হাঙ্গেরিতে রাশিয়ার পরমাণু জ্বালানি, ইউরোপীয় ইউনিয়নে বিভেদ
রাশিয়ার জ্বালানি খাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে খোদ ইউরোপীয় ইউনিয়নেই। ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ তুলে মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে ইইউ বৈঠকে। তবে এই নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করেছে ইইউ সদস্য হাঙ্গেরি।
রয়টার্স জানায়, রাশিয়ার ওপর যখন নিষেধাজ্ঞা আরোপের তোড়জোড় চলছে ইউরোপীয় ইউনিয়নে, ঠিক তখনই রাশিয়া থেকে পরমাণু জ্বালানি নিয়ে একটি বিমান অবতরণ করেছে ইইউ সদস্য রাষ্ট্র হাঙ্গেরিতে।
পরমাণু চুল্লি নির্মাণসংক্রান্ত মস্কোর সঙ্গে করা চুক্তির অংশ হিসেবে পরমাণু জ্বালানিবাহী এই চালান হাঙ্গেরিতে পৌঁছায় বলে বৃহস্পতিবার জানান হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিয়ার্তো।
এ সময় তিনি রাশিয়ার ওপর যে কোনো জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিরোধিতা করেন। পাশাপাশি মস্কোর সঙ্গে তার দেশের করা পরমাণু চুক্তিকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার বিরুদ্ধেও সতর্ক করেন।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে ইইউতে আনা নতুন অবরোধ প্রস্তাবে মস্কোর কয়লা রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পাশাপাশি রাশিয়ার মালিকানাধীন জাহাজের ইউরোপীয় দেশগুলোর বন্দরে ঢুকতে না দেওয়ারও প্রস্তাব করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: উল্লেখযোগ্য সেনা নিহত হওয়ার কথা স্বীকার রাশিয়ার
কিন্তু এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে হাংগেরির অবস্থান ইইউ দেশগুলোর মধ্যে বিভক্তির লক্ষণ বলেই মনে করা হয়। তবে হাংগেরি একা নয়, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস ও গ্রিসের মতো দেশগুলোও এখনই রাশিয়ার জ্বালানি খাতের ওপর কঠোর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পক্ষপাতী নয়।
জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লার জন্য রাশিয়ার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ইউরোপ। ইউরোপের সবচেয়ে শিল্পোন্নত জার্মানির গ্যাসের ৫৫ শতাংশ, কয়লার ৫০ শতাংশ এবং তেলের ৩৫ শতাংশই আসে রাশিয়া থেকে। এ ছাড়া নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড, ইতালি, অস্ট্রিয়া, হাঙ্গেরি, স্লোভেনিয়া, স্লোভেকিয়া, পোল্যান্ড, চেক রিপাবলিক ও লাটভিয়ার মতো দেশগুলোও জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল।
হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিকটর ওরবান এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। গত রোববার টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েই রাশিয়ার থেকে রুবলে জ্বালানি কেনার ব্যাপারে সম্মতি দেন তিনি। অথচ রুবলে গ্যাস বিক্রি করতে চাওয়ার মস্কোর প্রস্তাবের তীব্র বিরোধী ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
No comments: