ম্যালিয়েজ বলেন, ‘পরে এটা জেনে ভীষণ অবাক হয়েছিলাম যে তিনি প্রিন্সেস ডায়ানা ছিলেন এবং তিনি মারা গেছেন। এরপরই আমার নিজেকে নিয়ে সন্দেহের শুরু। আমি কী তাকে বাঁচানোর জন্য যা করণীয় ছিল তা ঠিকঠাক করতে পেরেছিলাম? আমি আমার মেডিকেল কলেজের অধ্যাপকদের কাছে জিজ্ঞাসা করলাম এবং পুলিশের তদন্তকারীদের কাছেও জিজ্ঞাসা করলাম।' তিনি এও জানান, ‘তারা সকলেই এটা বলেছিলেন- যা করণীয় ছিল ম্যালিয়েজ তাই করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘ডায়ানার মৃত্যুর দিনটিতে এসব স্মৃতি আবারও জেগে ওঠে। অথবা যখন আমি আলমা সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে আসি প্রত্যেকবারই সেদিনের কথা মনে পড়ে যায়। ’ আরও পড়ুন- বিক্রি হলো প্রিন্সেস ডায়নার সেই গাড়ি যে পিলারের কাছে ডায়ানা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন সেখানে স্টেনসিল ড্রয়িংয়ে ডায়ানার মুখায়ব রয়েছে এখন। ‘ফ্লেম অব লিবার্টি’ নামে স্মৃতিস্তম্ভটি ডায়ানার সারা বিশ্ব ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন জাতির ও প্রজন্মের ভক্তদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। ষোল বছর বয়সী ইরিনিয়া ওয়াভি একজন প্যারিসিয়ান, যিনি প্রিন্সেস ডায়ানাকে তার মায়ের কাছে শোনা গল্প এবং টিকটকে দেখা ভিডিওর মাধ্যমে চেনেন। ওয়াভি বলেন, 'তার স্টাইলেও তিনি একজন নারীবাদী ছিলেন। তিনি রাজকীয় রীতিনীতিকে প্রশ্ন করেছেন। তিনি সাইক্লিস্টদের মতো শর্টস এবং ক্যাজুয়াল প্যান্ট পরেছেন।' ফ্রান্সিন রোজ একজন ষোল বছর বয়সী ডাচ, যিনি সাইকেল ভ্রমণে বের হয়ে ডায়ানার স্মৃতিস্তম্ভে এসে একটু থেমেছেন এবং ডায়ানার গল্প জেনেছেন। তিনি বলেন, 'স্পেনসারকে ধন্যবাদ।' স্পেনসার ক্রিশ্চেন স্টুয়ার্টের সাম্প্রতিক সিনেমা। রোজ বলেন, ‘সে একটা অনুপ্রেরণা; কারণ সে কঠোর নিয়মকানুনে ঘেরা রাজকীয় পরিবেশে তার নিজের মত করে বেড়ে উঠতে চেয়েছিল এবং যে স্বাধীনতা চেয়েছিল।’ এবিসি নিউজের জন্য এ রিপোর্টটি করেছেনঃ নিকোলাস গারিয়া এবং জেফারি শফারSlider
দেশ
মেহেরপুর জেলা খবর
মেহেরপুর সদর উপজেলা
গাংনী উপজেলা
মুজিবনগর উপজেলা
ফিচার
খেলা
যাবতীয়
ছবি
ফেসবুকে মুজিবনগর খবর
Mujibnagar Khabor's Admin
We are.., This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
Labels
- Advertisemen
- Advertisement
- Advertisementvideos
- Arts
- Education
- English News
- English News Featured
- English News lid news
- English News national
- English News news
- English Newsn
- Entertainment
- Featured
- games
- id news
- l
- l national
- li
- lid news
- lid news English News
- lid news others
- media
- national
- others
- pedia
- photos
- politics
- politics English News
- t
- videos
- w
- world
- Zilla News
জনপ্রিয় পোস্ট
-
শ্রাবন্তি কে কিস করে করলো বাংলার নায়ক শাকিব খান (ভিডিও)
No comments: